রিজওয়ানের ব্যাটে বাংলাদেশের সামনে ১৬৭ রান তাড়ার চ্যালেঞ্জ

ছবি: এএফপি

ধারাবাহিকতার প্রতিমূর্তি হয়ে ওঠা মোহাম্মদ রিজওয়ান ফের হাঁকালেন হাফসেঞ্চুরি। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ক্রিজে থাকলেন তিনি। সতীর্থরা তাকে দিলেন যোগ্য সঙ্গ। ফলে পাকিস্তান স্কোরবোর্ডে গড়ল ভালো পুঁজি। তাসকিন আহমেদ ও স্পিনাররা আঁটসাঁট থাকলেও মোস্তাফিজুর রহমান ও হাসান মাহমুদ করলেন হতাশ। এতে বাংলাদেশ সামনে পেল রান তাড়ার দারুণ চ্যালেঞ্জ।

শুক্রবার ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে টস হেরে আগে ব্যাট করেছে পাকিস্তান। নির্ধারিত ২০ ওভারে তারা তুলেছে ৫ উইকেটে ১৬৭ রান। শেষ ৪ ওভারে ৫১ রান জমা করে দলটি। তাদের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭৮ রান আসে রিজওয়ানের ব্যাট থেকে। ৫০ বল মোকাবিলায় তিনি মারেন ৭ চার ও ২ ছক্কা।

নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে ছাড়া খেলতে নামা বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে নজর কাড়েন তাসকিন। ৪ ওভারে ২৫ রান দিয়ে ২ উইকেট পান তিনি। ১ উইকেট নিতে নাসুম আহমেদের খরচা ২২ রান। সাম্প্রতিক সময়ে ছন্দহীনতায় ভোগা মোস্তাফিজ ৪৮ রান দিয়ে থাকেন উইকেটশুন্য। হাসান ৪২ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট। মেহেদী হাসান মিরাজ ২ ওভারে ১২ রান দিয়ে শিকার করেন ১ উইকেট।

পাওয়ার প্লেতে বিনা উইকেটে ৪৩ রান তুলে ফেলে পাকিস্তান। ডানহাতি তাসকিন শুরুতে সুইং ও বাউন্স পেলেও বাকি দুই পেসার ছিলেন নির্বিষ। মোস্তাফিজ ও হাসান আলগা বল দেন বেশ কিছু। সেগুলো থেকে অনুমিতভাবে বাউন্ডারি আদায় করে নেন রিজওয়ান ও বাবর আজম।

প্রথম ৪ ওভারে আলাদা চার বোলার ব্যবহার করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। উদ্দেশ্য ছিল, পাকিস্তানের দুই ওপেনারকে মানিয়ে নিতে না দেওয়া। কিন্তু তারা বরাবরের মতো দলকে ভিত গড়ে দেন। বিপরীতে, বাংলাদেশের বোলাররা উইকেট নেওয়ার মতো সুযোগ তৈরিতে ব্যর্থ হন।

অষ্টম ওভারে আক্রমণে এসে প্রথম বলেই ৫২ জুটি ভাঙেন মিরাজ। এই অফ স্পিনারকে সুইপ করতে গিয়ে টপ এজ হয়ে যায় দলনেতা বাবরের। শর্ট ফাইন লেগে সহজ ক্যাচ তালুবন্দি করেন মোস্তাফিজ। উজ্জ্বল শুরুর পর বাবর ধুঁকছিলেন। ২৫ বলে ৪ চারে ২২ রান করেন তিনি।

আইসিসি টি-টোয়েন্টি ব্যাটিং র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে থাকা রিজওয়ান অন্যপ্রান্ত আগলে ছিলেন। উইকেটে তাকে সঙ্গ দিতে এসে প্রথমে বেশ বিপাকে পড়ে যান শান মাসুদ। টানা ডট বলের চাপ তিনি আলগা করেন বাঁহাতি স্পিনার নাসুমকে চার মেরে। এরপর নিয়মিত বাউন্ডারি হাঁকাতে থাকেন। জমে ওঠে আরেকটি জুটি।

স্পিনারদের ওপর আস্থা রাখেন সোহান। নাসুম ও মিরাজের পর ব্যবহার করেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে। তার কৌশলে কাজ হয়। নাসুমকে লং-অনে মারতে গিয়ে টাইমিংয়ে গড়বড় হয় মাসুদের। পয়েন্টে শঙ্কা জাগিয়েও ক্যাচ হাতে জমিয়ে রাখেন হাসান। ৩৪ বলে ৪২ রানের জুটিতে মাসুদের অবদান ৩১। ২২ বলে মোকাবিলায় মারেন ৪ চার ও ১ ছক্কা।

১৪তম ওভারে দলীয় শতরান পূরণ হয় পাকিস্তানের। পরের ওভারে বোলিংয়ে ফিরে রিভিউ নিয়ে রিজওয়ানকে আউট করতে না পারলেও বাংলাদেশকে ঠিকই উল্লাসের মুহূর্ত এনে দেন তাসকিন। হায়দার আলিকে টিকতে দেননি তিনি। ৬ বলে ৬ রানে সীমানার কাছে ইয়াসির আলির হাতে ধরা পড়েন তিনি।

রিজওয়ান ফিফটি স্পর্শ করেন ৩৮ বলে। এই সংস্করণে সবশেষ আট টি-টোয়েন্টিতে এটি তার ষষ্ঠ হাফসেঞ্চুরি, সবমিলিয়ে ২১তম। ১৬ ওভার শেষে পাকিস্তানের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ১১৬ রান। অর্থাৎ বাংলাদেশের স্পিনাররা রানের চাকা বেশ নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলেন। শেষদিকে তা থাকেনি।

১৭তম ওভারে বাঁহাতি পেসার মোস্তাফিজ খরচ করেন ১৬ রান। পরের ওভারে তরুণ হাসান দেন ১২ রান। তবে ইফতিখার আহমেদকে সাজঘরে পাঠাতে পারেন তিনি। স্লোয়ার বল উড়ানোর চেষ্টায় ডিপ মিডউইকেটে আফিফ হোসেনকে ক্যাচ দেন তিনি। ৮ বলে ২ চারে তার রান ১৩।

তাসকিনকে ছক্কা মেরে ১৯তম ওভারে স্বাগত জানান রিজওয়ান। তবে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ান তিনি। ফিরতি ক্যাচ নিয়ে আসিফ আলিকে বিপজ্জনক হতে দেননি। ৪ বলে ৪ রানে আউট হন আসিফ। শেষ ওভারে মোস্তাফিজ হজম করেন ১৩ রান। মোহাম্মদ নওয়াজ অপরাজিত থাকেন ৮ বলে ৫ রানে।

Comments

The Daily Star  | English

‘No bone, do not press’

Bandage on CU student Mamun’s head reads

31m ago