কোহলির সেঞ্চুরির দিনে পেরে উঠল না শানার শ্রীলঙ্কা

বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা ও শুবমন গিলের ব্যাটে রানের পাহাড় গড়েছিল ভারত। এরপর বল হাতে দলের কাজটা সহজ করেন উমরান মালিক, মোহাম্মদ সিরাজরা। তাতেই বড় জয় ধরা দেয় স্বাগতিকদের হাতে।

মঙ্গলবার গুয়াহাটির বর্ষাপাড়া ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কাকে ৬৭ রানে হারিয়েছে ভারত। আগে ব্যাট করে কোহলির সেঞ্চুরি ও রোহিত-গিলের জোড়া ফিফটিতে ৩৭৩ রানের পাহাড় গড়ে স্বাগতিকরা। শ্রীলঙ্কা শিকার করে সাত উইকেট। অনবদ্য সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন কোহলি।

জবাবে ৮ উইকেটে ৩০৬ রানের বেশি করতে পারেনি লঙ্কানরা। সেঞ্চুরি হাঁকান অধিনায়ক দাসুন শানাকা। সঙ্গে পাথুম নিশাঙ্কার ফিফটি ও ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার চেষ্টার পরও হার বরণ করতে হয় সফরকারীদের। ৮ ওভারে ৫৭ রান দিয়ে কিছুটা খরুচে হলেও তিন উইকেট তুলে নেন উমরান। ৭ ওভার বল করে ৩০ রান দিয়ে ২ উইকেট শিকার করেন সিরাজ।

বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় দলীয় মাত্র ১৯ রানেই সাজঘরের পথ ধরেন ফার্নান্দো। ১২ বলে ৫ রান করা এই ওপেনারকে হার্দিক পান্ডিয়ার ক্যাচ বানিয়ে ফেরান সিরাজ। এরপর কুশল মেন্ডিস রানের খাতা খোলার আগেই ফিরে গেলে বিপদ আরও বাড়ে লঙ্কানদের।

চারিথ আসালাঙ্কাকে নিয়ে ৪১ রানের জুটি গড়ে চেষ্টা চালিয়েছিলেন নিশাঙ্কা, কিন্তু আঘাত হানেন উমরান মালিক। ২৮ বলে তিন চারে ২৩ রান করে উইকেটের পিছনে ধরা পড়েন আসালাঙ্কা। শেষ পর্যন্ত দলের আস্থার প্রতীক হন নিশাঙ্কা ও ধনাঞ্জয়া।

২১তম ওভারে ইয়ুজভেন্দ্র চাহালের বলে এক রান নিয়ে ব্যক্তিগত পঞ্চাশ স্পর্শ করেন নিশাঙ্কা। তাদের ব্যাটে শ্রীলঙ্কা যখন ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিচ্ছিল তখনই ৪৭ রান করে আউট হয়ে যান ধনাঞ্জয়া। ভাঙে ৬৫ বলে গড়া ৭২ রানের জুটি। ধনাঞ্জয়ার ৪০ বলে ৯ চারের মারে খেলা ইনিংসের সমাপ্তি টানেন মোহাম্মদ শামি।

সঙ্গীর বিদায়ের পরও এগিয়ে চলছিলেন নিশাঙ্কা। কিন্তু দলীয় ১৬১ রানে উমরানকে পুল করে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে অকসার পাটেলের হাতে ধরা পড়েন তিনি। তার আগে ৮০ বলে ১১ চারে নামের পাশে যোগ করেন ৭২ রান।

এরপর সাত নম্বরে নামা ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ডি সিলভা উইকেটে এসেই শুরু করেন ঝড়। ৩২তম ওভারে চাহালকে ছক্কা মেরে খোলেন রানের খাতা। তবে সেই ওভারেই তুলে মারতে গিয়ে শ্রেয়াস আয়ারের হাতে ক্যাচ দিলে তার ক্ষুদ্র ক্যামিও। সাত বলে দুই ছক্কা এক চারে ১৬ রান করে ফিরে যান হাসারাঙ্গা।

এদিকে ওভারপ্রতি প্রয়োজনীয় রানরেট বাড়তে থাকে ক্রমেই। নিজের মোকাবিলা করা প্রথম বলে আউট হয়ে দলের চাপ আরও বাড়ান দুনিথ ওয়েলালাগে। উমরান স্লিপে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন তাকে।

রানরেট বাড়াতে গিয়ে মিড অনে রোহিতের হাতে চামিকা করুনারত্নে ধরা পড়লে অষ্টম উইকেট হারায় লঙ্কানরা। আউট হওয়ার আগে এই বোলিং অলরাউন্ডার করেন ২১ বলে ১৪ রান। নবম উইকেটে টেল এন্ডার কাসুন রাজিথাকে নিয়ে ৩৭ বলে ১০০ রানের হার না মানা জুটি গড়েন শানাকা।

শেষ ওভারে লঙ্কান দলপতি ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নিলেও খেলতে পারেননি প্রয়োজনীয় রানরেট অনুযায়ী। ফলে ৮৮ বলে ১২ চার ও তিন ছক্কায় ১০৮ রান করেই সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাকে। অপর প্রান্তে ১৯ বলে নয় রান করে টিকে থাকেন রাজিথা।           

এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতেই ভালো শুরু পায় ভারত। টি-টোয়েন্টি মেজাজে ব্যাট চালিয়ে ৬.৪ ওভারেই দলীয় সংগ্রহ পঞ্চাশ পার করান রোহিত ও গিল। ১৩তম ওভারে হাসারাঙ্গাকে চার মেরে ৪২ বলে ব্যক্তিগত অর্ধশতক পূর্ণ করেন অধিনায়ক রোহিত।

১৮তম ওভারে ফিফটি তুলে নেন গিলও। এই মাইলফলক ছুঁতে তার লাগে ৫১ বল। শেষ পর্যন্ত ২০তম ওভারে গিয়ে উইকেটের দেখা পায় শ্রীলঙ্কা। গিলকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে ফেরান শানাকা। সমাপ্তি ঘটে ৬০ বলে ১১ চারে খেলা ৭০ রানের ইনিংসের।

ক্রীজে আসেন কোহলি। তবে অধিনায়কের সঙ্গে দীর্ঘ হয়নি তার পথচলা। দিলশান মাদুশঙ্কা সরাসরি বোল্ড করে দেন ৬৭ বলে নয় চার ও তিন ছক্কায় ৮৩ রান করা রোহিতকে। চার নম্বরে নামা আয়ার বড় করতে পারেননি ইনিংস।

২৪ বলে ২৮ রান করে ধনাঞ্জয়ার বলে আবিস্কা ফার্নান্দোর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। এরপর লোকেশ রাহুলের সঙ্গে ৭০ বলে ৯০ রানের জুটি গড়ে ভারতকে বড় সংগ্রহের পথে এগিয়ে নেন কোহলি। ৩৬তম ওভারে ধনাঞ্জয়াকে ছক্কা হাঁকিয়ে ফিফটির দেখা পান তিনি।

২৯ বলে ৩৯ রান করা রাহুলকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন রাজিথা। ৪৪তম ওভারে ১৪ রান করে তার বলেই ফিরে যান হার্দিক। কিন্তু টিকে থেকে কোহলি ঠিকই তুলে নেন সেঞ্চুরি। রাজিথার বলে এক রান নিয়ে ক্যারিয়ারের ৪৪তম ওডিআই শতক তুলে নেন তিনি।

এরপর ৪৮তম ও ৪৯তম ওভারে যথাক্রমে আকসার ও কোহলি আউট হয়ে গেলে শেষ তিন ওভারে আর আশানুরূপ রান যোগ করতে পারেনি ভারত। রাজিথার বলে মেন্ডিসের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ৮৭ বলে ১১৩ রান করেন কোহলি। ১০ ওভারে ৮৮ রান দিতে তিন উইকেট শিকার করেন রাজিথা।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus promises election on time

Chief Adviser Prof Muhammad Yunus yesterday reaffirmed his commitment to holding the 13th national election in the first half of February next year.

7h ago