নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ

জয়হীন থেকে টানা চতুর্থ বিশ্বকাপ শেষ করল বাংলাদেশ

ছবি: টুইটার

ব্যাটিং ব্যর্থতা জারি থাকল। আরও একবার অল্প পুঁজিই সম্বল হলো বাংলাদেশের। সেটা নিয়ে নাটকীয় কিছু করার জন্য বোলিং হতে হতো দারুণ। নাহিদা আক্তার-ফাহিমা খাতুনরা জাগালেন উইকেট নেওয়ার একাধিক সম্ভাবনা। কিন্তু ক্যাচ পড়ল, স্টাম্পিং-রানআউটের সুযোগ হাতছাড়া গেল। আরেকটি বিশাল হারে নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এবারের আসর শেষ করল বাংলাদেশ।

মঙ্গলবার রাতে কেপটাউনের নিউল্যান্ডসে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ১০ উইকেটে বিধ্বস্ত হয়েছে নিগার সুলতানা জ্যোতির দল। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১১৩ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে ১৩ বল হাতে রেখে বিনা উইকেটে ১১৭ রান তুলে জয় পায় প্রোটিয়ারা। একইসঙ্গে তারা নিশ্চিত করে আসরের সেমিফাইনালের টিকিট।

এই নিয়ে টানা চারটি নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে (২০১৬, ২০১৮, ২০২০ ও ২০২৩) জয়ের স্বাদ পেল না বাংলাদেশ। সব মিলিয়ে তারা হারল টানা ১৬ ম্যাচ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হেরে এবারের আসর শুরু করেছিল তারা। দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ধরাশায়ী হওয়ার আগে তারা পরাস্ত হয় অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে।

পাওয়ার প্লেতে দুই ওপেনারকে হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। রান তোলার গতিও ছিল ভীষণ মন্থর। সেসময় আসে কেবল ২৩ রান। মুর্শিদা খাতুন ৬ বল খেলে রানের খাতা খুলতে পারেননি। একবার বেঁচে যাওয়া শামিমা সুলতানা ফেরেন ১৬ বলে ১১ রানে।

অধিনায়ক জ্যোতি ফের দলকে টেনে তোলার কাজে নামেন। তৃতীয় উইকেটে সোবহানা মোস্তারির সঙ্গে ৩৩ ও চতুর্থ উইকেটে স্বর্ণা আক্তারের সঙ্গে ২৭ রানের জুটি গড়েন তিনি। তবে কেউই যেমন ইনিংস লম্বা করতে পারেননি, তেমনি রানের চাকাও সেভাবে সচল হয়নি।

মোস্তারি আউট হন ৩০ বলে ২ চারে ২৭ রান করে। তিনিও ক্যাচ তুলে পাওয়া জীবন কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন। স্বর্ণা করেন ১১ বলে ১১ রান। বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ইনিংস খেলেন জ্যোতি। ৩৪ বল মোকাবিলায় তার ব্যাট থেকে আসে ২ চারে ৩০ রান।

ফারজানা হক টিকতে পারেননি। ৮ বলে ৭ রান করেন তিনি। শেষদিকে রান তোলায় নাহিদা কিছুটা তাড়া দেখান। তিনি ১১ বলে ১৫ রানে অপরাজিত থাকেন। ৪ বলে অপরাজিত ৫ রান করেন লতা মণ্ডল। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ২টি করে উইকেট নেন মারিজানে ক্যাপ ও আয়াবোঙ্গা খাকা।

বাংলাদেশের বোলাররা শুরু থেকে লম্বা সময় পর্যন্ত দেখান ছন্দ। কিন্তু ফিল্ডিং থেকে আসেনি প্রত্যাশিত সহায়তা। বারবার জীবন পাওয়া দুই প্রোটিয়া ওপেনার লরা ভোলভার্ট ও ট্যাজমিন ব্রিটস সুযোগ কাজে লাগান দারুণভাবে। শতরানের জুটিতে দুজনই তুলে নেন হাফসেঞ্চুরি।

পাওয়ার প্লেতে দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ছিল কেবল ২৬ রান। দশম ওভার শেষে তা দাঁড়ায় ৪৩ রান। অর্থাৎ জয়ের জন্য পরের ৬০ বলে তাদের দরকার ছিল ৭১ রান। তবে চড়াও হয়ে মাত্র ৪৭ বলেই তা নিয়ে ফেলেন ভোলভার্ট ও ব্রিটস।

লক্ষ্য তাড়ায় ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান ভোলভার্ট। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে নজর কেড়ে নেওয়া পেসার মারুফা আক্তারের বল তার প্যাডে লাগায় আম্পায়ার শুরুতে দিয়েছিলেন এলবিডব্লিউয়ের সিদ্ধান্ত। বাঁহাতি স্পিনার নাহিদার করা পরের ওভারে মিড অফে ব্রিটসের সহজ ক্যাচ হাতে জমাতে পারেননি মোস্তারি।

মারুফা আক্রমণে ফিরলে শেষ বলে তৈরি হয় রানআউটের পরিস্থিতি। দুই ব্যাটারই বোলিং প্রান্তে চলে এসেছিলেন। কিন্তু কভারে থাকা ফিল্ডার উইকেটরক্ষক শামিমার কাছে থ্রো না করলে নষ্ট হয় সুবর্ণ সুযোগ।

পরের দুটিতে দায় শামিমারই। দুবারই জীবন পান ব্রিটস। নবম ওভারে নাহিদার বল ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে খেলতে গিয়ে মিস করেন তিনি। বল গ্লাভসে জমালেও প্রথম দফায় স্টাম্প ভাঙতে পারেননি শামিমা। দ্বিতীয় চেষ্টায় পারলেও ততক্ষণে ক্রিজে পৌঁছে যান ব্রিটস। পরের ওভারে লেগ স্পিনার ফাহিমার বলও ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে গিয়ে পরাস্ত হন ব্রিটস। কিন্তু শামিমা বল লুফে নিতে তালগোল পাকান।

৬৬ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন ভোলভার্ট। ৫৬ বল মোকাবিলায় তিনি মারেন ৭ চার ও ১ ছক্কা। ব্রিটস ৪ চারের সাহায্যে ৫১ বলে ৩০ রানে অপরাজিত থাকেন।

Comments

The Daily Star  | English

No immediate tax relief despite inflation woes

There will be no tax relief for individuals in low- and middle-income brackets, at least in the next fiscal year, even though high inflation has significantly eroded their purchasing power over the last couple of years.

10h ago