‘মন্ত্রিসভায় সংশোধনের বিষয়টি নীতিগতভাবে অনুমোদিত হলে, তা হবে বড় অর্জন’

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কিছু ধারা নিয়ে সম্পাদক পরিষদ,সাংবাদিক, সাংবাদিকদের সংগঠন, নাগরিক সমাজ আপত্তি তুলেছেন। সংশোধনের দাবি জানিয়েছেন। সরকারের মন্ত্রীদের সঙ্গে সম্পাদক- সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে, আশ্বাস মিলেছে। আবার আইনে রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষর করতে যাচ্ছেন বলেও জানা যাচ্ছে।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল। ছবি: সংগৃহীত

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কিছু ধারা নিয়ে সম্পাদক পরিষদ,সাংবাদিক, সাংবাদিকদের সংগঠন, নাগরিক সমাজ আপত্তি তুলেছেন। সংশোধনের দাবি জানিয়েছেন। সরকারের মন্ত্রীদের সঙ্গে সম্পাদক- সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে, আশ্বাস মিলেছে। আবার আইনে রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষর করতে যাচ্ছেন বলেও জানা যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে দ্য ডেইলি স্টার বাংলা অনলাইনের সঙ্গে কথা বলেছেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল।

• ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গতকাল মঙ্গলবার স্বাক্ষর করেছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার, আজ রাষ্ট্রপতির দপ্তরে পাঠানো হতে পারে, রাষ্ট্রপতি এতে স্বাক্ষর করলেই কার্যকর হয়ে যাবে, এক্ষেত্রে আপনাদের অবস্থান বা প্রতিক্রিয়া কি?

মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল: তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং ডাক, টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা সম্পাদক পরিষদের সঙ্গে বসেছিলেন। তারা বলেছিলেন যে, এটি কেবিনেট মিটিংয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। সম্পাদক পরিষদ এবং সাংবাদিকরা এটার জন্য অপেক্ষা করবে। আর এদিক থেকে যে প্রক্রিয়া চলছে, সংসদ যথা নিয়মে তার কার্যপদ্ধতি চালাবে। এটি রাষ্ট্রপতির কাছে যাবে। রাষ্ট্রপতি এটা স্বাক্ষর করতে পারেন এবং তার এখতিয়ার আছে তিনি ফেরতও পাঠাতে পারেন। রাষ্ট্রপতি যদি স্বাক্ষর নাও করেন, আইন অনুযায়ী ১৫ দিন পরে তা কার্যকর হয়ে যাবে। কাজেই আমাদের অপেক্ষা করতে হবে, এখানে যে আপত্তিগুলো তিন মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা শুনেছেন, তারা বলেছেন মন্ত্রিসভায় নিয়ে যাবেন। সে পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। এর মাঝখানে আর কিছু করণীয় আছে বলে আমার মনে হয় না।

• সম্পাদক পরিষদ মানববন্ধন কর্মসূচি স্থগিত করে আলোচনায় বসল, কিন্তু আইন কার্যকরের উদ্যোগ তো এগিয়ে চলছে।

বুলবুল: আলোচনার জন্যই সম্পাদক পরিষদের মানববন্ধন কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছিল। তারপরে আলোচনাও হয়েছে। আলোচনার এই পর্যায়ে মন্ত্রীদের আশ্বাসে সম্পাদকরা ও সাংবাদিক নেতারা সন্তুষ্ট হয়েছেন। কাজেই আমাদের অপেক্ষা করতে হবে যে, কেবিনেট মিটিংয়ে এটি নিয়ে কী আলোচনা হয়। তবে এই সোমবারে তা সম্ভব হয়নি, আগামী সোমবারে হওয়ার একটা সম্ভাবনা আছে।

• মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধনের যদি কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, এ মাসের শেষের দিকে বর্তমান সংসদের শেষ অধিবেশনে এই আইনের সংশোধনী বিল উত্থাপনের সম্ভাবনা থাকবে?

বুলবুল: আমাদের আশাবাদ আগেও ছিল, কিন্তু আশা তো কার্যকর হয়নি। যে পদ্ধতির কথা বলা হচ্ছে, সেই পদ্ধতিতে কেবিনেট মিটিংয়ে যদি এটি সংশোধনীর চিন্তা করাও হয়, আমার মনে হয় না এ সংসদের শেষ অধিবেশনে এটি উত্থাপন করা সম্ভব হবে। কারণ কি কি বিষয়ে সংশোধনী হবে, সেটি নিয়ে আবার আলোচনা করতে হবে, সংশোধনীর প্রস্তাবটা আবার আইন মন্ত্রণালয় ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় হয়ে আবার কেবিনেটে যাবে। সেখান থেকে আবার সংসদে পাঠাবে। সংসদ আবার সংসদীয় কমিটিতে পাঠাবে। সংসদীয় কমিটি আবার পার্লামেন্টে আনবে। কাজেই মন্ত্রিসভায় যদি নীতিগতভাবে অনুমোদন হয় যে, এটি সংশোধন করা হবে, এটিই আপাতত একটি বড় অর্জন হবে। তাহলে পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে আমাদের কথা বলতে সুবিধা হবে। আর যদি মন্ত্রিসভায় তা তোলা না যায়, তাহলে বিলম্ব হবে। এই সরকারে আমলে এই মেয়াদে আর তা হচ্ছে না। তখন এটি নিয়ে নতুন সরকারের আমলে নতুন পার্লামেন্টে যেতে হবে।

• এই সরকারের অধীনে আইনটি সংশোধন না হলে পরবর্তী সরকার আসা পর্যন্ত আপনাদের করণীয় কি?

বুলবুল: এটি চলমান প্রক্রিয়া। আলোচনার পর্যায়ে সংশোধনীর ব্যাপারে যদি মন্ত্রিসভা নীতিগতভাবে একমত হয়, তাহলে আর আন্দোলন বিক্ষোভের কোনো সুযোগ নাই। আমাদের অপেক্ষা করতে হবে যে, মন্ত্রিসভা কি পদ্ধতিতে এটি সংশোধন করতে চায়। আইনটি নিয়ে আমরা যারা আপত্তি দিয়েছিলাম, তাদের সঙ্গে এবং সংগঠনগুলোর সঙ্গে সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিয়ে আলোচনা করতে পারে। এভাবেই এগুতে হবে।

এই মেয়াদে যদি মন্ত্রিসভা নীতিগতভাবে অনুমোদন দেয় যে তারা এটি সংশোধন করবেন, তাহলেই এই আইনের কার্যকারিতা অনেকখানি দুর্বল হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে আমাদের আশঙ্কাও কমবে। মন্ত্রিসভা যখনই বলবে যে, আমরা আইনটি সংশোধন করবো, তখন থেকেই সংশোধন করার আগ পর্যন্ত আইনটির ব্যাপক প্রয়োগ হবে বলে আমি মনে করছি না।

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

5h ago