জার্মানিতে চালু হলো বিশ্বের প্রথম হাইড্রোজেন রেলগাড়ি
বিশ্বের প্রথম হাইড্রোজেন রেলগাড়িতে চড়ার সৌভাগ্য অর্জন করলেন জার্মানির যাত্রীরা। দেশটির পুরনো ডিজেলচালিত ইঞ্জিনগুলো সরিয়ে অত্যাধুনিক এই হাইড্রোজেন ইঞ্জিন ব্যবহার করা হচ্ছে। এটিই এখন পৃথিবীর নতুন পরিবহন প্রযুক্তি।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, ফরাসিদের তৈরি এই হাইড্রোজেন রেলগাড়িটি গতকাল (১৭ সেপ্টেম্বর) প্রথম ছাড়া হয় জার্মানির লোয়ার সেক্সন রাজ্যের ব্রেমেরফুরদে স্টেশন থেকে।
জার্মানির কুক্সহাভেন এবং বুক্সতেহুদে শহরের মধ্যে ১০০ কিলোমিটার রেলপথে চলাচলকারী ট্রেনগুলোর ডিজেল ইঞ্জিন সরিয়ে হাইড্রোজেন ইঞ্জিন জুড়ে দেওয়া হয়। আগামী ২০২১ সালের মধ্যে আরও ১৪টি হাইড্রোজেন ইঞ্জিন যোগ করার পরিকল্পনা রয়েছে দেশটির। এই ইঞ্জিনগুলো তৈরি করেছে ফরাসি প্রতিষ্ঠান আলস্টম।
ট্রেনটির উদ্বোধনী যাত্রা উপলক্ষে ব্রেমেরফুরদে স্টেশনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আলস্টমের প্রধান নির্বাহী হেনরি পোপোর্ট-লাফার্জ বলেন, “এখন থেকে বাণিজ্যিক সেবা শুরু করলো বিশ্বের প্রথম হাইড্রোজেন ট্রেন। এর নিয়মিত উৎপাদনের জন্যেও আমরা প্রস্তুত রয়েছি।”
একটি হাইড্রোজেন ট্যাঙ্ক ট্রেনের সঙ্গে থাকবে আর এর ছাদে থাকবে জ্বালানি কোষ। অক্সিজেন ও হাইড্রোজেনের সংমিশ্রণ ঘটিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। অতিরিক্ত জ্বালানি সংরক্ষণ করা হবে ব্যাটারিতে। একবার জ্বালানি নিয়ে ট্রেনটি এক হাজার কিলোমিটার চলতে পারবে। এমনকি, ছুটতে পারবে ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার গতিতে।
এছাড়াও, হাইড্রোজেন ইঞ্জিন থেকে ধোঁয়ার পরিবর্তে বাষ্প বের হবে এবং এর শব্দ দূষণ নেই বললেই চলে। এই ইঞ্জিনচালিত রেলগাড়িগুলোতে খরচও পড়বে কম।
আলস্টমের এই প্রকল্পের ব্যবস্থাপক স্টেফান শরাঙ্ক বলেন, “এ কথা ঠিক যে ডিজেল ইঞ্জিনের চেয়ে হাইড্রোজেন ইঞ্জিনের দাম বেশি। তবে এর পরিচালনা খরচ তুলনামূলকবাবে অনেক কম।”
পরিবেশ দূষণ কমানোর লক্ষ্যে জার্মানির লোয়ার সেক্সন রাজ্য ৮১.৩ মিলিয়ন ইউরো খরচ করেছে। আগামী ২০৫০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানোর জন্যে এই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়।
আলস্টম জানায়, তাদের এই ইঞ্জিনগুলো কেনার জন্যে যুক্তরাজ্য, নেদারল্যান্ডস, ডেনমার্ক, নরওয়ে, ইতালি এবং কানাডা থেকে আগ্রহ প্রকাশ করা হয়েছে। আর ইঞ্জিনটির নির্মাণকারী দেশ ফ্রান্স প্রস্তুতি নিচ্ছে আগামী ২০২২ সালে হাইড্রোজেন রেলগাড়ি এর যাত্রীদের উপহার দিতে।
Comments