‘গায়েবি মামলায়’ ১৬ বছরের কিশোর কারাগারে

পুলিশের অভিযোগ যে, নিজেদের বাড়িতে বসেই নাকি পরিবারের সদস্যসহ বেশ কিছু মানুষ গোপন বৈঠক করে নাশকতার পরিকল্পনা করছিলেন। গত ১৯ সেপ্টেম্বর এই অভিযোগে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলা থেকে ১৬ বছর বয়সী এক কিশোর তার বাবা ও চাচাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু প্রতিবেশীরা বলছেন, এ ধরনের কোনো গোপন বৈঠকের কথা তারা জানেন না।

তাদের বিরুদ্ধে হওয়া মামলায় যে পাঁচ জনকে সাক্ষী হিসেবে রাখা হয়েছে তাদের মধ্যে দুজনের সঙ্গে দ্য ডেইলি স্টারের কথা হয়েছে। তারা বলেছেন, তাদেরকে সাক্ষী করা হবে আদৌ তারা সেটা জানতেন না। পুলিশ তাদের এ ব্যাপারে কিছুই জানায়নি। তারা দুজনেই বলেছেন, মামলায় যে ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে সে ব্যাপারে তারা কিছুই জানেন না। এমনকি ঘটনার সময় তারা সেখানে উপস্থিতও ছিলেন না।

গ্রেপ্তার মামুনুর রশিদের মা জানান, তার ছেলের বয়স ১৬ বছর তিন মাস। কিন্তু মামলায় পুলিশ তার বয়স ১৯ বছর দেখিয়েছে। গ্রেপ্তারের পর থেকে গত ২৬ দিন সে দিনাজপুর কারাগারে বন্দী রয়েছে।

বীরগঞ্জের ভোগডোমা গ্রামের ওই পরিবারের অন্য সদস্য ও স্থানীয়রা বলেন, ১৯ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে ৩টার দিকে পুলিশ এসে মামুন, তার বাবা আব্দুল মজিদ (৪৫) ও চাচা আব্দুল লতিফকে (৪০) ধরে নিয়ে যায়।

বীরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক আমজাদ আলী মন্ডল মামলার অভিযোগে বলেন, ১৯ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১২টার দিকে ৭০-৮০ জন লোক মজিদ মিয়ার বাড়িতে গোপন বৈঠকে নাশকতার করছিলেন। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে অভিযান চালিয়ে মামুন, মজিদ ও লতিফকে গ্রেপ্তার করে। তবে অন্যরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় বলে মামলার অভিযোগে উল্লেখ করেছেন তিনি। মামলায় ৫৫ জনের নাম উল্লেখ করে মোট ৮৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলায় পুলিশ বলেছে, অভিযানের সময় মামুনের কাছ থেকে শপিং ব্যাগে মোড়ানো অবস্থায় পাঁচটি হাতবোমা ও ৫০০ গ্রাম গানপাউডার জব্দ করা হয়েছে।

তবে পুলিশ এসব বললেও ভুক্তভোগী পরিবার ও গ্রামবাসীর বক্তব্য সম্পূর্ণ ভিন্ন।

মাজিদের স্ত্রী মালেকা বেগম বলেন, সেই রাতে বীরগঞ্জ থানার সাত জন পুলিশ তার বাড়ি ঘেরাও করে। বাড়িতে ঢুকে তারা তল্লাশি চালিয়ে কিছু পায়নি। এর পরই তারা তার স্বামী সন্তানসহ তিন জনকে ধরে নিয়ে যায়। মালেকা বেগমের দাবি, তার স্বামী-সন্তান সম্পূর্ণ নির্দোষ। তার পরিবারের কেউ রাজনীতি করেন না বলেও তিনি দাবি করেছেন।

লতিফের স্ত্রী রুবিনা খাতুনও প্রায় একই বক্তব্য দিয়েছেন। আর তাদের প্রতিবেশী আজহার আলী শামসুজ্জোহা বলেন, সেই রাতে মজিদের বাড়িতে কোনো গোপন বৈঠক হয়নি। নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করলেই এই সত্য বের হয়ে আসবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English
The bold move to a flexible exchange rate regime

The bold move to a flexible exchange rate regime

With the central bank agreeing to go for a flexible exchange rate, the IMF will disburse the fourth and fifth instalments in June this year.

9h ago