মেসি জাদুতে টটেনহ্যামকে হারাল বার্সেলোনা
চার মিনিটের ব্যবধানে পোস্ট বারে লেগে বল ফিরে আসল দুই বার। মনে হচ্ছিল ভাগ্যটা যেন সঙ্গে নেই লিওনেল মেসির। কিন্তু এরপর দুইবার লক্ষ্যভেদ করেন এ আর্জেন্টাইন। এর আগের দুই গোলের উৎসও ছিলেন তিনি। সব মিলিয়ে মেসির দুর্দান্ত নৈপুণ্যে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে টটেনহ্যামের বিপক্ষে দারুণ এক জয় পেয়েছে বার্সেলোনা। ৪-২ গোলের ব্যবধানে ম্যাচ জিতে নিয়েছে স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নরা।
ওয়েম্বলিতে ম্যাচের দুই মিনিটেই ফিলিপ কৌতিনহোর গোলে এগিয়ে যায় বার্সা। গোলে দারুণ অবদান ছিল মেসির। মাঝ মাঠ থেকে নিখুঁত এক পাস দেন জর্দি আলবাকে। বল ধরতে তখন এগিয়ে আসেন টটেনহ্যাম গোলরক্ষক হুগো লরিস। তিনি ধরার আগেই কৌতিনহোকে পাস দেন আলবা। ফাঁকা পোস্টে দারুণ এক শটে লক্ষ্যভেদ করেন এ ব্রাজিলিয়ান। ২০১৬ সালে বুরুসিয়া মুনশেনগ্লাডবাখের বিপক্ষে ম্যাচের পর এদিন মেসি ছাড়া বার্সার অন্য কোন খেলোয়াড় চ্যাম্পিয়ন্স লিগে অ্যাওয়ে গোল পেলেন।
ব্যবধান বাড়াতেও খুব বেশি সময় নেয়নি বার্সেলোনা। ২৮ মিনিটে আরও একটি গোলের জোগান দেন মেসি। ডি বক্সে তার বাড়ানো বল ধরে কৌতিনহোকে ঠেলে দেন লুইস সুয়ারেজ। তার শট গোলরক্ষক ফেরালে ফিরতি বল ব্যাক পাস করেন ইভান রাকিতিচের উদ্দেশ্যে। আর তা থেকে দারুণ এক ভলিতে জালের ঠিকানা খুঁজে নেন এ ক্রোয়েশিয়ান।
৩০ মিনিটে আরও একটি দারুণ পাস সুয়ারেজকে দিয়েছিলেন মেসি। কিন্তু তার কোণাকোণি শট লক্ষ্যে থাকেনি। দুই মিনিট পর ব্যবধান কমানোর দারুণ সুযোগ পেয়েছিল টটেনহ্যাম। সন হিউং মিনের শট ডিফেন্ডার নেলসন সেমেদোর পায়ে লেগে পোস্টের দিকে যেতে থাকলে ঝাঁপিয়ে পড়ে রুখে দেন গোলরক্ষক মার্ক টের স্টেগেন। ফলে দুই গোলের লিড নিয়েই বিরতিতে যায় বার্সেলোনা।
৪৭ মিনিটে মাঝ মাঠ থেকে বল নিয়ে তিন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে লক্ষ্যে দারুণ এক শট নিয়েছিলেন মেসি। কিন্তু দুর্ভাগ্য তার, গোলরক্ষক পরাস্ত হলেও বারে লেগে বল ফিরে আসলে গোল বঞ্চিত হন মেসি। চার মিনিট পর যেন একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। এবারও মাঝ মাঠ থেকে বল নিয়ে তিন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে লক্ষ্যে শট নেন মেসি। বল ফিরে আসে সেই একই পোস্ট বারে লেগে।
ধারার বিপরীতে ৫২ মিনিটে দুর্দান্ত এক গোল দেন টটেনহ্যাম তারকা হ্যারি কেইন। এরিক লামেলার কাছ থেকে বল পেয়ে ডি বক্সের মধ্যে দুই ডিফেন্ডারকে বোকা বানিয়ে জালের ঠিকানা খুঁজে নেন ইংলিশ অধিনায়ক। চার মিনিট পর ভাগ্যকে সঙ্গে পান মেসি। এবার আর বার পোস্ট বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। আলবাকে বল দিয়ে ডি বক্সের মধ্যে ফিরতি বল আলতো টোকায় বল জালে জড়ান এ আর্জেন্টাইন।
৬৫ মিনিটে আলবার ভুলে ডি বক্সে বল পেয়ে যান কেইন। সে বল সতীর্থদের পা ঘুরে আসে লামেলার পায়ে। ডি বক্সের বাইরে থেকে তার দূরপাল্লার জোরালো শট ক্লেমোঁ লিংলের গায়ে লেগে দিক বদলে জালে পৌঁছালে দারুণ ভাবে ম্যাচে ফেরে টটেনহ্যাম। এ গোলেই যেন প্রাণ পায় তারা। এরপর বেশ কিছু আক্রমণ করে দলটি। ৮৪ মিনিটে প্রায় সমতায় ফিরে যাচ্ছিল দলটি। ফাঁকায় বল পেয়ে গিয়েছিলেন লুকাস মাউরা। তবে তার শট দৌড়ে এসে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন লিংলে।
নির্ধারিত সময়ের শেষ দিকে কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন মেসি। ডিফেন্ডারের ভুলে বল পেয়ে ডি বক্সে ঠেলে দেন আলবা। শট নিতে গিয়েও নেননি সুয়ারেজ। তাতেই এক বারে ফাঁকায় বল পেয়ে যান মেসি। বেশ সময় নিয়ে নিখুঁত শটে লক্ষ্যভেদ করেন পাঁচ বারের ব্যলন ডি’অর জয়ী এ তারকা। ফলে টানা দ্বিতীয় জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নরা।
এ জয়ে দুই ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপে শীর্ষে আছে বার্সেলোনা। এই গ্রুপের অপর ম্যাচে পিএসভি আইন্দহভেনকে ২-১ গোলে হারিয়েছে ইন্টার মিলান। ফলে বার্সার সমান ৬ পয়েন্ট তাদেরও। তবে গোল ব্যবধানে পিছিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে তারা। দুটি ম্যাচেই হারার কারণে টটেনহ্যাম ও পিএসভির পয়েন্ট শূন্য।
Comments