দুর্দান্ত রান তাড়ায় আফগানিস্তানকে হারিয়ে শ্রীলঙ্কার প্রতিশোধ

ওপেনিংয়ে সুর বেঁধে দিলেন দুই ওপেনার পাথুম নিসানকা ও কুসল মেন্ডিস। দানুস্কা গুনাথিলাকা ও ভানুকা রাজাপাকসে পরে খেললেন কার্যকর ইনিংস।
ছবি: টুইটার

তরুণ ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে চ্যালেঞ্জিং পুঁজি পেল আফগানিস্তান। শেষ চার ওভারে যদিও দলটির রানের গতিতে লাগাম দিতে পেরেছিলেন শ্রীলঙ্কার বোলাররা। এরপর তাদের ব্যাটাররা রাখলেন সম্মিলিত অবদান। ওপেনিংয়ে সুর বেঁধে দিলেন দুই ওপেনার পাথুম নিসানকা ও কুসল মেন্ডিস। দানুস্কা গুনাথিলাকা ও ভানুকা রাজাপাকসে পরে খেললেন কার্যকর ইনিংস। ফলে দুর্দান্ত রান তাড়ায় জিতে প্রতিশোধ নিল লঙ্কানরা।

শনিবার শারজাহতে এশিয়া কাপের সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচে ৪ উইকেটে জিতেছে লঙ্কানরা। গ্রুপ পর্বে দুই দলের আগের দেখায় তাদেরকে গুঁড়িয়ে ৮ উইকেটে জিতেছিল আফগানরা।

রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৭৫ রান তোলে আফগানিস্তান। জবাবে ৫ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটে ১৭৯ রান করে জয় নিশ্চিত করে শ্রীলঙ্কা।

আফগানিস্তানের ইনিংসের কেন্দ্রে ছিলেন মারকাটারি ব্যাটিংয়ের জন্য পরিচিত গুরবাজ। মাত্র ২২ বলে ফিফটি পূরণের পর সেঞ্চুরির আশাও জাগিয়েছিলেন তিনি। ৪৫ বলে ৮৪ রান আসে তার ব্যাট থেকে। তিনি মারেন ৪ চার ও ৬ ছক্কা। তার ইনিংসের ইতি ঘটে ১৬তম ওভারে। পেসার আসিথা ফার্নান্দোকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে টপ এজ হয়ে মিডউইকেটে ভানিন্দু হাসারাঙ্গার তালুবন্দি হন তিনি। গুরবাজের বিদায়ের পর রানের গতি কমে যায় দলটির। শেষ ৪ ওভারে আরও ৪ উইকেট হারিয়ে তারা যোগ করতে পারে ৩০ রান।

আরেক ওপেনার হজরতউল্লাহ জাজাইয়ের সঙ্গে উদ্বোধনী জুটিতে ২৯ বলে ৪৬ রান আনেন গুরবাজ। দ্বিতীয় উইকেটে ইব্রাহিম জাদরানের সঙ্গে তিনি যোগ করেন ৯৩ রান। সেজন্য লাগে কেবল ৬৪ বল। এরপর অবশ্য দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ান লঙ্কান বোলাররা।

ইব্রাহিম ৪০ রান করেন ৩৮ বল মোকাবিলায়। এছাড়া, জাজাই ১৬ বলে ১৩ ও নাজিবউল্লাহ জাদরান ১০ বলে ১৭ রান করেন। শ্রীলঙ্কার পক্ষে সবচেয়ে সফল ছিলেন বাঁহাতি পেসার দিলশান মাদুশাঙ্কা। তিনি ২ উইকেট নেন ৩৭ রান খরচায়। তবে ডেথ ওভারে স্পিনার মহেশ থিকশানার অবদান ছিল গুরুত্বপূর্ণ। ১৭তম ওভারে ৫ ও ১৯তম ওভারে ২ রান দেন তিনি। সব মিলিয়ে ২৯ রানের বিনিময়ে তিনি পান ১ উইকেট।

লক্ষ্য তাড়ায় উড়ন্ত সূচনা আনেন নিসানকা ও কুসল। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে আফগানরা ১ উইকেট হারিয়ে যেখানে তুলেছিল ৪৯ রান, সেখানে লঙ্কানরা বিনা উইকেটে করে ৫৭ রান। আগ্রাসী ঢঙে থাকা কুসলকে বিদায় করে জুটি ভাঙেন নাভিন উল হক। ১৯ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় ৩৬ রান করেন তিনি। নিসানকা ফেরেন ২৮ বলে ৩৫ রানে। তার উইকেট শিকার করেন অফ স্পিনার মুজিব উর রহমান।

ধুঁকতে থাকা চারিথ আসালাঙ্কাকে টিকতে দেননি আফগান অধিনায়ক মোহাম্মদ নবি। লঙ্কান দলনেতা দাসুন শানাকাও দ্রুত মাঠ ছাড়েন। ফলে ১৫তম ওভারে ১১৯ রানে ৪ উইকেট হারায় দলটি। তবে গুনাথিলাকা অন্যপ্রান্তে মারছিলেন। ছয়ে নামা রাজাপাকসে তাকে ছাড়িয়েও আরও বিস্ফোরক হয়ে ওঠেন।

গুনাথিলাকা ২০ বলে ৩৩ করেন সমান ২ চার ও ছক্কায়। ২১ রানে বেঁচে যাওয়া রাজাপাকসে মাত্র ১৪ বলে ৩১ রান করেন ৪ চার ও ১ ছক্কায়। তাতে লক্ষ্য চলে আসে নাগালে। বাকিটা সারেন হাসারাঙ্গা। তিনি ৯ বলে ১৬ রানে অপরাজিত থাকেন। চার মেরে খেলা শেষ করেন চামিকা করুনারত্নে।

আফগানদের পক্ষে ২ উইকেট করে নেন মুজিব ও নাভিন। তারকা লেগ স্পিনার রশিদ খান পারেননি কাঙ্ক্ষিত পারফরম্যান্স দেখাতে। গুনাথিলাকার উইকেট নিলেও তিনি খরুচে ছিলেন। তার ৪ ওভার থেকে আসে ৩৯ রান। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে আক্রমণে গিয়েই কুসলের তাণ্ডবে ২ ছক্কায় ১৭ রান হজম করেন তিনি।

Comments