যে তিন প্রশ্নের উত্তর জরুরী বাংলাদেশের

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ বাংলাদেশ অনায়াসেই জিতবে, প্রত্যাশা অন্তত এমনই। গত ১১ ম্যাচ যাদের একটানা হারানো গেছে তাদের নিয়ে কীইবা আতঙ্ক থাকতে পারে। খেলাটা ক্রিকেট বলেই মুখফুটে আসলে ওরকমটা বলার সুযোগ নেই। তবে বিশ্বকাপ সামনে রেখে এই সিরিজেই কিছু প্রশ্নের সমাধান বের না করলে তো চলেও না। ভাল করে তলিয়ে দেখলে জিম্বাবুয়ে সিরিজ জেতার চেয়েও এসব প্রশ্নের উত্তর বের করা বেশি জরুরী।
Steve Rhodes & Mashrafee
ফাইল ছবি: বিসিবি

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ বাংলাদেশ অনায়াসেই জিতবে, প্রত্যাশা অন্তত এমনই। গত ১১ ম্যাচ যাদের একটানা হারানো গেছে তাদের নিয়ে কীইবা আতঙ্ক থাকতে পারে। খেলাটা ক্রিকেট বলেই মুখফুটে আসলে ওরকমটা বলার সুযোগ নেই। তবে বিশ্বকাপ সামনে রেখে এই সিরিজেই কিছু প্রশ্নের সমাধান বের না করলে তো চলেও না। ভাল করে তলিয়ে দেখলে জিম্বাবুয়ে সিরিজ জেতার চেয়েও এসব প্রশ্নের উত্তর বের করা বেশি জরুরী।

Liton Das & IMRUL KAYES
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

ওপেনিংয়ে তামিমের সঙ্গী কে?

তিন ফরম্যাটেই দেশের সর্বোচ্চ রান তামিম ইকবালের। তর্কাতীতভাবেই দেশসেরা ওপেনার তিনি। তার জায়গা নিয়ে কোন সংশয়ই তাই নেই। প্রশ্ন হলো কে হচ্ছে তামিমের সঙ্গী। কদিন আগেও উত্তরটা অনেক কঠিন হলেও এখন অনেক সহজ হয়ে এসেছে। মূল লড়াইয়ে আপাতত দুজন। লিটন দাস ও ইমরুল কায়েস। সর্বশেষ দুই ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি এসেছে দুজনের ব্যাট থেকে। তাতে স্বস্তির বারতা বয়ে এনেছেন তারা। তামিম ফিরলে একজনকে নিশ্চিতভাবেই সরতে হবে ওপেন থেকে। সাকিব ফিরলে জায়গা হবে না ওয়ানডাউনেও। তাই জিম্বাবুয়ে সিরিজের বাকি দুই ম্যাচের পারফরম্যান্স থেকেই একটা সিদ্ধান্তের দিকে আগাতে হবে বাংলাদেশকে। ঠিক করতে হবে প্রথম, দ্বিতীয় পছন্দ।

সাত নম্বরে কে?

এই মুহূর্তে ওপেনিং থেকেও দলের মূল চিন্তার জায়গা সাত নম্বর। সাত নম্বরে এখনো পর্যন্ত বিশেষজ্ঞ কেউ নেই। ওই পজিশনের ব্যাটসম্যানকে তুলতে হয় স্লগওভারের ঝড়। ভরসার কেউ না পেয়ে এশিয়া কাপে মাহমুদউল্লাহর মতো মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানকে খেলানো হয়েছে এই জায়গায়। ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে ঠেকার কাজ চালিয়ে দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু বিশ্বকাপে ভাবতে হবে ভিন্নভাবে।

জিম্বাবুয়ে সিরিজের প্রথম ম্যাচে সাত নম্বরে খেলে রান পেয়েছেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। এই পেস অলরাউন্ডারকে নিয়ে ভীষণ আশাবাদী অধিনায়ক। যদিও তার মূল কাজ বোলিংয়ে ছিল না আহামরি কিছু। ব্যাট হাতে শুরুটাও ছিল খুব নড়বড়ে। সাত নম্বরের বিবেচনায় এশিয়া কাপ থেকেই দলের সঙ্গে আছেন আরিফুল হক। এশিয়া কাপে সুযোগ পাননি কোন ম্যাচেই। জিম্বাবুয়ে সিরিজের প্রথম ম্যাচেও থেকেছেন বাইরে। সাইফুদ্দিনের আগেই সুযোগ তার প্রাপ্য ছিল। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরার পর সাত নম্বরের বিবেচনায় থাকবেন সাব্বির রহমান। এমনকি এশিয়া কাপে চলনসই বোলিং দিয়ে এই জায়গায় দাবিটা জানিয়ে রেখেছেন সৌম্য সরকারও। সামনের দুই সিরিজেই এই প্রশ্নের একটা জবাব চাই বাংলাদেশের। কোন পেস অলরাউন্ডার নাকি একজন হার্ড হিটার ব্যাটসম্যানকে খেলানো হবে সাতে, এই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার খুব বেশি সময় হাতে নেই বাংলাদেশের। কারণ বিশ্বকাপ হুট করে কাউকে কোন পজিশনে নামিয়ে দেওয়া যাবে না। তার জন্য চাই মানিয়ে নেওয়ার সময়।

Saifuddin
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

পেস অলরাউন্ডার কে?

বিশ্বকাপে ইংলিশ কন্ডিশনে ভালো করতে দরকার একজন কার্যকর পেস অলরাউন্ডারের। নিয়মিত তিন পেসারের সঙ্গে বাড়তি একজন পেসার অধিনায়কের কাজটা অনেকটাই সহজ করে দিতে পারেন।  একাদশে থাকা তিন পেসারের সঙ্গে কয়েক ওভার কাউকে হাত ঘোরাতে হবে। কিন্তু ব্যাটিং শক্তি আবার দুর্বল করা যাবে না। স্পিন বিভাগে যেমন ভারসাম্য এনে দেন সাকিব আল হাসান, ঠিক তেমনি পেস বিভাগে দরকার ভারসাম্য। তবে এই জায়গায় এখনো সমাধানের কাছেও নেই দল। জিম্বাবুয়ে সিরিজে সাইফুদ্দিনকে নিয়ে অনেক আশা অধিনায়কের, কোচ তাকে বলছেন জেনুইন অলরাউন্ডার। কিন্তু বল হাতে এখনো আশা জাগানিয়া কিছু করতে পারেননি তিনি। প্রথম ওয়ানডেতে নড়বড়ে শুরুর পর ফিফটি পেয়েছেন, মূল কাজ বল হাতে ছিলেন একেবারে সাদামাটা। এই পেসারের আছে স্লগ ওভারে মার খাওয়ার বদনামও। চলতি বছর আবুল হাসান রাজুকে দিয়ে এই জায়গা পূরণের চেষ্টাও করা হয়েছে, ফল মেলেনি। বিকল্প হিসেবে দলে আছেন আরিফুল হক। ওয়ানডে অভিষেকের আশায় এশিয়া কাপ থেকে বেঞ্চ গরম করা এই অলরাউন্ডারের বোলিংয়ের উপর আবার আস্থা নেই অধিনায়কদের। যতগুলো টি-টোয়েন্টি খেলেছেন তাতে মেলেনি বল করার তেমন সুযোগ। ব্যাট হাতে তাদের চেয়ে অনেকখানি এগিয়ে থাকা সৌম্য এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে বল হাতে মোড় ঘোরানো এক স্পেল করেছিলেন। তবু তাকে ঠিক অলরাউন্ডার বিবেচনা করছে না দল। সব মিলিয়ে পেস অলরাউন্ডার প্রশ্নে এখনো মাথা চুলকানোর অবস্থা কোচ-অধিনায়কের। জিম্বাবুয়ে আর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে তাই এই কঠিন প্রশ্নের সমাধান বের করাও দরকার বাংলাদেশের। 

Comments

The Daily Star  | English

Abu Sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

12h ago