অস্ট্রেলিয়ার মাঠে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে চমকে দিল জিম্বাবুয়ে
রিভার্ড এনগারাভা, ভিক্টর নিয়াউচি, ব্রেড ইভান্সদের পেসে অস্ট্রেলিয়ার টপ অর্ডার নাড়িয়ে দেওয়ার পর জ্বলে উঠলেন রায়ান বার্ল। এই লেগ স্পিনার দারুণ বোলিং কাবু করে দেন অজিদের। ডেভিড ওয়ার্নার একা লড়েও পরে পারেননি। দেড়শোর আগেই গুটিয়ে যায় স্বাগতিকরা। রান তাড়ায় টাডিওয়ানশে মারুমানির শুরুর পর কাজটা সারলেন অধিনায়ক রেজিস চাকাভা। অস্ট্রেলিয়াকে তাদের দেশে ওয়ানডে ম্যাচে হারিয়ে দিয়ে চমক উপহার দিল জিম্বাবুয়ে।
শনিবার টাউন্সভিলে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়াকে ৩ উইকেটে হারিয়ে দিয়েছে জিম্বাবুয়ে। আগে ব্যাট করা স্বাগতিকরা গুটিয়ে যায় মাত্র ১৪১ রানে। ১১ ওভার বাকি রেখে ওই রান টপকে ইতিহাস গড়ল জিম্বাবুয়ে।
অজিদের ১৪১ রানের ৯৪ রানই এসেছে ওয়ার্নারের ব্যাটে। তাদের ধসিয়ে দিতে মাত্র ১০ রানে ৫ উইকেট নিয়ে নায়ক বার্ল। রান তাড়ায় মারুমানির ৪৭ বলে ৩৫ রানের পর চাকাভার ৭২ বলে ৩৭ স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছে দেয় জিম্বাবুয়েকে।
অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে এই প্রথম অস্ট্রেলিয়াকে হারাতে পারল তারা। এই জয়ে ওয়ানডে সুপার লিগে পেল মূল্যবান পয়েন্ট।
প্রথম দুই ম্যাচ হেরে সিরিজ আগেই হাতছাড়া হয়েছে জিম্বাবুয়ের। অস্ট্রেলিয়ার মাঠে গিয়ে সিরিজ জেতার প্রত্যাশাও হয়ত বাড়াবাড়ি হতো। তবে শেষ ম্যাচে জিম্বাবুয়ে যা করল তাতে বিশ্ব ক্রিকেটে একটা সাড়া নিশ্চিতভাবেই পড়বে। গত মাসে দেশের মাঠে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ জেতার পর ভারতের বিপক্ষেও এক ম্যাচে তৈরি করেছিল সম্ভাবনা।
এক সময় বিশ্ব ক্রিকেটের সমীহ জাগানো ক্রিকেট শক্তি জিম্বাবুয়ে মাঝে হারিয়ে গিয়েছিল দৃশ্যপট থেকে। ২০১৯ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপেও খেলতে পারেনি তারা। তবে গত কয়েকমাসে ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস দিচ্ছে আফ্রিকার দলটি।
১৪২ রানের লক্ষ্য নেমে টাকুডওয়ানশে কাইটানো ও মারুমানি আনেন ভালো শুরু। নবম ওভারে দলের ৩৮ রানে জশ হ্যাজেলউডের শিকার হয়ে বিদায় নেন কাইটানো। এরপর দ্রুত অভিজ্ঞ তিন ব্যাটারকা হারিয়ে ফেলে সফরকারীরা।
একে একে ফিরে যান ওয়েসলে মাধভেরে (২), শন উইলিয়ামস (০) ও সিকান্দার রাজা (৮)। কিন্তু আরেক প্রান্তে দলকে আলগে রাখছিলেন মারুমানি। থিতু হওয়া এই ব্যাটার বড় শটের নেশায় ক্যাচ তুলে দেন ক্যামেরন গ্রিনের বলে ৪৭ বলে ৩৫ করা মারুমানির আউটের সময় জিম্বাবুয়ের পুঁজি দাঁড়ায় ৭৭।
এরপর টনি মনোইউঙ্গাকে নিয়ে ৩৮ রানের ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ জুটি পান চাকাভা। অ্যাস্টন অ্যাগারের বলে মনোইউঙ্গা আউট হয়ে গেলেও বার্লকে নিয়ে কাজটা সেরে ফেলেন চাকাভা।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে যাওয়া অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের একাই লড়েছেন ওয়ার্নার। পুরো ইনিংসে দুই অঙ্কের ঘরে ওয়ার্নার ছাড়া যেতে পেরেছেন আর কেবল গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ওয়ার্নারের রান যেখানে ৯৪, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ম্যাক্সওয়েল করেন ১৯। এতে বোঝা যাচ্ছে কতটা ভোগান্তিতে পড়েছিল রেকর্ড চারবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
পঞ্চম ওভারে ফিঞ্চকে বিদায় করে প্রথম উইকেট নেন এনগারাভা। নিয়াউচি তুলে নেন স্মিথকে। আলেক্স কেয়ারিকে তুলে নেন ইভান্স। ৩১ রানে ৩ উইকেট হারানো অজিদের টানছিলেন ওয়ার্নার। তাকে সঙ্গ দিতে পারছিলেন না কেউ। মার্কাস স্টয়নিসও মাত্র ৩ রান করে শিকার হন ইভান্সের। ক্যামেরন গ্রিনকে তুলে নেন উইলিয়ামস।
এরপর শুরু বার্লের ঝলক। বাকি ৫ উইকেট একাই তুলে নেন তিনি। দলকে টানা ওয়ার্নারকেও ফেরান বার্ল। আউট করেন বিপদজনক ম্যাক্সওয়েলকে। ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে সব আলো কেড়ে নেন এই লেগ স্পিনার।
Comments