রাজশাহীতেও বিএনপি নেতাকর্মী ধরপাকড়ের অভিযোগ
![](https://bangla.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/feature/images/bulbul_rajshahi.jpg?itok=2HKZfPh0×tamp=1531552729)
রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মাত্র দুই সপ্তাহ আগে বিএনপির নেতাকর্মীদের ধরপাকড় চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যেমন অভিযোগ উঠেছিল খুলনা ও গাজীপুরের ক্ষেত্রে। দলটির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে, তাদের নেতা-কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গ্রেপ্তার অভিযান চালাচ্ছে। এ কারণে তাদের নির্বাচনী প্রচারণা ব্যাহত হচ্ছে। তারা বলছে, গাজীপুর ও খুলনায় সিটি নির্বাচনের আগে দিয়ে যেভাবে বিভিন্ন মামলায় বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল একই কায়দায় রাজশাহীতেও ধরপাকড় চলছে।
বিএনপির নেতারা বলছেন, সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর নতুন করে তাদের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা দেওয়া হয়েছে। পুলিশ বাদী এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে ১৭৮ জনকে। এখন পর্যন্ত ২৯ জনকে এসব মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলেও তাদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।
পুলিশের ভাষ্য, নাশকতার পরিকল্পনা, বিষ্ফোরকদ্রব্য বহন ও বিস্ফোরণের অভিযোগে এসব মামলা হয়েছে। গত ৯, ১০ ও ১১ জুলাই নগরীতে এসব ঘটনা ঘটেছে। তার প্রেক্ষিতেই কাশিয়াডাঙ্গা ও বোয়ালিয়া থানায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলাগুলো করেছে।
বিএনপির পক্ষ থেকে এসব মামলায় ২৯ জনকে গ্রেপ্তারের অভিযোগ করা হলেও পুলিশের তরফ থেকে পাঁচ জনকে গ্রেপ্তারের কথা স্বীকার করা হয়েছে। তারা হলেন, নজরুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম, শফিকুল, লিটন ও জনি। তারা বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী।
এই অবস্থায় স্থানীয় বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে কাদা পাল্টা পাল্টি অভিযোগ করা শুরু হয়েছে। এক পক্ষ অপর পক্ষের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলছে।
নেতাকর্মীদের ধরপাকড়ের অভিযোগ এসেছে বিএনপির মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের কথাতেও। গত বৃহস্পতিবার দলের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি পুলিশ-প্রশাসনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তোলেন। তার অভিযোগ, শুরু থেকেই পুলিশ বিএনপির নেতাকর্মীদের হুমকি-ধামকির মধ্যে রেখেছিল। বিএনপি প্রার্থীর পক্ষে কাজ না করতে বলেছে তারা। কিন্তু এতে কাজ না হওয়ায় বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তারের পথ বেছে নিয়েছে। বোয়ালিয়া ও কাশিয়াডাঙ্গা থানার ওসিদের প্রত্যাহার চেয়েছেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘গত কয়েক দিনে নগরীর কোথায় ককটেল বিস্ফোরণের কথা কেউ শুনেছেন? কিন্তু এই অভিযোগেই বিএনপির অন্তত তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হওয়ার পর থেকে পুলিশের ভয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ঘরছাড়া রয়েছেন বলেও অভিযোগ বুলবুলের।
তবে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ অস্বীকার করে কাশিয়াডাঙ্গা থানার ওসি রবিউল ইসলামের ভাষ্য, ‘পুলিশকে লক্ষ্য করে যে বোমা ছুড়েছে তাকেও কি আমরা গ্রেপ্তার করতে পারব না? গ্রেপ্তার করার আগ পর্যন্ত পুলিশ জানতো না হামলাকারী কোন দলের।’
ধরপাকড়ের ব্যাপারে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে নিজেদের অভিযোগ জানিয়েছেন বুলবুলের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট তোফাজ্জল হোসেন।
অন্যদিকে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গুজব ছড়িয়ে ভোটারদের বিভ্রান্ত করাসহ পাঁচটি অভিযোগ তুলেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটন। তার অভিযোগ, বিএনপির নেতাকর্মীরা গুজব রটিয়েছে তিনি নির্বাচিত হলে হিন্দুদের তিনি উচ্ছেদ করবেন। নগরীর পঞ্চবটী এলাকায় এ ধরনের গুজব রটানোর অভিযোগ করেন তিনি। আরেক অভিযোগে তিনি বলেছেন, নগরীর আরডিএ মার্কেটের সুলতান আহমেদ নামের একজন কাপড় ব্যবসায়ীকে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর হয়ে কাজ না করার হুমকি দিয়েছেন বুলবুল। লিটনের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ প্রার্থীর হয়ে কাজ করলে তাকে কঠিন পরিণতি ভোগ করতে হবে-এমন হুমকি দেওয়া হয়েছে।
Comments