‘শহিদুল আলম অসুস্থ, চিকিৎসা প্রয়োজন’

তথ্য প্রযুক্তি আইনের বিতর্কিত ৫৭ ধারায় মামলায় কারাগারে থাকা বিশিষ্ট আলোকচিত্রী শহিদুল আলম অসুস্থ এবং তার জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজনের কথা জানিয়ে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সরকার ও কারাগার কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তার স্ত্রী ও সহকর্মী।
shahidul alam

তথ্য প্রযুক্তি আইনের বিতর্কিত ৫৭ ধারায় মামলায় কারাগারে থাকা বিশিষ্ট আলোকচিত্রী শহিদুল আলম অসুস্থ এবং তার জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজনের কথা জানিয়ে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সরকার ও কারাগার কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তার স্ত্রী ও সহকর্মী।

বুধবার ঈদের দিন কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগারে দেখা করার পর শহিদুল আলমের স্ত্রী রেহনুমা আহমেদ ও সহকর্মী সাদিয়া গুলরুখ বিবৃতি দিয়ে এই আহ্বান জানান।

বিবৃতিতে তারা বলেন, শহিদুল বিভিন্ন ধরনের শারীরিক জটিলতায় আক্রান্ত। তার শ্বাস প্রশ্বাস ও চোখে সমস্যা হচ্ছে। এছাড়াও চোয়াল ও দাঁতের মাড়িতে যন্ত্রণা অনুভব করছেন। তাদের দাবি, গত ৫ আগস্ট শহিদুলকে তার বাড়ি থেকে সাদা পোশাকে একদল লোক তুলে নিয়ে যাওয়ার আগে তার এ ধরনের শারীরিক সমস্যা ছিল না।

শহিদুল আলমকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে গত ৬ আগস্ট আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হলে সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। ১২ আগস্ট আদালতে হাজির করা হলে তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেওয়া হয়।

গতকাল দেওয়া বিবৃতিতে আরও বলা হয়, শহিদুলকে হাসপাতালে স্থানান্তর করে চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য আমরা সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি। আরও সুনির্দিষ্ট করে কারা কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের এই আবেদন।

গত ৫ আগস্ট রাত ১০টার দিকে ড. শহিদুল আলমকে জোরপূর্বক তার ধানমন্ডির বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। শহিদুলের প্রতিষ্ঠিত দৃক গ্যালারি থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, ৩০ থেকে ৩৫ জন সাদা পোশাকধারী নিজেদেরকে ‘ডিবির লোক’ পরিচয় দিয়ে শহিদুল আলমকে বাসা থেকে নামিয়ে আনেন। বাইরে অপেক্ষারত একটি গাড়িতে জোর করে তোলার সময় তিনি চিৎকার করছিলেন। গাড়িটির গায়ে লেখা ছিল, ‘পপুলার লাইফ ইনস্যুরেন্স’।

তারা বিল্ডিংটির সিসিটিভি ক্যামেরা টেপ দিয়ে ঢেকে হার্ডডিস্কের ফুটেজ নিয়ে যায় এবং দারোয়ানদেরকে তালাবদ্ধ করে রাখে। তার স্ত্রী রেহনুমা আহমেদ এসময় পাশের ফ্লাটে ছিলেন। চিৎকার শুনে তিনি সিঁড়ি দিয়ে দৌড়ে নেমে আসেন। কিন্তু ততক্ষণে শহিদুলকে বহনকারী গাড়িটি এবং এর সঙ্গে থাকা আরও দুটি গাড়ি দ্রুতবেগে চলে যায়।

পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা শহিদুল নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনের সময় ছাত্রলীগের হামলার শিকার হন বলে অভিযোগ পাওয়া গিয়েছিল। ধানমন্ডির সিটি কলেজের কাছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ভিডিও করার সময় তিনিও আক্রান্ত হয়েছিলেন।

ঘটনার পর পরই পাশের একটি গেস্ট হাউজে আশ্রয় নিয়ে ফেসবুক লাইভে এসে হামলার কথা জানিয়েছিলেন শহিদুল। তিনি বলেছিলেন, সিটি কলেজের পাশে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে তাকে আক্রমণ করা হয়। ভিডিও করার কারণেই তার ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ।

এই ভিডিও ক্লিপটি পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। ভাঙচুর হওয়া নিজের ক্যামেরার ছবিও নিজের ফেসবুকে শেয়ার করেছিলেন তিনি।

আল জাজিরাকে টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ছাত্র আন্দোলনে সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করেছিলেন শহিদুল। টেলিভিশনে সাক্ষাৎকারটি প্রচারিত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Equity funds from foreign investors dip

Bangladesh received 41 percent lower equity capital from foreign investors in fiscal year (FY) 2022-23 compared to a year ago

4h ago