ক্রোয়েশিয়াকে সমর্থন জানিয়ে তোপের মুখে জোকোভিচ
১২ টি গ্র্যান্ডস্ল্যামের মালিক তিনি। ১৩ নম্বর শিরোপার মিশনে এখন আছেন উইম্বলডনে। নিজ দেশ সার্বিয়ায় কিংবদন্তির মর্যাদাই পান নোভাক জোকোভিচ। তবে এবার নিজ দেশের মানুষদের কাছ থেকেই সমালোচনার শিকার হতে হলো তাঁকে। বিশ্বকাপ ফুটবলে ক্রোয়েশিয়ার প্রতি নিজের সমর্থনের কথা জানিয়ে দেশবাসীর তোপের মুখে পড়েছেন এই টেনিস তারকা।
সার্বিয়া ও ক্রোয়েশিয়া দুই দেশই এক সময় যুগোস্লাভিয়ার অংশ ছিল। ১৯৯৫ সালে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের মাধ্যমে ক্রোয়েশিয়া স্বাধীন দেশ হিসেবে আলাদা হয়ে যাওয়ার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক তিক্ত হয়ে ওঠে। প্রতিবেশী দেশ হলেও দুই দেশের মানুষের মধ্যে সম্পর্কটা তাই ঠিক বন্ধুসুলভ নয়।
আর ঠিক এ কারণেই ক্রোয়েশিয়াকে সমর্থন জানিয়ে তোপের মুখে পড়েছেন জোকোভিচ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেমিফাইনালের আগে প্রতিবেশী দেশের প্রতি নিজের সমর্থন জ্ঞাপন করেছিলেন ১২ বারের গ্র্যান্ডস্ল্যামজয়ী। আর এরপরই তার উপর খেপেছেন সার্বিয়ানরা।
দেশটির রাজনীতিবিদ ও প্রধানমন্ত্রী সমর্থিত দল সার্বিয়ান প্রগতিশীল পার্টির সদস্য ভ্লাদিমির জুকানোভিচ টুইট করেছেন, ‘কেবলমাত্র বোকারাই ক্রোয়েশিয়াকে সমর্থন করতে পারে। তোমার কি একটুও লজ্জা করছেনা নোভাক?’
‘জোকোভিচ আমাদের জাতীয় তারকা। তাঁকে আমি শ্রদ্ধা করি, তাঁর অর্জনের জন্য তাঁকে ধন্যবাদও জানাই। কিন্তু ক্রোয়েশিয়াকে সমর্থন করে তাঁর কি একটুও লজ্জা লাগছে না? ক্রাজিনার (ক্রোয়েশিয়ার একটি অঞ্চল, যেখানে আগে সার্বিয়ানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল) এতো এতো সার্বিয়ান তাঁকে সমর্থন দিয়ে এসেছে, আর সে কি না এমন একটি দেশকে সমর্থন দিচ্ছে, যারা ওই সার্বিয়ানদের তাড়িয়ে দিয়েছে!’
এরপর আরও আক্রমণাত্মক ভাষা ব্যবহার করেছেন এই রাজনীতিবিদ। সার্বিয়ার হয়েও যারা ক্রোয়েশিয়াকে সমর্থন করে তাদেরকে পাগল আখ্যা দিয়ে মেন্টাল অ্যাসাইলামে আটকে রাখার কথাও বলেছেন তিনি।
তবে ক্রোয়েশিয়াকে সমর্থন করার পেছনে নিজের যুক্তি উপস্থাপন করেছেন জোকোভিচও। খেলা কোন সীমানা মানে না, এমন মন্তব্য করে তিনি বলেছেন, ‘খেলাধুলার একটি বৈশ্বিক ভাষা আছে। খেলা মানুষের মধ্যকার দূরত্ব ঘুচিয়ে দেয়। এটি জাতীয়তা, ধর্ম, গোত্র সবকিছুর ঊর্ধ্বে।’
গত মার্চে ফ্লোরিডায় অনুশীলনের সময় ক্রোয়েশিয়া ফুটবল দলের সাথে দেখাও করেছিলেন জোকোভিচ। মদ্রিচ-রাকিটিচদের সাথে ছবি তুলে ইন্সট্রাগ্রামে আপলোডও দিয়েছিলেন, ক্যাপশনে লিখেছিলেন, ‘দারুণ এই মানুষ ও ফুটবল খেলোয়াড়দের সাথে দেখা করতে পেরে ভীষণ খুশি।’
Comments