আন্তর্জাতিক

ইমরান খানের ‘নির্ভরশীল’ সরকার!

নির্বাচনে অন্য সব দলের চেয়ে বেশি আসনে জিতেও পাকিস্তানে সরকার গঠন করতে হিমশিম খাচ্ছে ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। ২৫ জুলাইয়ের নির্বাচনের পর দলটির নেতারা বলেছিলেন, সরকার গঠনের জন্য অন্য কোনো দলের সহায়তার দরকার নেই তাদের। তবে গতকাল নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা করা পূর্ণাঙ্গ ফলাফলে দেখা যাচ্ছে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি পিটিআই।
Imran Khan
পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে এগিয়ে রয়েছে সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খানের দল পিটিআই। ছবি: রয়টার্স

নির্বাচনে অন্য সব দলের চেয়ে বেশি আসনে জিতেও পাকিস্তানে সরকার গঠন করতে হিমশিম খাচ্ছে ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। ২৫ জুলাইয়ের নির্বাচনের পর দলটির নেতারা বলেছিলেন, সরকার গঠনের জন্য অন্য কোনো দলের সহায়তার দরকার নেই তাদের। তবে গতকাল নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা করা পূর্ণাঙ্গ ফলাফলে দেখা যাচ্ছে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি পিটিআই। ফলে শেষ পর্যন্ত অন্য দলের সঙ্গে জোট করেই সরকার গঠন করতে হতে পারে ক্রিকেট থেকে রাজনীতির ময়দানে আসা ইমরান খানকে।

নির্বাচনের ফলাফল বলছে, পিটিআই জিতেছে ১১৫টি আসনে। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে দলটির আরও ২২টি আসন প্রয়োজন ছিল। অন্যদিকে নওয়াজ শরীফের ভাই শাহবাজ শরীফের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান মুসলিম লিগ (পিএমএল-এন) ও পাকিস্তান পিপলস পার্টি পেয়েছেন যথাক্রমে ৬৪ ও ৪৩টি আসন।

পাকিস্তানের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে মোট আসন সংখ্যা ৩৪২। এর মধ্যে নারী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ার জন্য সংরক্ষিত ৭০টি আসন বাদে সরাসরি ভোট হয় ২৭২টি আসনে। সরকার গঠনের জন্য দরকার হয় ১৩৭টি আসন।

সরকার গঠনে ইমরান খানের সামনে সমস্যা আরও রয়েছে। পিটিআই ১১৫টি আসন পেলেও এর মধ্যে দলের প্রধান একাই পাঁচটি আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। দেশটির আইন অনুযায়ী একজন ব্যক্তি মাত্র একটি আসন থেকেই পার্লামেন্ট সদস্য হতে পারেন। ফলে ইমরান খানকে চারটি আসন ছেড়ে দিতে হবে। অন্যদিকে তার দলের আরও দুজনকে এভাবে দুটি করে আসন ছাড়তে হবে। এর ফলে শেষ পর্যন্ত পিটিআই’র আসন সংখ্যা নামতে নামতে ১০৯ এ ঠেকবে।

উদ্ধার পেতে পার্লামেন্টে প্রতিনিধিত্ব রয়েছে এমন কয়েকটি আঞ্চলিক দলের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে পিটিআই’র নেতারা। দলটি চায় না পিএমএল-এন বা পিপিপি কারও সঙ্গে জোট করে সরকার হোক। চাইলেও তারা সমর্থন দিবে বলেও মনে হয় না।

এই দল দুটির এখন পর্যন্ত ঘোষিত নীতি হলো তারা সরকারে নয় বরং শক্তিশালী বিরোধী দল হিসেবেই দায়িত্ব পালন করবেন।

ছোট দলগুলোর মধ্যে মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট পাকিস্তান (এমকিউএম-পি) জিতেছে ছয়টি আসনে, পাকিস্তান মুসলিম লিগ-কায়েদ (পিএমএল-কিউ) পেয়েছে চারটি আসন, অন্যদিকে বেলুচিস্তান আওয়ামী পার্টি পেয়েছে চারটি আসন, আর স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পেয়েছেন মোট ১৩টি আসন। ইমরান খান চাইছেন এই দলগুলো তার সরকারের শরীক হোক। কিন্তু লাভ লোকসানের হিসাব নিকাশ শেষে দলগুলো ইমরান খানকে সমর্থন দিলেও, জটিলতা পুরোপুরি কাটবে না।

তবে শেষ পর্যন্ত ইমরান খানই  সরকার গঠন করবেন এবং তাকে নির্ভরশীল থাকতে হবে ছোট দল ও স্বতন্ত্র বিজয়ীদের ওপর। এরা আসলে কার কথা শুনবেন, ইমরান খানের না সেনাবাহিনীর? ধারণা করা হচ্ছে, ফলাফল ঘোষণা বিলম্বের নেপথ্যে ‘নির্ভরশীল’ সরকারের বিষয়টিই চূড়ান্ত করেছে সামরিক বাহিনী। নির্বাচনের পর ইমরান খান যে ভাষা-ভঙ্গিতে বক্তব্য রাখছেন তা দেখে, সামরিক বাহিনী নিশ্চিত থাকতে পারেনি যে সব সময় তিনি তাদের নিয়ন্ত্রণ থাকবেন।

Comments

The Daily Star  | English

Mobilise collective strength to prevent genocide: PM urges world

The PM this on the eve of the International Day of Commemoration and Dignity of the Victims of the Crime of Genocide and of the Prevention of this Crime and the 75th anniversary of the Convention on the Prevention and Punishment of the Crime of Genocide

16m ago