মোদির জনসভায় প্যান্ডেল ভেঙে আহত ৩০

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির একটি রাজনৈতিক সভা চালার সময় প্যান্ডেল ভেঙে কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে তিন জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদের মধ্যে অধিকাংশ নারী বিজেপি সমর্থক।
ছবি: টুইটার/বিজেপি

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির একটি রাজনৈতিক সভা চালার সময় প্যান্ডেল ভেঙে কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে তিন জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদের মধ্যে অধিকাংশ নারী বিজেপি সমর্থক।

সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুরে বিজেপির কৃষক সংগঠনের আয়োজনে একটি রাজনৈতিক সভায় প্রধান বক্তা হিসাবে ভাষণ দিচ্ছিলেন মোদি। তার চোখের সামনেই মঞ্চের পাশের একটি প্যান্ডেল ভেঙে পড়ে। ভাষণ থামিয়ে দিয়ে তিনি সবাইকে শান্ত হতে বলেন। বলেন, মঞ্চ থেকে নিচে নামুন। কেউ ছুটোছুটি করবেন না। তখন তিনি সবাইর মনোযোগ আকর্ষণ করতে বন্দে মাতরম স্লোগান তোলেন। সেই স্লোগানে কাজ হয়, সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হন প্রধানমন্ত্রী। পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। প্রধানমন্ত্রী মিনিট তিনেক ভাষণ বন্ধ রাখার পর ফের ভাষণ শুরু করেন এবং ভাষণ শেষে দিল্লি ফিরে যাওয়ার আগে মেদিনীপুর জেলা সদর হাসপাতালে আহতদের দেখতে যান। আহতদের সঙ্গে কথা বলেন এবং সবার চিকিৎসার ভার নেন।

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কৃষক মোর্চার আয়োজনে ‘কৃষক কল্যাণ সমাবেশ’ এই দিন আরও উপস্থিত ছিলেন রাজ্যটির বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ, রাহুল সিনহা, কৈলাস বিজয় বর্গী, বাবুল সুপ্রিয়, মুকুল রায় এবং কৃষক মোর্চার সভাপতি রামকৃষ্ণ পাল।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী দুপুর ১২টায় কলাইকুন্ডা বিমান ঘাঁটিতে নামেন। সেখান থেকে সড়ক পথে তিনি মেদিনীপুর শহরের কলেজ মাঠে পৌঁছান। সেখানে তাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এরপরই সেখানে বক্তব্য রাখেন জেলা সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনিই প্রধানমন্ত্রীকে প্রধান বক্তা হিসাবে বক্তব্য রাখার অনুরোধ করেন।

নরেন্দ্র মোদি বরাবরের মতোই বাংলায় বক্তব্য দিয়ে উপস্থিত বিজেপি নেতা-কর্মী-সমর্থকদের মনজয় করতে চেষ্টা করেন। এরপর তিনি চাঁছাছোলা ভাষায় সরাসরি রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের সমালোচনা শুরু করেন।

মোদি বলেন, জুলুমবাজরা যেই হোন না কেন তাদের বিদায় নিতেই হয় -ইতিহাস সাক্ষী এই মহা বাস্তবতায়।

বিজেপি নেতাকর্মীদের ত্রিপুরা রাজ্যের পালাবদলের দৃষ্টান্ত দিয়ে বলেন, সংকল্প নিয়ে সংগঠিত হয়ে সাহস নিয়ে এগুতে হবে। তবেই ত্রিপুরার মতো পশ্চিমবঙ্গেও বদল আসবে।

নরেন্দ্র মোদির ভাষায়, রাজ্যের কৃষকদের লাভ নেই। গরিবরা স্বস্তিতে নেই এবং বেকারদের চাকরি নেই। যে সিন্ডিকেট রাজত্বের বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গবাসী তৃণমূল কংগ্রেস সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছিলেন সেই তৃণমূল কংগ্রেস বামফ্রন্টের চেয়েও খারাপ অবস্থার তৈরি করেছে। গত আট বছরে মা-মাটি-মানুষের সরকারকে রাজ্যবাসী সিন্ডিকেট সরকার হিসেবেই দেখছেন। এখানে কলেজে ভর্তি হতে সিন্ডিকেট, বালু-সিমেন্ট-টিন-পাথর কিনতে হলে সিন্ডিকেট এমন কি কৃষকদের কাছ থেকে ফসল কিনতে ও বেচতেও সিন্ডিকেট তৈরি করেছে তৃণমূল কংগ্রেসের এই সরকার।

কৃষকদের জন্য তার সরকার কী কী উদ্যোগ নিয়েছে তার একটা নাতিদীর্ঘ বর্ণনা করেন মোদি। বলেন, আইন সংশোধন করে বাঁশ কাটার আইন পাশ করার হয়েছে। আলুর মূল্য বেধে দেওয়ার জন্য সরকার পরিকল্পনা নিয়েছে। পাটের ব্যাগের দাম বেড়েছে। কৃষকদের আয় আগামী ২০২২ সালের মধ্যে দ্বিগুণ হয়ে যাবে বলেও প্রতিশ্রুতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির।

পশ্চিমবঙ্গের সাম্প্রতিক পঞ্চায়েত নির্বাচনের তৃণমূলের সন্ত্রাসের প্রসঙ্গ তুলে মোদি বলেন, দলিত শ্রেণির মানুষের উপর চরম নির্যাতন করেছে শাসক দল। তাদের ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। খুন করা হয়েছে। ভোটে অংশ নিতে দেওয়া হয়নি। এসবই রাজ্যবাসী জানেন। বাংলার মানুষ এখন সুযোগ খুঁজছেন।

এদিকে প্যান্ডেল ভেঙে আহতদের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি নিজেও। তিনি এক টুইট বার্তায় এই দুর্ঘটনায় আহতদের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, রাজ্য সরকার আহতদের চিকিৎসার সব ব্যয়ভার বহন করবে।

Comments

The Daily Star  | English
BNP office in Nayapaltan

Column by Mahfuz Anam: Has BNP served its supporters well?

The BNP failed to reap anything effective from the huge public support that it was able to garner late last year.

8h ago