রান তাড়ায় কোন অভিপ্রায় দেখাতে পারল না বাংলাদেশ
ছেলেদের ক্রিকেটের যে রোগ বাংলাদেশকে বারবার করছে কাবু, মেয়েদের খেলাতেও দেখা গেল তা। তাড়া করতে হবে বড় রান, শুরুতেই কাজে লাগাতে হবে পাওয়ার প্লে। কিন্তু বাংলাদেশের মেয়েরা সেই জায়গাতেই থাকলেন আড়ষ্ট। ৯ ওভার পর্যন্ত উইকেট পড়েনি, কিন্তু তাতে কি? রানের চাকাও যে ছিল শ্লথ। রান তাড়ায় তেমন কোন অভিপ্রায় দেখাতে না পেরে ভারতের কাছে ধরাশায়ী হয়েছে নিগার সুলতানা জ্যোতির দল।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মেয়েদের এশিয়া কাপে ভারতের সঙ্গে লড়াই করতে পারেনি বাংলাদেশ। ম্যাচ হেরেছে ৫৯ রানের বড় ব্যবধানে। ভারতের করা ১৫৯ রানের জবাবে কুড়ি ওভার টিকে থেকেও লাল সবুজের প্রতিনিধিরা জড়ো করেন কেবল ১০০ রান।
১৬০ রান তাড়ায় ফারজানা হক পিংকি ও মুরশিদা খাতুন শুরু আনেন সতর্ক। রান পেলেও যেরকম গতি দরকার ছিল তাদের ব্যাটিংয়ে দেখা মিলেনি তা।
পাওয়ার প্লের প্রথম ৬ ওভারে স্কোর বোর্ডে স্রেফ ৩০ আনে বাংলাদেশ। ৯ ওভার শেষে স্কোর ছিল বিনা উইকেটে ৪৫। রান রেটের চাপ তখনই হয়ে যায় চড়া। নাগালের বাইরে চলে যাওয়া হিসেব নিকেশ আর মেলানো যায়নি।
দশম ওভারের প্রথম বলে স্নেহ রানার বলে শর্ট কাভারে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মুরশিদা। বাঁহাতি এই ব্যাটার ২৫ বলে করেন ২১ রান।
অধিনায়ক নিগার নেমে রাজশ্বরী গায়কোয়াড়কে দুই চার মারলেও সেভাবে ডানা মেলতে পারছিলেন না। তিনিও এগুতে থাকেন ওয়ানডে মেজাজে।
১৪তম ওভারে দীপ্তি শর্মার বলে ফারজানা থামান তার মন্থর ইনিংস। ৪০ বল খেলে অভিজ্ঞ ব্যাটার করেন ৩০ রান।
পরের ওভারে রুমানা আহমেদকে তুলে নেন শেফালি বর্মা। নিগার এক দিকে টিকে কিছুটা চেষ্টা চালালেও সামর্থ্যের বাইরে চলে যায় সমীকরণ। ২৯ বলে ৫ চারে সর্বোচ্চ ৩৬ রান করে ফেরেন নিগার। রিতু মনি, ফাহিমা খাতুনরাও ছিলেন আসা যাওয়ার মিছিলে। ততক্ষণে অবশ্য ম্যাচের ফল নিয়ে কারো মনেই নেই কোন দ্বিধা।
দুপুরে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ঝড়ো শুরু করে ভারত। আগের দিন পাকিস্তানের কাছে হারের ক্ষত পুষিয়ে দিতে তাদের ব্যাটিংয়ে দেখা যায় ঝাঁজ। টুর্নামেন্টে নিষ্প্রভ থাকা স্মৃতি মান্ধানা জ্বলে উঠেন স্বমহিমায়।
বাহারি সব চার-ছয়ে ১০ ওভারেই স্কোর বোর্ডে বিনা উইকেটে ৯১ তুলে ফেলে তারা। পরের ১০ ওভারে অবশ্য লাগাম অনেকটা টেনে রাখা সম্ভব হয়। পরের ১০ ওভারে আসে ৬৮ রান।
শক্ত ওপেনিং জুটির পর শেফালির সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউটে কাটা পড়েন স্মৃতি। বাঁহাতি ব্যাটার ৬ চারে ৩৮ বলে করে যান ৪৭।
স্মৃতি না পারলেও শেফালি পেরিয়ে যান ফিফটি। তবে এরপর বেশি দূর এগুনো হয়নি। ১৪তম ওভারে দ্রুত রানের চেষ্টায় রুমানা আহমেদকে রিভার্স স্কুপ করতে গিয়ে লাইন মিস করে বোল্ড হন তিনি। ৪৪ বলে ৫ চার, ২ ছক্কা শেফালির ব্যাট থেকে আসে ৫৫ রান।
ছন্দে থাকা জেমাইমা দলের সাময়িক অস্বস্তি কাটান নিজের ভরসা দেওয়া ব্যাটিংয়ে। রিচা ঘোষকে চারে নামিয়ে দ্রুত রান আনতে চেয়েছিল ভারত। আগের দিন ঝড় তুললেও এবার সফল হননি তিনি। রিচা ও কিরন প্রভুকে দ্রুত ফিরিয়ে রানের চাকায় কিছুটা লাগাম দেন রুমানা। তবে জেমাইমার ঝলকে অবশ্য দেড়শোর আগে আটকানো যায়নি তাদের। বড় এই রান যে বাংলাদেশের জন্য টপকে যাওয়া অসম্ভবের কাছাকাছি, তারই প্রমাণ মেলে পরে।
Comments