‘ইউএস বাংলা দুর্ঘটনা নিয়ে প্রতিবেদন ভিত্তিহীন’
কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের সময় ইউএস বাংলার উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় পাইলট আবিদ সুলতানকে মূলত দায়ী করে নেপালের তদন্ত প্রতিবেদনকে ‘ভিত্তিহীন’ আখ্যা দিয়েছেন ওই তদন্তদলের সঙ্গে যুক্ত বাংলাদেশি তদন্তকারী ক্যাপ্টেন সালাহউদ্দিন এম রহমতুল্লাহ।
বিমান দুর্ঘটনার পর নেপালের পক্ষ থেকে যে তদন্তদল গঠন করা হয় শুরু থেকেই তাতে যুক্ত ছিলেন ক্যাপ্টেন রহমতুল্লাহ। আজ দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলেছেন, নেপালি গণমাধ্যমে তদন্ত প্রতিবেদন সম্পর্কে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে তা নিয়ে তিনি সেদেশের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবেন এবং দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে যা বলা হয়েছে সেটি নিয়ে প্রতিবাদ জানাবেন।
বাংলাদেশের এয়ারক্রাফট ইনভেস্টিগেশন গ্রুপের প্রধান ক্যাপ্টেন রহমতুল্লাহ আরও বলেন, যে তদন্তের কথা বলা হচ্ছে সেটি এখনো শেষ হয়নি। তদন্ত মাঝপথে থাকা অবস্থাতেই এখন এসব কথা হচ্ছে।
আজ কাঠমান্ডু পোস্টের খবরে বলা হয়, দুর্ঘটনাটি নিয়ে নেপাল সরকারের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন তাদের হাতে এসেছে। প্রতিবেদনে বিধ্বস্ত উড়োজাহাজের যান্ত্রিক ত্রুটি বা এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারের ভুল নির্দেশনার কোনো কথা উল্লেখ নেই। দুর্ঘটনার জন্য এতে পাইলটকেই দায়ী করা হয়েছে।
নেপালের যে সরকারি তদন্তের কথা বলা হচ্ছে তা এখনো শেষ হয়নি। আনুষ্ঠানিকভাবে নেপাল সরকার কোনো প্রতিবেদন প্রকাশও করেনি। এমন সময় সম্পূর্ণ দায় পাইলটের ওপর চাপিয়ে কেন নেপালের গণমাধ্যমে রিপোর্ট প্রকাশ করা হলো, সে প্রশ্নও সামনে আসছে।
ক্যাপ্টেন রহমতুল্লাহ প্রশ্ন তুলে বলেন, নেপালের সরকারি তদন্ত সম্পন্ন করার জন্য আরও চার থেকে পাঁচ মাস সময় বাকি রয়েছে। এই অবস্থায় তারা কি করে এমন তথ্য প্রকাশ করতে পারে? তিনি জানান, শুরু থেকেই এই তদন্ত দলের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তিনি।
প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে কাঠমান্ডু পোস্টের খবরে বলা হয়, অবতরণের সময় উড়োজাহাজটির পাইলট আবিদ সুলতান কনট্রোল টাওয়ারের কাছে অসত্য তথ্য দিয়েছিলেন এবং পুরো এক ঘণ্টার যাত্রাতেই ককপিটে ক্রমাগত ধূমপান করেছিলেন। দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে বলা হয়, পাইলট প্রচণ্ড রকম ব্যক্তিগত মানসিক চাপে ছিলেন। এ কারণেই তিনি বার বার ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ফলাফল হিসেবে বিমানটি অবতরণ করতে গিয়ে বিধ্বস্ত হয়।
দুর্ঘটনার পর দিন ত্রিভুবন বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কনট্রোলারের সঙ্গে কথোপকথনের যে সামান্য অংশ ইউটিউবে প্রকাশিত হয়েছিল তাতে পাইলট আবিদ সুলতানের কথা ও আচরণ উদ্বিগ্ন বা বেপরোয়া বলে মনে হয়নি। উড়োজাহাজটি রানওয়ের কোন দিক থেকে অবতরণ করবে সেটিই ছিল তাদের কথোপকথনের বিষয়।
গত ১২ মার্চ ৭১ জন আরোহী নিয়ে ঢাকা থেকে কাঠমান্ডুগামী বাংলাদেশের বেসরকারি বিমান সংস্থা ইউএস-বাংলার ফ্লাইট বিএস২১১ ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত হয়। এতে নিহত ৫১ জনের মধ্যে ২২ জন নেপালি ও একজন চীনা নাগরিক। অন্যরা সবাই বাংলাদেশি।
Comments