মুন সিনেমা হলের মালিককে ১০০ কোটি টাকা পরিশোধের আদেশ

supreme court
সুপ্রিম কোর্ট ভবন। ছবি: স্টার ফাইল ফটো

পুরান ঢাকার মুন সিনেমা হলের মালিককে প্রায় ১০০ কোটি টাকা পরিশোধ করার জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আগামী ৮ ডিসেম্বরের মধ্যে সরকারকে এই টাকা পরিশোধ করতে হবে।

আজ আদালত অবমাননার আবেদনের শুনানি করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ এই আদেশ দেয়। শুনানিতে এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, সিনেমা হলের সম্পদের মূল্য বাবদ ১০০ কোটি টাকা দিতে সম্মত হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এই অর্থ পরিশোধ করা হবে। এর পরই মুন সিনেমা হলের মালিককে ৮ ডিসেম্বরের মধ্যে এই টাকা পরিশোধ করার আদেশ দেন সর্বোচ্চ আদালত।

মুন সিনেমা হলের মালিকানার মামলা নিয়ে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বাতিলের রায় এসেছিল। ২০১১ সালের ১১ মে রায় প্রদান করে সুপ্রিম কোর্ট মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টকে তিন মাসের মধ্যে মুন সিনেমা হলের সম্পত্তি ফিরিয়ে দেওয়ার আদেশ দিয়েছিলেন।

কিন্তু রায় বাস্তবায়ন না হওয়ায় ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসে সিনেমা হলের মালিক মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টসহ সরকারের সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন করেন। এর ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে আপিল বিভাগ ওই সম্পত্তি অভিজ্ঞ ও নিরপেক্ষ এক প্রকৌশলীকে দিয়ে জমি ও স্থাপনার মূল্য নির্ধারণ করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেন। অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীকে দিয়ে এই মূল্য নির্ধারণ করতে বলা হয়।

সম্পত্তির মূল্য প্রায় ১০০ কোটি টাকা নির্ধারণ করে পরে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন জামিলুর রেজা চৌধুরী।

পুরান ঢাকার ওয়াইজঘাটে মুন সিনেমা হলের মালিক ছিল ইতালিয়ান মার্বেল ওয়ার্কস লিমিটেড নামে একটি কোম্পানি। মুক্তিযুদ্ধের সময় ওই সম্পত্তি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। পরে ওই সম্পত্তি মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের অধীনে ন্যস্ত করা হয়। ইতালিয়ান মার্বেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাকসুদুল আলম এই সম্পত্তির মালিকানা দাবি করেন।

জিয়াউর রহমানের শাসনামলে ঘোষিত এক সামরিক ফরমানে বলা হয় সরকার কোনো সম্পত্তি পরিত্যক্ত ঘোষণা করলে তা আদালতে চ্যালেঞ্জ করা যাবে না। ইতালিয়ান মার্বেল ২০০০ সালে হাইকোর্টে ওই ফরমানসহ সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী চ্যালেঞ্জ করে। ২০০৫ সালের আগস্ট মাসে হাইকোর্ট রায় দেন। মোশতাক, সায়েম ও জিয়ার ক্ষমতাগ্রহণ সংবিধানপরিপন্থী ঘোষণা করা হয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয় ২০১০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি। আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন।

Comments

The Daily Star  | English

What we expect from a people-centric health budget

We must strongly advocate for a people-centric health budget.

8h ago