সমকামিতা অপরাধ নয়, ভারতের সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায়

সমকামিতা কোনো অপরাধ নয় বলে রায় দিয়েছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। এই ঐতিহাসিক রায়ের ফলে সমকামিতা আর দণ্ডযোগ্য অপরাধ হিসেবে দেশটিতে বিবেচিত হবে না।
সমকামিতাকে অপরাধ হিসেবে আখ্যা দেওয়া ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারা বাতিলের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করেছেন অধিকার কর্মীরা। ছবি: এপি

সমকামিতা কোনো অপরাধ বা মানসিক সমস্যা নয় বলে রায় দিয়েছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। এই ঐতিহাসিক রায়ের ফলে সমকামিতা আর দণ্ডযোগ্য অপরাধ হিসেবে দেশটিতে বিবেচিত হবে না।

ঔপনিবেশিক আমলের ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারায় সমকামিতাকে ‘অস্বাভাবিক কর্মকাণ্ড’ আখ্যা দিয়ে অপরাধ হিসেবে ধরা হয়েছিল। এর সর্বোচ্চ সাজা ছিল জরিমানাসহ ১০ বছরের কারাদণ্ড।

এই ধারার বৈধতা নিয়ে এর আগেও ভারতের আদালত থেকে রায় এসেছে। ২০১৩ সালে সুপ্রিম কোর্ট ৩৭৭ ধারা রাখার পক্ষে অবস্থানের কথা জানিয়েছিলেন। দেশটির সর্বোচ্চ আদালতের পাঁচ বিচারকের সাংবিধানিক বেঞ্চ সর্বসম্মতিক্রমে আজ সেই রায়কে নাকচ করে দিলেন।

বিশ্বজুড়ে পুরনো যেসব আইনে সমকামিতাকে নিষিদ্ধ রাখা হয়েছিল ভারতের দণ্ডবিধি তার মধ্যে অন্যতম। দেশটির সরকার বিভিন্ন আইনের এই বিধানগুলো সংস্কারে বিভিন্ন উপলক্ষে অনীহা দেখিয়ে এসেছে। তবে সমকামিতাকে আর অপরাধ হিসেবে বিবেচনা না করার জন্য গত কয়েক বছর ধরে ভারতে আন্দোলন হয়েছে। সর্বোচ্চ আদালতের এই রায়কে তাদের আন্দোলনের বিজয় হিসেবেই বিবেচনা করা হচ্ছে।

বিবিসির খবরে জানানো হয়, ভারতের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র রায়ে বলেন, ‘শারীরিক সম্পর্ককে অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা অযৌক্তিক, খামখেয়ালী ও অসাংবিধানিক।’

রায়ে সাংবিধানিক বেঞ্চ আরও বলেছে, নারী পুরুষ ভেদে প্রত্যেক ব্যক্তিরই তার শরীরের ওপর পূর্ণ অধিকার রয়েছে। যৌনতাও সম্পূর্ণভাবে তাদের ইচ্ছাধীন বিষয়।

এই রায় আসার পর আদালতের বাইরে উৎসবে মেতেছেন সমকামী অধিকার আন্দোলনকারীরা।

ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারার বিরুদ্ধে প্রথম আপত্তি জানায় স্বে‌চ্ছাসেবী সংস্থা নাজ ফাউন্ডেশন। ২০০১ সালে দিল্লি হাইকোর্টে ওই ধারাকে চ্যালেঞ্জ করে তারা। ২০০৯ সালে দিল্লি হাইকোর্ট রায় দেয়, সম্মতির ভিত্তিতে দুই প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে যৌন সম্পর্ক অপরাধ নয়। যৌন পছন্দ যা-ই হোক না কেন, দুই প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে যৌন সম্পর্কে আপত্তি জানালে ব্যক্তি অধিকারের লঙ্ঘন হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

5h ago