মোংলায় সমাহিত হলেন ফাদার মারিনো রিগন

মুক্তিযুদ্ধের বন্ধু সম্মাননায় ভূষিত ফাদার মারিনো রিগনকে আজ রোববার বাগেরহাটের মোংলায় সমাহিত করা হয়েছে। গত বছর অক্টোবরে তিনি ইতালিতে মারা যান। মৃত্যুর আগে মোংলায় সমাহিত হওয়ার ব্যাপারে ইচ্ছাপোষণ করেছিলেন তিনি।
মুক্তিযোদ্ধা ফাদার মারিনো রিগন। ছবি: সংগৃহীত

মুক্তিযুদ্ধের বন্ধু সম্মাননায় ভূষিত ফাদার মারিনো রিগনকে আজ রোববার বাগেরহাটের মোংলায় সমাহিত করা হয়েছে। গত বছর অক্টোবরে তিনি ইতালিতে মারা যান। মৃত্যুর আগে মোংলায় সমাহিত হওয়ার ব্যাপারে ইচ্ছাপোষণ করেছিলেন তিনি।

ইতালি থেকে ফাদার মারিনো রিগনের মরদেহ সঙ্গে করে নিয়ে আসা মিলানের বাংলাদেশ দূতাবাসের কনসাল জেনারেল ইকবাল আহম্মেদ দ্য ডেইলি স্টার অনলাইনকে জানান, দুপুর ২টার দিকে তাকে মোংলার শেলাবুনিয়ার ক্যাথলিক মিশন চার্চে সমাহিত করা হয়। এর আগে, চার্চের সামনে তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।

ইকবাল আহম্মেদ জানান, প্রথমে রিগনের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় মোংলা উপজেলা পরিষদ মাঠে। সেখানে সর্বস্তরের মানুষ শেষ শ্রদ্ধা জানান বাংলাদেশের অকৃত্রিম এই বন্ধুকে। এর পর, মরদেহ তার প্রতিষ্ঠিত সেন্ট পলস উচ্চ বিদ্যালয় ও সেন্ট পলস হাসপাতালে মাঠে নিয়ে গেলে, সেখানেও শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ আগতরা তার কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

তিনি বলেন, এর আগে মিলানের মেয়রের কাছে ফাদার মারিনো রিগনের মরদেহ হস্তান্তর করেন তার পরিবার। গত ১৮ অক্টোবর মিলানের মেয়রের কাছ থেকে মরদেহের দায়ভার গ্রহণ করে বাংলাদেশ দূতাবাস। এর পর গত শুক্রবার সকালে টার্কিস এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে ইতালি থেকে তার মরদেহ ঢাকায় আনা হয়। পুরোটা সময় সঙ্গে ছিলেন রিগনের ভাগনে মারিনো তাবেস্ত্রো।

মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদান রাখায় ইতালিতে জন্ম নেওয়া ফাদার মারিনো রিগনকে ২০০৯ সালে ‘মুক্তিযুদ্ধের বন্ধু সম্মাননা’ পদক এবং সম্মানসূচক নাগরিকত্ব দেয় বাংলাদেশ সরকার। তিনি কেবল অসুস্থ এবং যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের শুশ্রূষাই করেননি, সরাসরি যুদ্ধেও অংশ নিয়েছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধে তার অনন্য সাধারণ অবদানের জন্য বাঙালি জাতির শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার নিদর্শনস্বরূপ ২০১২ সালে সরকার তাকে মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা দেয়।

ফাদার মারিনো রিগন ৫ জানুয়ারি ১৯২৫ সালে ইতালির ভেনিসের অদূরে ভিল্লাভেরলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ২৮ বছর বয়সে খ্রিষ্টধর্ম প্রচারের জন্য ১৯৫৩ সালের ৭ জানুয়ারি তিনি ঢাকায় আসেন। গত বছরের ২০ অক্টোবর ইতালির ভিচেঞ্চায় ৯২ বছর বয়সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

তিনি এ দেশের দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষের দারিদ্র্য বিমোচন, শিক্ষার প্রসার, চিকিৎসা সেবা ও দুস্থ নারীদের উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখার পাশাপাশি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, লালন শাহ ও কবি জসীমউদ্দীনের বেশ কিছু কবিতা ও গান ইতালীয় ভাষায় অনুবাদ করেছেন।

Comments

The Daily Star  | English

'Can't wait to be home'

Says crewmember of MV Abdullah; vessel likely to reach Kutubdia tomorrow night

44m ago