পাওয়ার হিটিং শুধু শারীরিক নয়, এটা মানসিকতারও ব্যাপার: উড

ইংলিশ পাওয়ার-হিটিং কোচ জুলিয়ান উড বাংলাদেশ ক্রিকেটের কাছে অপরিচিত নন। এর আগে তিনি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) দল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স এবং সিলেট সানরাইজার্সের কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে এবারই প্রথম তিনি জাতীয় দলের সাথে কাজ করতে যাচ্ছেন। আগামী ১০ আগস্ট থেকে ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন সপ্তাহের জন্য পাওয়ার-হিটিং ক্যাম্পে তিনি জাতীয় দলের সঙ্গে থাকবেন উড। দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় এই কোচ আসন্ন ক্যাম্প নিয়ে তার প্রত্যাশা নিয়ে কথা বলেছেন।
আপনি কি বাংলাদেশে ক্যাম্প নিয়ে উচ্ছ্বসিত?
জুলিয়ান উড: হ্যাঁ, একদমই। আমি ভেবেছিলাম এটা আরও আগেই আয়োজিত হবে। আমি দুবার বিপিএলে কাজ করেছি এবং তখন থেকেই এ বিষয়ে কথা হয়েছিল কিন্তু কিছুই চূড়ান্ত হয়নি। শেষ পর্যন্ত কাজটা শুরু হতে পেরে ভালো লাগছে।
বিসিবির এখন আপনাকে ডাকার কারণ কি?
জুলিয়ান: আমার মনে হয় খেলার বর্তমান পরিস্থিতি দেখলে বোঝা যায় যে অস্ট্রেলিয়া, ভারত, ইংল্যান্ডের মতো বড় দলগুলো সাদা বলের ক্রিকেটে এগিয়ে যাচ্ছে। অন্যান্য দল কিছুটা পিছিয়ে পড়তে শুরু করেছে। এজন্যই মনে হয় তারা বুঝতে পেরেছে যে তাদের এ বিষয়ে কিছু করা দরকার।
তানজিদ হাসান তামিমের মতো খেলোয়াড়, যাকে একজন সহজাত ছক্কা হিটার মনে হয়, তার সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কী?
জুলিয়ান: হ্যাঁ, তানজিদকে সহজাত মনে হয়। আমার মনে হয় তারা ঠিক পথে আছে, ঠিক কাজ করছে এবং নিশ্চিতভাবেই এমন আরও খেলোয়াড় আছে যাদের এই ক্ষমতা আছে এবং সে তাদের মধ্যে একজন। আমার মনে হয় খেলার বর্তমান গতিপ্রকৃতি অনুযায়ী, খেলোয়াড়দের তাদের খেলাকে বিকশিত করার একটি নির্দিষ্ট উপায় আছে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে একটি বৈশ্বিক স্ট্রাইক-রেট স্ট্যান্ডার্ড আছে, যার কারণে খেলোয়াড়দের অন্যান্য দলের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে দক্ষতা বাড়াতে এবং বিকশিত হতে হয়।
বর্তমানে আপনি শ্রীলঙ্কায় এক সপ্তাহব্যাপী একটি ক্যাম্প পরিচালনা করছেন। আপনি কি মনে করেন বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কার খেলোয়াড়দের পাওয়ার-হিটিংয়ের জন্য কৌশলে মৌলিক পরিবর্তন দরকার নাকি ছোটখাটো পরিবর্তন যথেষ্ট?
জুলিয়ান: শারীরিক আকৃতি একটি বিষয়। বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কা উভয় দলের খেলোয়াড়দের দিকে তাকালে দেখা যায় তারা খুব বেশি বড় আকৃতির নয়। যেখানে ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান, ইংলিশ খেলোয়াড়রা বড় এবং শক্তিশালী। বাংলাদেশি বা লঙ্কান খেলোয়াড়দের কিছুটা ভিন্নভাবে কাজ করতে হবে। যেখানে ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান বা ইংলিশ ব্যাটাররা মূলত শক্তির উপর নির্ভর করে। যদিও একজন খেলোয়াড়ের খেলায় শক্তি যোগ করা যায়, তবে যারা ছোট আকারের খেলোয়াড়, মূলত তাদের ছন্দ এবং টাইমিং সেন্স এবং ধারাবাহিকতা গুরুত্বপূর্ণ। এভাবেই ছোট আকৃতির খেলোয়াড়রা বড় ছক্কা মারতে পারে।
আপনি সম্ভবত কুশল মেন্ডিসের মতো কাউকে বোঝাতে চাইছেন। তার রহস্য কী?
জুলিয়ান: তার অসাধারণ হ্যান্ড-আই কোঅর্ডিনেশন আছে। আপনি যদি এটিকে ভালো দক্ষতার সঙ্গে একত্রিত করেন, তাহলে তার যথেষ্ট শক্তি আছে, কারণ সে ছক্কা মারে। এটি তার গতিবিধির ধারাবাহিকতা, তার গতিবিধির ছন্দ এবং টাইমিং সেন্স। শুধু শক্তি নিয়ে নয়, তার চমৎকার দক্ষতার স্তরও আছে। এবং আমি অনেক বাংলাদেশি খেলোয়াড়কে এভাবেই দেখি। শক্তি আপনি যোগ করতে পারবেন।
আপনি আসলে আপনার খেলায় শক্তি যোগ করার জন্য কীভাবে কাজ করেন?
জুলিয়ান: শক্তি এবং কন্ডিশনিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমি ভারী ব্যাট দিয়ে প্রচুর ওভারলোড প্রশিক্ষণ দেব। আমি যা করি তার সবই খুব কার্যকরী। এটা শুধু জিমে গিয়ে প্রচুর ওজন তোলা নয়। এটা আসলে পেশী ব্যবহার করা এবং বল মারার সময় আপনার যে মুভমেন্ট হয় সেটা আবার তৈরি করা।
ক্যাম্পের পর আপনি কী ধরনের পরিবর্তন দেখতে চান?
জুলিয়ান: আমি সম্ভবত বিশ্বকাপের দিকে নজর রাখব কারণ সময় বাড়ার সঙ্গে তারা এই পদ্ধতিগুলোর সঙ্গে পরিচিত হবে। মানসিকতা মূল বিষয়। এটা শুধু শারীরিক বিষয় নয়, এটা মানসিকতারও ব্যাপার। পাওয়ার-হিটিংয়ের ক্ষেত্রে, খেলোয়াড়দের সেই বিশ্বাস থাকতে হবে এবং যদি আপনি তা করতে পারেন।
Comments