সর্বোচ্চ অনুশীলন সুবিধা পেতে মিরপুর বসবে ‘গ্রিন হাউজ’
বর্ষা মৌসুমে বাংলাদেশে বড় একটা সময় কেড়ে নেয় বৃষ্টি। বাদল দিনে পর্যাপ্ত অনুশীলনের ঘাটতিতে ক্রিকেটারদের পার করতে হয় অলস সময়। এই সমস্যার সংকটে নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মতো 'গ্রিন হাউজ' বসাতে চলেছে বিসিবি।
বিসিবি পরিচালক গ্রাউন্ডস কমিটির প্রধান মাহবুব আনাম জানিয়েছেন, মিরপুরে বিসিবি একাডেমি মাঠের এক প্রান্তে ৩০ মিটার প্রশস্ত ও ৭৫ মিটার লম্বা গ্রিন হাউজ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন তারা। আসছে বর্ষা মৌসুমের আগেই তা স্থাপন করা হবে।
মূলত মরু কিংবা শীতপ্রধান তীব্র আবহাওয়ার দেশগুলোতে কৃষিকাজে ব্যবহার হয় গ্রিন হাউজ। এটিকে পরে ক্রিকেটে কাজে লাগায় নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া।
বৃষ্টির সময় ছাদ-ঢাকা ও চারপাশে পর্দার ভেতর অনুশীলন করবেন ক্রিকেটাররা। গরমের দিনে এসব সরিয়ে খোলা আকাশের নিচে স্বাভাবিকভাবে চলবে প্রস্তুতি।
বুধবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এমনটাই জানান মাহবুব, 'আমরা (বিসিবি) একাডেমিতে গ্রিন-হাউজ এফেক্টের যে অনুশীলন সুবিধা, যেটা নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়াতে আছে, সেরকম স্থাপন করতে যাচ্ছি। উত্তর-দক্ষিণ দিক মিলিয়ে আমরা ২০টি উইকেট এর মধ্যে আনব। এই ২০টি উইকেটে ভরা বর্ষায়ও স্বাভাবিকভাবে খেলা যাবে। এটি জুনের মধ্যেই স্থাপিত হয়ে যাবে।'
মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটে আছে একটি ইনডোর। তবে মান্ধাতা আমলের সুযোগ সুবিধার কারণে এটি ব্যবহারে আগ্রহী হন না ক্রিকেটাররা। একটি আধুনিক ইনডোরের দাবিও অনেক দিনের।
মাহবুব আনাম জানালেন তাদের এই গ্রিন হাউজ কাজ করবে অনেকটা ইনডোরের মতই, 'এটি একপ্রকার ইনডোর সুবিধা বলা যায়। তবে বর্ষাহীন সময়ে পর্দা খুলে নেওয়া যাবে। আর বর্ষায় পর্দা টেনে অনুশীলন করা যাবে। বর্ষার সময় আমাদের ইনডোর ছাড়া আর খুব একটা অনুশীলনের জায়গা থাকে না। আগামী এক বছরের মধ্যে এটাকে একটা সুন্দর পরিকল্পনায় আনতে চাচ্ছি।'
পরিকল্পনা হয়ে গেলেও গ্রিন হাউজ বসানোর কয়েকটি প্রক্রিয়া এখনো বাকি। তবে প্রভাবশালী এই বোর্ড পরিচালকের আশা মে মাসের আগেই কাজ সম্পন্ন করতে পারবেন তারা, 'প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো মার্চের শেষ দিক থেকে এপ্রিলের মধ্যে চলে আসবে। পরে স্থাপনের জন্য মে মাস... হয়তো জুনের মধ্যে আমরা এটা ব্যবহার করতে পারব। আশা করি এই বর্ষায় এটি ব্যবহার করা যাবে। ব্যবহার করলেই আমরা বুঝতে পারব কতটা উপকার পাওয়া যাচ্ছে।'
অনুশীলন সুবিধার এই উন্নয়নের জন্য সাড়ে তিন কোটি টাকার মতো লাগতে পারে বিসিবির, 'বাজেটের বিভিন্ন প্রক্রিয়া রয়েছে। কিছু জিনিস আছে এটার ক্রয় প্রক্রিয়া। তবে এটার জন্য সব মিলিয়ে ৩ থেকে সাড়ে ৩ কোটি টাকা লাগতে পারে। একটা ইনডোর বানাতে এখন ৫-৬ কোটি টাকাতেও হয় না। এটার সুফলটা হচ্ছে ঘোর বর্ষায়ও আমরা এটা ব্যবহার করতে পারব।'
আপাতত এটিকে পরীক্ষামূলক প্রজেক্ট হিসেবে দেখছেন তিনি, সফল হলে এর ব্যাপ্তিও বাড়বে, 'আমরা এটিকে পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে নিচ্ছি। যদি এখানে সফল হই তাহলে অন্যান্য যে অনুশীলন সুবিধা তৈরি করছি, সেখানেও হয়তো ব্যবহার করতে পারব।'
Comments