‘এক থেকে ১০ পর্যন্ত শাকিব খান একাই, তারপর অন্য নায়ক’
![Shakib Khan in Bhaijaan elo re Shakib Khan in Bhaijaan elo re](https://tds-images-bn.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/feature/images/shakib-khan-in-bhaijaan-elo-re-1.jpg?itok=HPols0BZ×tamp=1533118932)
‘বাংলা চলচ্চিত্রে এখন এক থেকে ১০ নম্বর পর্যন্ত শাকিব খান, তারপরে অন্য কোনো নায়ক’- ‘ভাইজান এলো রে’ ছবিটি দেখার সময় পেছন থেকে ভেসে এলো কথাটি। রূপালি পর্দায় তখন সেই ছবির ‘বেবী জান’ গানটি দেখা যাচ্ছিল।
এরপর, কথা হয় নিজের সঙ্গে নিজের। সত্যিই তো তাই, গত কয়েক বছরে শাকিব খান নিজেকে যেভাবে পরিবর্তন করেছেন সেই বিবেচনায় ওপরের কথাগুলো মিথ্যা বলেননি পিছনের সিটে বসা মেয়েটি।
বর্তমানে একমাত্র শাকিব খানের ছবি নিশ্চয়তা দিতে পারছে প্রয়োজকদের। তাদের টাকা ফেরতের বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারছেন তিনি। এর ফাঁকে মাঝে মধ্যে দুই-একটি সিনেমা দর্শকদের ভালোবাসায় সিক্ত হচ্ছে। তবে, এই সংখ্যা হাতেগোনা।
এদিকে, শাকিব খান অভিনীত ছবি মানেই প্রযোজকদের নিশ্চয়তা। তবে কিছু বিষয় খুবই দুঃখজনক। নিজের দেশের নায়কের সিনেমা আমদানি করে দেখতে হচ্ছে! বিষয়টি কতটা যুক্তিযুক্ত? কোনো উৎসবে যৌথ প্রযোজিত সিনেমা কিংবা আমদানি করা সিনেমা এদেশে প্রদর্শন করা চলবে না- এমন দাবি অনেকের।
নায়ক অথবা নায়িকা যদি বাংলাদেশের হয়, তাহলে উৎসবগুলোতে সেসব সিনেমা প্রদর্শনে সমস্যা কোথায়? প্রতিযোগিতায় আসতে হবে বাংলাদেশি সিনেমাগুলোকে। ভালো গল্প, নির্মাণ, প্রযুক্তির ব্যবহার ও পরিচালনা- এসব কিছুকেই যেতে হবে সময়ের সঙ্গে তাল রেখে। প্রতিযোগিতা হোক ভালো সিনেমা নির্মাণের।
যৌথ প্রযোজিত ছবি উৎসবে আসা বন্ধ, আন্দোলন এবং সিনেমা নিয়ে রাজনীতি অব্যাহত রেখে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের কতটা উন্নতি সাধন হচ্ছে- তা ভেবে দেখা দরকার। এসব কারণে বড় বড় প্রযোজকরা সিনেমায় লগ্নি করতে ভয় পাচ্ছেন। তারা ধীরে ধীরে সিনেমা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। যার কারণে কমে যাচ্ছে সিনেমা নির্মাণের সংখ্যা।
প্রযোজকরা বেশি বেশি সিনেমা নির্মাণ করলে একমাত্র শাকিব খানই তো সব ছবিতে একা অভিনয় করবেন না। তার পক্ষে সব ছবিতে অভিনয় করা সম্ভবও হবে না। অন্য নায়করাও সে ছবিগুলোতে অভিনয় করতে পারবেন। এফডিসিতে বর্তমানে সিনেমার চেয়ে টেলিভিশন নাটক আর বিজ্ঞাপনের শুটিং বেশি হয়। মাঝে মাঝে হয় সিনেমার শুটিং। এফডিসির চলমান অবস্থার কারণে সিনেমার কতটা লাভ হলো তা নিয়ে হিসাব-নিকাশ কষতে বসলে হতাশা ছাড়া আর কিছু খুঁজে পাওয়া যায় কি?
এছাড়াও, সিনেমা হলের প্রজেক্টর, ই-টিকেটিং ব্যবস্থা নতুন প্রযোজকদের উৎসাহিত করতে পেরেছে কি? উত্তর: পারেন নি। এখনো প্রযোজকদের ভীতি কাটাতে পারছেন না কেউ। তাহলে যৌথ প্রযোজনা ও আমদানি করা ছবি উৎসবে আটকে রেখে সিনেমার পথটিকে কতোটা মসৃণ করা হচ্ছে?
একজন শাকিব খানের প্রতিদ্বন্দ্বী তৈরি হচ্ছে না। তাহলে কিভাবে সম্ভব সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির উন্নতি? আবেগ দিয়ে হয়তো কবিতা লেখা যায়, দর্শকদের সিনেমা হলে আনা সম্ভব হয় না। এমন প্রতিকূলতায় দর্শকদের হলে আনছেন শাকিব খান।
‘ভাইজান এলো রে’ ছবিতে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পর্দা জুড়ে ছিলেন শাকিব খান। আজান, উজান দ্বৈত চরিত্রে অভিনয় করে তিনি মুগ্ধ করেছেন দর্শকদের। অভিনয়, নাচ, গেটআপ, স্মার্ট লুকে মন ছুঁয়েছেন হলে আসা সবার। সিরিয়াস ও হাস্যরসের অভিনয়ে তিনি যে কম যান না তার প্রমাণ দিয়েছেন ছবিটিতে।
শাকিব খানের বড়বোনের চরিত্রে দীপা খন্দকার তার স্বাভাবিক অভিনয়ের যাদু দেখিয়েছেন। অনেকদিন এমন বোন দেখা যায়নি বাংলা চলচ্চিত্রে। বড় একটা ধন্যবাদ পেতেই পারেন দীপা খন্দকার।
দুলাভাই চরিত্রে কলকাতার শান্তিলাল মুখোপাধ্যায় সুন্দর অভিনয় করেছেন। শ্রাবন্তী বরাবরের মতো প্রাণবন্ত ও সাবলীল ছিলেন ছবিটিতে। শাকিব খানের সঙ্গে তাকে মানিয়েছেও বেশ। সিনেমায় বেশ কিছু জায়গায় পায়েল সরকারের কলকাতার আঞ্চলিক টান ভালো লাগেনি মোটেই।
ছবির গান, লোকেশন, ক্যামেরার কাজ ও সম্পাদনা মন্দ নয়।
জয়দীপ মুখার্জী পরিচালিত ‘ভাইজান এলো রে’ ছবিটি দেখে দর্শকরা বিনোদন পেয়েছেন তা নিশ্চিত করেই বলা যায়। সব ছবি দেখে কেনো ভাবনার জায়গা তৈরি করতে হবে? কিছু ছবি দেখে শুধু বিনোদন পেলে সমস্যা কোথায়?
Comments