ইংল্যান্ডের মুঠোয় থাকা ম্যাচ কেড়ে নিয়ে জিতল পাকিস্তান

রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে জিতে সিরিজে সমতায় ফিরল বাবর আজমের দল।
ছবি: পিসিবি

১০ বলে দরকার মাত্র ৫ রান। হাতে ৩ উইকেট। স্ট্রাইকে দারুণ ব্যাট করতে থাকা লিয়াম ডসন। অবধারিতভাবে তখন জয়ের পাল্লা ভারী ইংল্যান্ডের দিকে। কিন্তু পাকিস্তানের গায়ে তো 'আনপ্রেডিক্টেবল' তকমা! খাদের কিনারা থেকে তারা অবিশ্বাস্যভাবে দাঁড়াল ঘুরে। পেসার হারিস রউফ ডসনকে ফিরিয়ে পরের বলে বিদায় করলেন অলি স্টোনকেও। আর শেষ ওভারে রিস টপলি রানআউটে কাটা পড়লেন শান মাসুদের থ্রোতে। রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে জিতে সিরিজে সমতায় ফিরল বাবর আজমের দল।

রোববার করাচিতে চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে শেষদিকের রোমাঞ্চে ৩ রানে জিতেছে পাকিস্তান। টস হেরে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৬৬ রান তোলে তারা। জবাবে ৪ বল বাকি থাকতে ইংলিশরা থামে ১৬৩ রানে।

পাকিস্তানের হয়ে ব্যাট হাতে ফের উজ্জ্বল ছিলেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। ফর্মের চূড়ায় থাকা উইকেটরক্ষক-ব্যাটার ৬৭ বলে খেলেন ৮৮ রানের ইনিংস। শেষ ওভারে টপলির শিকার হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৯ চার ও ১ ছক্কা। তাকে ছাপিয়ে বল হাতে নায়ক বনে যান রউফ। ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়ে ৩২ রানে ৩ উইকেট নেন তিনি। ম্যাচসেরার পুরস্কারও পান তিনি।

১১.৫ ওভারে ৯৭ রানের উদ্বোধনী জুটিতে বড় সংগ্রহের ভিতই পেয়েছিল স্বাগতিকরা। কিন্তু এরপর রানের চাকা শ্লথ হয়ে যায়। শান হাত খুলতে পারেননি। রিজওয়ানও ব্যর্থ হন আগ্রাসী ভূমিকা নিতে। অপরাজিত আসিফ আলি ২ ছক্কায় ৩ বলে ১৩ রান করলে ১৬৬ পর্যন্ত পৌঁছায় পাকিস্তান। দলনেতা বাবর আজম ৩৬ রান করেন ২৮ বলে। শান ২১ রান করতে খেলেন ১৯ বল। বাঁহাতি পেসার টপলি ৪ ওভারে ২ উইকেট নিতে দেন ৩৭ রান।

লক্ষ্য তাড়ায় ১৪ রানে ৩ উইকেট খুইয়ে মহাবিপাকে পড়ে সফরকারীরা। প্রথম ওভারে বাঁহাতি স্পিনার নওয়াজ ফেরান ফিল সল্টকে। দ্বিতীয় ওভারে মোহাম্মদ হাসনাইন ৫ বলের মধ্যে তুলে নেন অ্যালেক্স হেলস ও উইল জ্যাকসকে। চাপ সামলে ৩২ বলে ৪৩ ও ৩৬ বলে ৪৯ রানের দুটি ভালো জুটি পায় ইংল্যান্ড।

জুটিগুলোতে বিপজ্জনক রূপ নেওয়া ব্যাটারদের সাজঘরে পাঠান নওয়াজ। বেন ডাকেট এলবিডব্লিউ হন ২৪ বলে ৩৩ করে। অধিনায়ক মঈন আলি স্টাম্প হারান ২০ বলে ২৯ রানে। দ্রুত আরও ২ উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচের চালকের আসনে বসে পড়ে পাকিস্তান। একপ্রান্ত আগলে থাকা হ্যারি ব্রুককে বিদায় করেন মোহাম্মদ ওয়াসিম। তার ব্যাট থেকে আসে ২৯ বলে ৩৪ রান। ডেভিড উইলিকে বোল্ড করেন রউফ।

১৩০ রানে ৭ উইকেট হারানো ইংল্যান্ড উল্টো ম্যাচ মুঠোয় নিয়ে আসে ডসনের ব্যাটিংয়ে। ১৮তম ওভারে হাসনাইনকে বেধড়ক পেটান তিনি। প্রথম বলেই লং-অফ দিয়ে ছক্কা। পরের ডেলিভারিটি ছিল নো। ডসন মেরে দেন বাউন্ডারি। এরপর টানা আরও ৩টি চার হাঁকান। সব মিলিয়ে ওই ওভার থেকে আসে ২৪ রান।

তবে একেবারে শেষ মুহূর্তে রউফ ছিনিয়ে আনেন পাকিস্তানের নাটকীয় জয়। ১৯তম ওভারের তৃতীয় বলে ডসন মিড উইকেটে ক্যাচ দেন বদলি ফিল্ডার মোহাম্মদ হারিসের হাতে। ১৭ বলে তিনি করেন ৩৪ রান। এরপর অভিষিক্ত স্টোন হন বোল্ড। টপলি রানআউট হলে ১ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ খুইয়ে ফেলে ইংলিশরা। রউফের পাশাপাশি ৩ উইকেট নিতে নওয়াজ খরচ করেন ৩৫ রান।

আগামী বুধবার সাত ম্যাচ সিরিজের পঞ্চম টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হবে পাকিস্তান ও ইংল্যান্ড। লাহোরে খেলা শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা ৩০ মিনিটে।

Comments