ভারতের কাছে আক্ষেপে পোড়ার আরেকটি গল্প

কদিন আগে এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতের কাছে শেষ বলে হারতে হয়েছিল বাংলাদেশকে। সেই ক্ষতে কিছুটা প্রলেপ দেওয়ার সুযোগ এসেছিল জুনিয়র টাইগারদের সামনে। কিন্তু তারা অবিশ্বাস্য ব্যাটিং ধসে উলটো ক্ষত বাড়িয়ে দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের রোমাঞ্চকর সেমিফাইনালে ভারতের কাছে ২ রানে হেরে গেছে বাংলাদেশ।

মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিং করা ভারতকে ১৭২ রানে গুটিয়ে কাজটা সেরে রেখেছিলেন বোলাররা। মামুলি ওই লক্ষ্য পৌঁছাতে নিদারুণ ব্যর্থতা দেখালেন ব্যাটসম্যানরা। ২২ বল বাকি থাকতে বাংলাদেশ অলআউট হয়েছে ১৭০ রানে।

বিশ্বকাপ, আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মতো বড় মঞ্চের নক আউট ম্যাচেও বারবার বাংলাদেশের বাধা হয়েছে ভারত। বয়সভিত্তিক পর্যায়েও নকআউট ম্যাচে সেই ভারতই বাধা হয়ে দাঁড়াল বাংলাদেশের।

রান তাড়ায় শুরুতে বিপর্যয়ে পড়লেও মিডল অর্ডারে শামীম হোসেন ও আকবর আলির ব্যাটিং মুন্সিয়ানায় ঘুরে দাঁড়িয়েছিল বাংলাদেশ। ৬ষ্ঠ উইকেটে দুজনের ৮০ রানের জুটির সময় মনে হচ্ছিল আনায়াসেই জিততে যাচ্ছে বাংলাদেশ। কিন্তু ৫৯ করা শামীম ও ৪৫ করা আকবরকে ফিরিয়ে খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেয় ভারতীয়রা। ১৩৯ থেকে ১৬১ পর্যন্ত যেতেই পড়ে যায় আরও চার উইকেট।

শেষ উইকেটে মিনহাজুর রহমান ও রকিবুল হাসান দলকে তবু টেনে নিয়েছিলেন জেতার কাছাকাছি। মিনহাজুরের রান আউটে মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়তে হয় বাংলাদেশকে।

এর আগে ভারতের ইনিংসের প্রায় পুরোটাই দাপট ছিল বাংলাদেশের বোলার-ফিল্ডারদের। ইনিংসের শুরুতেই আঘাত হানেন বাঁহাতি পেসার শরিফুল। দেবদূত পাডিকালকে ফিরিয়ে দেন ৩ রানেই। এরপর ইয়াসভি জসওয়াল ও অনুজ রাওয়াত সামাল দেন বিপর্যয়। তাদের ৬৬ রানের জুটির পর বাংলাদেশের দুই স্পিনার গুড়িয়ে দেন ভারতের মিডল অর্ডার। ৮ রানের ব্যবধানে আরও ৪ উইকেট হারায় ভারত। যার দুটি নেন তৌহিদ হৃদয়, অন্য দুটি যায় লেগ স্পিনার রিশাদের পকেটে।

ভারতের দ্বিতীয় প্রতিরোধের শুরু সেখান থেকেই। ৬ষ্ঠ উইকেটে ৫৯ রানের জুটি গড়েন আয়ুশ বাদনি ও সামির চৌধুরী। মিনহাজুর রহমানের বলে বাদনির আউতে ভাঙে জুটি।

এরপর শরিফুল আর মৃত্যুঞ্জয়ের পেসের সামনে আর দাঁড়াতে পারেনি ভারতের ইনিংস। বাকি চার উইকেট তুলেছেন এই দুই পেসার। ১০ ওভার বল করে মাত্র ১৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট শরিফুলের। ২৭ রানে ২ উইকেট নেন মৃত্যুঞ্জয়।

বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্যটা ছিল মামুলি। কিন্তু শুরুটাও হয় আবারও বাজে। দুই ওপেনার প্রান্তিক নওরোজ ও সাজিদ হোসেন ফেরেন দলের ২১ রানেই। চারে নামা অধিনায়ক তৌহিদ হৃদয় করতে পেরেছেন মাত্র ৮ রান। ৫৯ রানে ৫ উইকেট খুইয়ে তাই শঙ্কাতেই পড়েগিয়েছিল জুনিয়র টাইগাররা। সেখান থেকে দলকে টেনে তুলেও শেষটা করতে পারলেন না আকবর-শামিমরা। সিনিয়রদের মতো তীরে এসে তরি ডুবাতে না পারার হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হলো জুনিয়রদেরও।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ভারত অনূর্ধ্ব-১৯ দল: ৪৯.৩ ওভারে ১৭২ (যশস্বী ৩৭, পাদিক্কাল ১, রাওয়াত ৩৫, সিমরান ২, রাঠোর ২, বাদোনি ২৮, সমীর ৩৬, গঙ্গাপুরাম ১৭, হার্শ ৮, মোহিত ১, দেশাই ২*; শরিফুল ৩/১৬, মৃত্যুঞ্জয় ২/২৭, শামিম ০/২৫, মাহমুদুল ০/১৫, রিশাদ ২/৩৬, তৌহিদ ২/৪, রকিবুল ০/২৮, মিনহাজুল ১/১৯)

বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল: ৪৬.২ ওভারে ১৭০ (প্রান্তিক ৬, সাজিদ ২, মাহমুদুল ২৫, তৌহিদ ৮, শামিম ৫৯, রিশাদ ২, আকবর ৪৫, মৃত্যুঞ্জয় ২, রকিবুল ৪*, শরিফুল ০, মিনহাজুর ৬; মোহিত ৩/২৫, গঙ্গাপুরাম ১/২৬, দেশাই ৩/৩৫, বাদোনি ০/৩৩, হার্শ ২/২৯, সমীর ০/২১)

ফল: ভারত অনূর্ধ্ব-১৯ দল ২ রানে জয়ী

Comments

The Daily Star  | English

Smaller in size, larger in intent

Finance Adviser Salehuddin Ahmed has offered both empathy and arithmetic in his budget speech, laying out a vision that puts people, not just projects, at the heart of economic policy.

10h ago