বিশেষ ক্ষমতা আইনের বিলুপ্ত ধারায় মামলা-গ্রেপ্তার, ক্ষুব্ধ হাইকোর্ট

তিন দশক আগের আইনের বিলুপ্ত করা একটি ধারায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। এমনকি সেই মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, সেই দুজন এখন কারাগারে রয়েছেন।
arrest logo

তিন দশক আগের আইনের বিলুপ্ত করা একটি ধারায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। এমনকি সেই মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, সেই দুজন এখন কারাগারে রয়েছেন।

বিশেষ ক্ষমতা আইন, ১৯৭৪ এর বিলুপ্ত ধারা ১৬(২)-এ গত মে মাসে মানিকগঞ্জ জেলার সিঙ্গাইরে মামলাটি করে পুলিশ।

আইনের এমন বিলুপ্ত ধারায় মামলা রজু হওয়া নিয়ে গতকাল ক্ষোভ প্রকাশ করেন হাইকোর্ট। বিচারপতি এম এনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চ এই মামলায় আর কাউকে গ্রেপ্তার না করতে পুলিশকে নির্দেশ দেন। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশের মহাপরিদর্শককেও আদেশ দেন হাইকোর্ট।

এই মামলায় অপর দুই আসামি সাজেদুল আলম স্বাধীন ও হবিবুর রহমান লালুকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন মঞ্জুর করে আদালত এসব আদেশ দেন।

গত ২৩ মে এই মামলায় সালাউদ্দিন ও বশির ওরফে বশির মেম্বারকে সিঙ্গাইরে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ‘বিএনপির চেয়ারপারসনকে মুক্ত করতে নাশকতার পরিকল্পনা’ করছিল তারা। এ জন্যে চারুইগ্রামে সালাউদ্দিনের বাড়িতে তারা ‘গোপন বৈঠক’ করেছিলেন।

সিঙ্গাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খন্দকার ইমাম হোসেন বলেন, আটকের পরদিন এই চারজনসহ মোট ২১ জনের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৬ (২) ধারায় থানায় একটি মামলা করা হয়।

আইনের এই ধারাটি বিলুপ্ত করা হয়েছে জানতেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি যতদূর জানি এই ধারায় অন্য থানাতেও মামলা হয়েছে।’

আইনের ধারাটির ব্যাপারে জানতে চাইলে সহকারী এটর্নি জেনারেল মো. ইউসুফ মাহমুদ মোরশেদ বলেন, এই ধারা অনুযায়ী অনিষ্টকর কাজের অপরাধে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও জরিমানার বিধান ছিল। ১৯৯১ সালে তৎকালীন সরকার আইনটিতে সংশোধন এনে ধারাটি বাতিল করে। তবে এই ধারায় এখনও মামলা ও গ্রেপ্তার অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, ২০০৭ সালে আইনের এই ধারাটি পুনর্বহালের চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে সংসদে অনুমোদন পাওয়া যায়নি।

সুপ্রিমকোর্টে আইনজীবীরা বলেন, যে ধরনের অপরাধের কথা ধারাটিতে উল্লেখ ছিল, অন্য আইনেও অনুরূপ ধারা যুক্ত থাকায় বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৬ (২) ধারাটি বিলুপ্ত করা হয়েছিল।

আর জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিজানুর রহমানের ভাষ্য, আইনের বিলুপ্ত ধারা বলবৎ করা যায় না। তিনি বলেন, ‘বিলুপ্ত করা হয়েছে এমন ধারায় কোনো নাগরিককে হয়রানি করা হলে সেটাই অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এটা যেই করে থাকুক তাকে অবশ্যই বিচারের আওতায় আনা উচিৎ।’

Comments

The Daily Star  | English
Metro now connects Uttara with Motijheel

Uttara-Motijheel Metro: 8am-8pm service not before April

Commuters may have to wait until July for service until midnight on the entire Uttara-Motijheel section, hints Metro rail authorities

31m ago