চিনে নিন বার্সেলোনার নতুন জাভিকে

এক সময় বার্সেলোনার মাঝ মাঠ কাঁপাতেন জাভি হার্নান্দেজ ও আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা। কিন্তু বর্তমান দলে নেই কেউই। প্রথম জাভি পরে ইনিয়েস্তা দল ছেড়েছেন। ফিলিপ কৌতিনহো, সের্জিও বুস্কেতস, ইভান রাকিতিচরা আছেন। তবুও কোথায় যেন একটা অপূর্ণতা। তবে অবশেষে বার্সার আক্ষেপ কিছুটা হলেও লাঘব হয়েছে। কারণ চলতি মৌসুমে যোগ দেওয়া আর্থার মেলোর মাঝেই জাভির ছায়া দেখছেন ফুটবল বোদ্ধারা।

অনেক দিন থেকেই তরুণ একজন মিডফিল্ডার খুঁজছে বার্সেলোনা। গত বছর থেকেই আর্থারকে পর্যবেক্ষণ করছিল দলটি। তার মাঝে টোস্টাওর ছায়া খুঁজে পেয়েছেন ব্রাজিলিয়ানরা। কিন্তু ব্রাজিলের বিশ্বকাপ দলে জায়গা হয়নি তার। কিন্তু থেমে থাকেনি বার্সা। চুক্তিটা করে রাখা হয়েছিল গত মার্চে। তবে জুলাইয়ে ছয় বছরের চুক্তিতে মোট ৪০ মিলিয়ন ইউরো খরচ করে দলে নিয়ে আসে এ ব্রাজিলিয়ানকে। ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি উচ্চতার এ খেলোয়াড়ের রিলিজ বা বাইআউট ক্লজ রাখা হয়েছে ৪০০ মিলিয়ন ইউরো।

চলতি আসরে যোগ দিয়ে ইন্টারন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন্স কাপেই নজর কেড়েছেন ২২ বছর বয়সী আর্থার। আর স্প্যানিশ সুপার কোপায় তার খেলা দেখে মুগ্ধ খোদ জাভিও। তার খেলার ধরণ, বল নিয়ন্ত্রণ অনেকটাই জাভির মতোই বলছেন কোচ হতে শুরু করে সতীর্থরাও। টটেনহ্যামের বিপক্ষে ম্যাচ শেষে রাফিনহা বলেছিলেন, ‘তার মাঝে জাভির ছোঁয়া আছে। যেভাবে সে বল স্পর্শ করে, পাস দেয় সত্যিই অসাধারণ। বার্সেলোনার জন্য দারুণ একটি চুক্তি।’

যার সঙ্গে এতো তুলনা, সেই জাভি স্প্যানিশ দৈনিক মুন্ডো দিপার্তিভোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘তার মাঝে বার্সেলোনার ডিএনএ আছে।’ তবে জাভি কিংবা ইনিয়েস্তা নয় তাকে আর্থার হিসেবেই গড়ে উঠতে পরামর্শ দিয়েছেন সাবেক বার্সা অধিনায়ক, ‘তাকে তার নিজের ক্যারিয়ার গড়তে হবে। তাকে ব্যক্তিত্ব দেখাতে হবে। সে যে ভিন্ন একজন খেলোয়াড় এটা প্রদর্শন করতে হবে। কিংবা তার চেয়ে ভালো কিছু।’

গ্রেমিওতে আর্থার যুব ও মূল দল মিলিয়ে খেলেছেন আট বছর। ছোট ও সাধারণ পাসে দেখিয়েছেন শিল্পের ছোঁয়া। শূন্যে উঠিয়ে আবার ধরে বল নিয়ন্ত্রণ করে দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাওয়া মুগ্ধ নয়নে দেখার মতো। মনে হয় যেন ধারে বল নিয়েছেন সতীর্থদের কাছ থেকে, শতভাগ নিশ্চিত হয়ে ফেরত দিতে হবে বল। ৯০ মিনিটের খেলায় ব্রাজিলিয়ান সিরিএ’র গত আসরে তার চেয়ে নিখুঁত ছিলেন না কেউই।

মূলত কোপা লিবার্তাদোরেসে নিজের আসল ঝলক দেখান আর্থার। লানুসের বিপক্ষে ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে ইনজুরির কারণে খেলতে পেরেছেন ৫০ মিনিট। কিন্তু পুরো ম্যাচে যেভাবে প্রতিপক্ষকে শাসন করেছেন তাতেই মিলেছে ম্যান অব দ্য ম্যাচ পুরষ্কার। কোয়ার্টার ফাইনালে বোতাফোগোর বিপক্ষে তার পাসের যথার্থতা ছিল ১০০%। ম্যাচ শেষে প্রতিপক্ষ কোচ রেনাতো পর্তালুপ্পি তাকে বলেছেন, ‘গ্রেমিওর সোনার ডিমের আরও একটি মুরগি।’ বলে রাখা ভালো, এ ক্লাব থেকেই উঠে এসেছেন রোনালদিনহোর মতো তারকা।

বার্সেলোনার সোনালী সময়ের কারিগর রোনালদিনহোর পথেই হাঁটছেন আর্থার। যদিও আন্দ্রেস ইনিয়েস্তাকে আদর্শ মেনেই বড় হয়েছেন তিনি। আক্ষেপ তার সঙ্গে এক সঙ্গে খেলতে না পারার। কিন্তু ইনিয়েস্তার ৮ নাম্বার জার্সি পরেই খেলছেন বার্সেলোনায়। কিংবদন্তীদের সঙ্গে তুলনায় বেশ বিনয়ী আর্থার, ‘আমি জাভি বা ইনিয়েস্তা না। আমি আর্থার। তাদের সঙ্গে তুলনা করতে দেখাটা অসাধারণ। আমি সবসময়ই তাদের অনুসরণ করেছি। তাদের প্রতি আমার ভালবাসাটা কখনো লুকাইনি।’

Comments

The Daily Star  | English

JnU students vow to stay on streets until demands met

Jagannath University (JnU) students tonight declared that they would not leave the streets until their three-point demand is fulfilled

7h ago