রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে সিরিজ ঘরে তুলল ভারত
শেষ ওভারে জয়ের জন্য চাই ১১ রান। ড্যানিয়েল স্যামসকে ছক্কা হাঁকিয়ে বিরাট কোহলি নিলেন বিদায়। পরের ২ বলে এলো কেবল সিঙ্গেল। ক্রিকেটীয় পরাশক্তিদের দ্বৈরথে তখন টানটান উত্তেজনা। পঞ্চম বল হার্দিক পান্ডিয়ার ব্যাটের কানায় লেগে চলে মাঠের বাইরে। হয়ে গেল ফয়সালা। রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে শেষ হাসি হাসল ভারত। অস্ট্রেলিয়াকে তিন ম্যাচের সিরিজে ২-১ ব্যবধানে হারাল তারা।
রোববার অঘোষিত ফাইনালে রূপ নেওয়া তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে ৬ উইকেটে জিতেছেন রোহিত শর্মারা। অজিদের ছুঁড়ে দেওয়া ১৮৭ রানের বড় লক্ষ্য তারা পেরিয়ে যায় মাত্র ১ বল বাকি থাকতে।
ভারতের জয়ের সুর বেঁধে দেন সূর্যকুমার যাদব। তিনি সমান ৫টি করে চার ও ছয়ে খেলেন ৩৬ বলে ৬৯ রানের বিস্ফোরক ইনিংস। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেওয়া বিরাট কোহলি ৬৩ রান। ৪৮ বলের ইনিংসে তিনি মারেন ৩ চার ও ৪ ছক্কা। হার্দিক ২ চার ও ১ ছয়ে ১৬ বলে ২৫ রান করে স্বাগতিকদের জিতিয়ে অপরাজিত থাকেন।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা অস্ট্রেলিয়ার হয়ে শুরুতেই জ্বলে ওঠেন ওপেনার ক্যামেরন গ্রিন। ঝড়ের বেগে রান আনতে থাকেন তিনি। অন্যপ্রান্তে অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চের ভূমিকা ছিল কেবল দর্শকের। তাকে বিদায় করে ভারতকে প্রথম সাফল্য এনে দেন বাঁহাতি স্পিনার অক্ষর প্যাটেল। এতে ভাঙে ২১ বলে ৪৪ রানের উদ্বোধনী জুটি।
গ্রিন ফিফটি স্পর্শ করেন ১৯ বলে। এরপর অবশ্য ক্রিজে টিকতে পারেননি। ভুবনেশ্বর কুমারের বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে ধরা পড়েন লোকেশ রাহুলের হাতে। তার ব্যাট থেকে আসে ৫২ রান। মাত্র ২১ বলের ইনিংসে ছিল ৭ চার ও ৩ ছক্কা।
অসাধারণ পাওয়ার প্লের পর খেই হারায় সফরকারীরা। স্টিভেন স্মিথ লেগ স্পিনার যুজবেন্দ্র চাহালের বলে হন স্টাম্পড। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল কাটা পড়েন রানআউটে। এরপর ইনিংস মেরামতের কাজে লাগেন জন ইংলিস ও টিম ডেভিড। পঞ্চম উইকেটে ২৪ বলে ৩১ রানের জুটি গড়েন দুজনে। কিন্তু ১৪তম ওভারে অক্ষরের জোড়া শিকারে ফের বাড়ে চাপ। ২২ বলে ২৪ করে সাজঘরের পথে ধরেন ইংলিস। অভিজ্ঞ ম্যাথু ওয়েড বিদায় নেন ফিরতি ক্যাচ দিয়ে।
১১৭ রানে ৬ উইকেট হারানো অজিরা ঘুরে দাঁড়িয়ে চ্যালেঞ্জিং পুঁজি পায় টিম ডেভিডের কল্যাণে। ২৭ বলে ৫৪ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলেন তিনি। এই সিরিজের আগে সিঙ্গাপুরের প্রতিনিধিত্ব করা ব্যাটার মারেন ২ চার ও ৪ ছক্কা। তাতে সপ্তম উইকেট জুটিতে আসে ৩৪ বলে ৬৮ রান। স্যামস অপরাজিত থাকেন ২০ বলে ২৮ রানে।
লক্ষ্য তাড়ায় ৩০ রানের মধ্যে দুই ওপেনারকে হারায় ভারত। স্যামসের বলে রাহুল আউট হন উইকেটরক্ষক ওয়েডের অসাধারণ ক্যাচে। অধিনায়ক রোহিতকে ডানা মেলতে দেননি প্যাট কামিন্স। দমে না গিয়ে উল্টো পাল্টা আক্রমণ শুরু করেন সূর্যকুমার। অন্যপ্রান্তে কোহলি করেন দায়িত্বশীল ব্যাটিং।
তৃতীয় উইকেটে আসে ৬২ বলে ১০৪ রানের জুটি। ২৯ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন সূর্যকুমার। বড় শট খেলতে গিয়ে লং-অনে ফিঞ্চের হাতে ধরা পড়লে থামে তার আগ্রাসন। এরপর কোহলি ও পান্ডিয়া মিলে ভারতকে নিয়ে যান জয়ের কাছে। তারা গড়েন ৩২ বলে ৪৮ রানের ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ জুটি। কোহলি ফিরলেও ম্যাচ শেষ করে মাঠ ছাড়েন হার্দিক।
Comments