মিডিয়ার কারণে সাকিবও সিদ্ধান্ত নিতে ভয় পাচ্ছে: সুজন
অনুশীলনে খেলোয়াড়দের সব কিছুই ঠিক ঠাক থাকে, কিন্তু ম্যাচে নামলেই হয়ে যায় গড়বড়। এর কারণ হিসেবে সোশ্যাল মিডিয়া ও গণমাধ্যমের চাপকে দায় দিয়েছেন টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন। তিনি জানান, মিডিয়ার চাপে সাকিব আল হাসানও নাকি এখন সিদ্ধান্ত নিতে ভয় পাচ্ছেন।
সম্প্রতি বাংলাদেশের ক্রিকেটের চলছে খারাপ সময়। সব ফরম্যাটেই সিরিজ হারের তেতো স্বাদের মধ্যে এশিয়া কাপেও দলের ভরাডুবি হয়েছে। গ্রুপ পর্ব থেকে সবার আগে বিদায় নিয়ে দেশে ফিরে সাকিব আল হাসানের দল।
টি-টোয়েন্টিতে দল নির্বাচন, খেলার ধরণ নিয়ে অনেকদিন ধরেই সমালোচনায় বিদ্ধ বাংলাদেশ। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে টেনেটুনে প্রথম রাউন্ড পার করার পর সুপার টুয়েলভে সব ম্যাচ হারেন মাহমুদউল্লাহরা। বিশ্বকাপের পর ১০ ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ জিতেছে স্রেফ দুটিতে।
রোববার দ্য ডেইলি স্টারের নন স্টাইকার্স এন্ড অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে সুজন দলের অবস্থার জন্য গণমাধ্যমকে দায় দিয়েছেন, 'এখন এমনভাবে কথা ছড়িয়ে যায় খেলোয়াড়রা পর্যন্ত সাক্ষাতকার দিতে ভয় পায়। যে ভাই একটা কথা বলব, এমন টুইস্ট হবে ক্যারিয়ার শেষ। মনে হচ্ছে মিডিয়া তাদের ক্যারিয়ার নিয়ন্ত্রণ করছে। যেটা খুবই ভুল। তারা স্বাধীনতা নিয়ে খেলতে পারছে না। এটা ফেসবুক, ইউটিউব ও মিডিয়ার কারণে। '
সাবেক এই অধিনায়ক স্পষ্ট করে জানান মিডিয়ার চিন্তায় সাকিবও সিদ্ধান্ত নিতে নাকি এখন ভয়ে থাকেন, 'আমি সোজা কথা বলে দিলাম আজকে। সাকিবের মতো ছেলে সিদ্ধান্ত নিতে ভয় পাচ্ছে।'
তার মতে বাংলাদেশের ক্রিকেটে গণমাধ্যমের অত্যধিক নজরদারি তৈরি করছে সমস্যা, 'আমাদের মিডিয়া তো বেডরুমে চলে আসে। এটা ঠিক না ভুল? আমি বোর্ড থেকে নামি, সঙ্গে সঙ্গে একশোজন লোক ঘিরে ফেলবে। আপনি পারবেন বিরাট কোহলির সঙ্গে এভাবে কথা বলতে? রোহিত শর্মার সঙ্গে এভাবে বলতে। কোন সুযোগ নেই। আমাদের বোর্ডের কে নিয়ন্ত্রণ করবে মিডিয়াকে? মিডিয়া বোর্ডের সামনে সারাদিন দাঁড়িয়ে থাকে। কাকে নামবে, কাকে ধরে প্রশ্ন করবে।'
'আমাদের সাক্ষাতকার থেকে টিআরপি বাড়ানোর জন্য যা করছে। আমি মনে করি বাংলাদেশের ক্রিকেটের ক্ষতি করছি। আমাদের সংবেদনশীল হতে হবে। মিডিয়ার দায়িত্ব আছে।'
'আমাকে নিয়ে যা খুশি লিখুক আমি কেয়ার করি না। আমি কারোটা খাইও না, কারোটা পরিও না।'
অন্য দেশের ক্রিকেটাররা আউট হওয়ার ভয় না করে ক্রিজে গিয়েই বড় শট খেলতে পারে। সুজনের মতে বাংলাদেশের ব্যাটাররা এটা করতে পারেন না মানুষ ও গণমাধ্যমের চাপে, 'খেলোয়াড়দের দেখি তারা সাহস পায় না শট খেলতে। তারা সাহস পায় না সিদ্ধান্ত নিতে। তারা চিন্তা করে কি লিখবে জানি কালকে। ওরা বলে না কিন্তু আমি জানি। এতদিন বুঝতাম না, এখন বুঝি। অনুশীলনে সবাই তো ভাল করে। মাঠে গিয়ে কেন পারে না।'
'আমি তো বললাম। সাকিব আল হাসান, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় নাম তো সাকিবই। ও এখন সিদ্ধান্ত নিতে চিন্তা করে যে, "সুজন ভাই এটা করব কিনা। মানুষ কি বলবে? আমি যদি বল করাই এরে, এ যদি মার খায় তখন বলবে সাকিবই কেন ঝুঁকিটা নিয়েছে।" ইমরান খান কীভাবে বড় ক্রিকেটার। কারণ সে গ্যাম্বলিং। এই গ্যাম্বলিং করার সাহস তো বাংলাদেশে একটারও নাই।'
Comments