ডাবল সেঞ্চুরি মিস কোহলির
সাড়ে তিন বছর পর টেস্টে পেয়েছেন তিন অঙ্কের দেখা। সেটাকেই ডাবল সেঞ্চুরিতে পরিণত করার খুব কাছেই ছিলেন বিরাট কোহলি। আকসার প্যাটেলের সঙ্গে যখন ব্যাটিং করছিলেন তখন মনে হয়েছিল সময়ের ব্যাপারই মাত্র। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর পেরে ওঠেননি। তবে দলকে কাঙ্ক্ষিত লিড এনে দিয়েছেন ঠিকই।
আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে রোববার সিরিজের চতুর্থ টেস্টের চতুর্থ দিন শেষে ৮৮ রানে এগিয়ে আছে ভারত। নিজেদের প্রথম ইনিংসে এদিন ৫৭১ রানে গুটিয়ে যায় স্বাগতিকরা। প্রথম ইনিংসে ৯১ রানের পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে বিনা উইকেটে ৩ রান তুলে দিন শেষ করেছে অস্ট্রেলিয়া।
আগের দিনই ফিফটি তুলে নেওয়া কোহলি এদিন শেষ পর্যন্ত খেলেছেন ১৮৬ রানের ইনিংস। মূলত শেষদিকে সঙ্গীদের কাছ থেকে পর্যাপ্ত সহায়তা না পাওয়ায় এক প্রান্তে আক্রমণাত্মক খেলে দ্রুত রান তুলতে গিয়েই আউট হয়েছেন তিনি। টড মার্ফির বলে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে মিড উইকেট সীমানায় ক্যাচ তুলে দেন মার্নাস লাবুশেনের হাতে।
২০১৯ সালে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে বাংলাদেশের বিপক্ষে আগের টেস্ট সেঞ্চুরিটি করেছিলেন কোহলি। এরপর ৪১ ইনিংস ছিলেন ব্যর্থতার বৃত্তে। ঘরের মাঠে নিজের ৫০তম টেস্ট খেলতে নেমে ১০৭ বলে ফিফটি স্পর্শ করা কোহলি সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন ২৪১ বলে। সেসময় তার নামের পাশে বাউন্ডারি ছিল মাত্র পাঁচটি। শেষ পর্যন্ত ৩৬৪ বলে ইনিংসে চার মেরেছেন ১৫টি।
তবে বহুল প্রতীক্ষিত সেঞ্চুরির পর বাঁধভাঙা উল্লাস করতে দেখা যায়নি কোহলিকে। সিঙ্গেল পূর্ণ করার পর হেলমেট খুলে ব্যাট সামান্য উঁচিয়ে ধরেন তিনি। সেসময় তার ঠোঁটে ছিল মৃদু হাসির রেখা। এরপর জার্সির ভেতরে থাকা লকেট বের করে তাতে চুমু আঁকেন। উদযাপনে প্রকাশ না পেলেও সেঞ্চুরিটি কোহলির জন্য যে ভীষণ স্বস্তির তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
এটা টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৮তম সেঞ্চুরি কোহলির। ঘরের মাঠে ১৪তম। সবমিলিয়ে ৫৫২ ইনিংসে তার সেঞ্চুরি হলো ৭৫টি। ৭৫টি সেঞ্চুরি করতে কিংবদন্তি শচিন টেন্ডুলকার খেলেছিলেন ৫৫৬টি ইনিংস।
আগের দিনের ৩ উইকেটে ২৮৯ রান নিয়ে চতুর্থ দিনে ব্যাটিংয়ে নামে ভারত। স্কোরবোর্ডে ২০ রান যোগ করতেই রবীন্দ্র জাদেজাকে হারায় তারা। মার্ফির বলে মিডঅনে উসমান খাওয়াজার ক্যাচে পরিণত হন তিনি। ভাঙে ৬৪ রানের জুটি। ৮৪ বলে ২৮ রান করেন জাদেজা।
এরপর স্রিকার ভরতকে নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকেন কোহলি। পঞ্চম উইকেটে ৮২ রান যোগ করেন এ দুই ব্যাটার। এ জুটি ভাঙেন নাথান লায়ন। শর্ট লেগে সহজ ক্যাচ তুলে দেন হ্যান্ডসকম্বের হাতে। এর আগে ৮৮ বলে ৪৪ রান করেন এ উইকেটরক্ষক-ব্যাটার।
এরপর আকসার প্যাটেলকে নিয়ে দলের হাল ধরেন কোহলি। দুই ব্যাটারই আগ্রাসী ব্যাটিং করতে থাকেন। ২১৫ বলে গড়েন ১৬২ রানের জুটি। তাতেই লিড পেয়ে যায় দলটি। ক্রমেই বড় হুমকি হয়ে দাঁড়ানো এ জুটি ভাঙেন মিচেল স্টার্ক। আকসারকে বোল্ড করে তিনি। ১১৩ বলে ৭৯ রানের ইনিংস খেলেন এ অলরাউন্ডার। এরপর ১৬ রানের ব্যবধানে শেষ চারটি উইকেট হারালে গুটিয়ে যায় ভারত।
অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে ১১৩ রানের খরচায় ৩টি উইকেট পান মার্ফি। ১৫১ রানের বিনিময়ে ৩টি শিকার লায়নেরও।
নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে বিনা উইকেটে ৩ রান করে দিন শেষ করেছে সফরকারীরা। ট্রাভিস হেড ৩ ও ম্যাথিউ কুনেমান ০ রানে উইকেটে আছেন।
Comments