শঙ্কা পেরিয়ে জিতে সুপার টুয়েলভের সুবাস পাচ্ছে নেদারল্যান্ডস

শেষ পর্যন্ত অনেক ঘাম ঝরিয়ে, স্নায়ুচাপ সামলে জিতল ডাচরাই।
ছবি: এএফপি

নামিবিয়াকে অল্প রানে বেঁধে ফেলে জয়ের মঞ্চটা প্রস্তুতই রেখেছিল নেদারল্যান্ডস। তবে সুবিধাজনক অবস্থান থেকে আরেকটু হলেই ম্যাচ খোয়াতে হতো স্কট এডওয়ার্ডসের দলকে। শেষ পর্যন্ত অনেক ঘাম ঝরিয়ে, স্নায়ুচাপ সামলে জিতল ডাচরাই।

মঙ্গলবার গিলংয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের 'এ' গ্রুপের রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে ৫ উইকেটের জয় পেয়েছে নেদারল্যান্ডস। টস জিতে আগে ব্যাট করে ৬ উইকেটে ১২১ রান তুলতে পারে নামিবিয়া। জবাবে ৩ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটে ১২২ রান তুলে জয় নিশ্চিত করে ডাচরা। টানা দুই জয়ে এই গ্রুপ থেকে সুপার টুয়েলভে খেলার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হলো তাদের।

উদ্বোধনী জুটিতে যখন ৫৯ রান তুলে ফেলে ডাচরা, নামিবিয়ার পক্ষে বাজি ধরার মতো খুব বেশি লোক ছিল না। তবে হাল ছাড়েননি জেজে স্মিট, ইয়ান ফ্রাইলিঙ্করা। শেষদিকে তাদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ম্যাচ শেষ ওভারে নিয়ে যায় নামিবিয়ানরা।

ইনিংসের ১৫ ওভার শেষে নেদারল্যান্ডসের সংগ্রহ ছিল ২ উইকেট হারিয়ে ৯৬ রান। জয়ের জন্য ৩০ বলে প্রয়োজন ছিল মাত্র ২৬ রান। সেখান থেকেই বিপর্যয়ের শুরু, এই অল্প রানটুকু করতে ডাচরা খোয়ায় ৩ উইকেট। এক পর্যায়ে মনে হচ্ছিল, অসম্ভবকে বোধহয় সম্ভবই করে ফেলবে নামিবিয়া।

১৬তম ওভারে শুরুটা করেন স্মিট। একই ওভারে তুলে নেন টম কুপার ও কলিন অ্যাকারম্যানকে। দ্রুত ম্যাচ শেষ করতে গিয়ে ডিপ মিডউইকেটে বল তুলে দেন কুপার। সহজ ক্যাচ তালুবন্দী করেন মাইকেল ভ্যান লিঙ্গেন। একই ভুল করেন অ্যাকারম্যানও, অযথা আগ্রাসী হতে গিয়ে ক্যাচ দেন মিড অফে।

প্রয়োজনীয় রান রেট তখনও ছয়ের নিচে। ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ছিল ডাচদের হাতেই। তবে এরপরই অবিশ্বাস্য এক ওভার করে খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেন ফ্রাইলিঙ্ক। ১৭তম ওভারে একটি রানও না দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরত পাঠান প্রতিপক্ষ অধিনায়ক এডওয়ার্ডসকে। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তার উইকেট মেডেনে ম্যাচে ফেরে নামিবিয়া।

পরের ওভারে কোনো বাউন্ডারি হাঁকাতে না পারলেও রানের চাকা সচল রাখেন টিম প্রিঙ্গেল ও বাস ডি লিড। ছয় রান আসে সেই ভিসের সেই ওভার থেকে। শেষ দুই ওভারে ১৪ রান, জয়ের জন্য এমন সমীকরণ দাঁড়ায় নেদারল্যান্ডসের।

১৯তম ওভারেও বাউন্ডারি তুলে নিতে ব্যর্থ হন উইকেটে থাকা দুই ডাচ ব্যাটার। তবে দৌড়ে নিজেদের সক্ষমতা দেখিয়ে স্মিটের করা সেই ওভারে ৮ রান তুলে নেন প্রিঙ্গেল-লিড। ফলে শেষ ওভারে আবারও জয়ের সুবাতাস পেতে থাকে নেদারল্যান্ডস।

ডেভিড ভিসেকে প্রথম বলেই চার মেরে জয় ত্বরান্বিত করেন শেষ পর্যন্ত ৩০ বল থেকে ৩০ রানে অপরাজিত থাকা লিড। তৃতীয় বলে ডাবল নিয়ে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান দলকে। হাফ ছেড়ে বাঁচে ডাচরা।

বোলিংয়ে দুর্দান্ত করা নেদারল্যান্ডস ব্যাট হাতে শুরুটাও করেছিল দারুণভাবে। ম্যাক্স ও'ডাউড ও বিক্রমজিত সিংয়ের কল্যাণে দলীয় সংগ্রহ ৫০ পেরোয় সপ্তম ওভারেই। নবম ওভারে নিজেদের প্রথম সাফল্যের দেখা পায় নামিবিয়া, বিক্রমজিতকে ফেরান বার্নার্ড শোল্টজ। ৩১ বলে ৩৯ রান করেন বিক্রমজিত।

তিন নম্বরে নামা লিডকে সঙ্গে নিয়ে জয়ের পথে ভালোমতোই এগিয়ে যাচ্ছিলেন ও'ডাউড। তবে স্মিটের করা ১৪তম ওভারে রান আউটের ফাঁদে পড়েন তিনি। ৩৫ বলে ৩৫ রান করে ফিরে যান ডাউড। এরপর নানা নাটকীয়তার দেখে মেলে ম্যাচে।

এর আগে ব্যাট হাতে শুরুতেই হোঁচট খায় নামিবিয়া। আবারও ব্যর্থ হন ডিভান লা কক, দ্বিতীয় ওভারেই তাকে ফেরান প্রিঙ্গেল। ভ্যান লিঙ্গেনও দলকে টানতে পারেননি বেশিক্ষণ। ১৯ বলে ২০ রান করে ফেরেন এই ওপেনার। তার পরপরই রানের খাতা না খুলেই ফিরে যান ইয়ান নিকোল লফটি-ইটনও। ৩২ রান তুলতেই ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে নামিবিয়া।

প্রথম ম্যাচের মতো এদিনও ব্যাট হাতে দলের ভরসার প্রতীক হয়ে ওঠেন ফ্রাইলিঙ্ক। স্টিফেন বার্ড ও অধিনায়ক গেরহার্ড এরাসমাসের সঙ্গে দুটি জুটি গড়ে ১০০ পার করান দলীয় সংগ্রহ। কিন্তু রানের চাকা গতি পায়নি কখনও। শেষ পর্যন্ত ৪৮ বলে ৪৩ রান করে ফেরেন ফ্রাইলিঙ্ক, ডাচদের ইনিংসের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ সেটাই। বার্ড ২২ বলে ১৯ ও এরাসমাস ১৮ বলে ১৬ রান করেন।

বল হাতে ডাচদের নেতৃত্ব দেন ডি লিড। ৩ ওভার হাত ঘুরিয়ে মাত্র ১৮ রান দিয়ে তুলে নেন ২টি উইকেট। সেই সঙ্গে ব্যাট হাতে অবদান রেখে ও দুটি ক্যাচ নিয়ে ম্যাচসেরাও হন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

How Islami Bank was taken over ‘at gunpoint’

Islami Bank, the largest private bank by deposits in 2017, was a lucrative target for Sheikh Hasina’s cronies when an influential business group with her blessing occupied it by force – a “perfect robbery” in Bangladesh’s banking history.

8h ago