নাটকীয় ফেরায় স্মরণীয় ইমরুল

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ইনিংস যখন মাঝপথে ইমরুল কায়েস তখন খুলনায়। এইচপি লাল ও সবুজ দলের ম্যাচের তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করে সতীর্থ সৌম্য সরকারকে নিয়ে এক রেস্টুরেন্ট খেতে গিয়েছিলেন। বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হতেই আসে আচমকা খবর। হুট করে এশিয়া কাপের দলে ডাক পড়েছে দুজনের।

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ইনিংস যখন মাঝপথে ইমরুল কায়েস তখন খুলনায়। এইচপি লাল ও সবুজ দলের ম্যাচের তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করে সতীর্থ সৌম্য সরকারকে নিয়ে এক রেস্টুরেন্ট খেতে গিয়েছিলেন। বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হতেই আসে আচমকা খবর। হুট করে এশিয়া কাপের দলে ডাক পড়েছে দুজনের।

খবর পেয়ে খুলনা থেকে তড়িঘড়ি ঢাকায় ফেরেন ইমরুল-সৌম্য। পরদিন সন্ধ্যায় দুবাইয়ের বিমান ধরে মধ্যরাতে দুবাই। ভ্রমণের শেষ হয়নি তখনও। রাতটা টিম হোটেলে পার করে সকাল বেলাতেই দলের সঙ্গে ১৪০ কিলোমিটার দূরের আবুধাবি। সৌম্যর জায়গা না হলেও,  ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুলনা-ঢাকা-দুবাই হয়ে আবুধাবিতে এসেই ম্যাচ খেলতে নামতে হয় ইমরুলকে। 

দলে ইমরুলের এভাবে অন্তর্ভুক্তি নিয়ে উঠেছিল প্রশ্ন। গত বছরে অক্টোবরে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের পর আর ছিলেন না ওয়ানডে দলে। এরমধ্যে করেননি আহামরি কিছু। তবু আচমকা কেন তাকে ফেরানো হচ্ছে দলে, এসব কথা চাউর হওয়ায় ইমরুকের কানও ভারি হওয়ার কথা। 

সব মিলিয়ে নিশ্চিতভাবেই পাহাড়সময় চাপ ছিল ইমরুলের উপর। তার বিপক্ষে যাওয়ার মতো আরও কিছু বিষয়। যে ওপেনারদের ব্যর্থতায় তাকে ডেকে পাঠানো সেই ওপেনিংয়ে নামানো হয়নি তাকে, এমনকি তিনেও না। ক্যারিয়ারের প্রথমবারের মতো নামেন ছয় নম্বর। নামার পরই দলের স্কোর হয়ে যায় ৫ উইকেটে ৮৭।

দলের বিপদ, নিজেকে প্রমাণের মঞ্চ। ইমরুল সবটাই সামলেছেন দারুণভাবে।  মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ৬ষ্ঠ উইকেটে রেকর্ড ১২৮ রানের জুটি। ঝলমলে ৭৪ রানের ইনিংসে মূল নায়ক মাহমুদউল্লাহই। তবে শেষ পর্যন্ত ৭২ রানে টিকে ইমরুল হয়েছেন পার্শ্ব নায়ক। ম্যাচ শেষে ইমরুল কায়েসকে প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন মাহমুদউল্লাহ, ‘ইমরুল গতকাল ফ্লাই করে আসছে। এমন গরম আবহাওয়াতে যেভাবে ইনিংস খেলেছে, সেটা অসাধারণ ছিলো। খুব ভালো লাগছো তার পারফরম্যান্স দেখে। আশা করি এটা সে চালিয়ে যাবে।’

এর আগে ৭০ ওয়ানডের ৬১টি ম্যাচই ওপেনিংয়ে খেলেছেন ইমরুল, ৯ ম্যাচে তিনে ব্যাট করেছেন। এর নিচে কখনোই ব্যাট করা হয়নি। এবার তাকে নামানো হয় ছয় নম্বরে। মাহমুদউল্লাহ জানান দল আলাদা পরিকল্পনা করেই তাকে খেলিয়েছে এখানে, ‘বিশেষ পরিকল্পনাতো অবশ্যই ছিলো। কারণ অনেক অভিজ্ঞ খেলোয়াড়। তার অভিজ্ঞতা আমাদের ব্যবহার করার প্রয়োজন ছিলো। আমাদের কৌশলগত কিছু পরিকল্পনা ছিলো।’

খেলার ধরণ থেকে মনে হয়েছে রশিদ খানকে সামলানোর পরিকল্পনা থেকেই ইমরুলকে নিচে নামানো। নিচে নেমে ইমরুল সফল হবেন কিনা, সন্দিহান ছিলেন মাহমুদউল্লাহও, ‘আমি এ ব্যাপারে খুব দ্বিধায় ছিলাম। ইমরুল কখনো ৬ নম্বরে ব্যাটিং করেনি। কারণ সে টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান। ওইপজিশনের একজন ব্যাটসম্যানের ছয় নম্বরে নেমে খেলাটা বেশ কঠিন।’

কঠিন কাজটা ঠিকঠাক করে আপাতত লেটার মার্কস পেয়ে উত্তীর্ণ ইমরুল। দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে যে ম্যাচের পর বাদ পড়েছিলেন, তার আগের ম্যাচেই ছিল ফিফটি। তবু নেতিবাচক অ্যাপ্রোচের কারণে দলে থাকা হচ্ছিল না তার। এবার কার্যকর রান করেছেন, পরিস্থিতির দাবি মিটিয়েছেন। ফেরাটা ইমরুলের এরচেয়ে স্মরণীয় আর কি হতে পারত।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

6h ago