ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগ

বিজয়ের সেঞ্চুরিতে আবাহনীর হাসি, রনির ঝড়ের পরও ডুবল মোহামেডান

বৃহস্পতিবার ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ ক্রিকেটে দেখা গেছে বড় রানের ম্যাচ। মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৩৭২ রানের পাহাড়সম পুঁজি গড়ে ১২৪ রানের বড় জয় পেয়েছে শিরোপা প্রত্যাশী আবাহনী।
Anamul Haque Bijoy
সেঞ্চুরির পর বিজয়। ছবি: ফিরোজ আহমেদ

নাঈম শেখকে নিয়ে দুর্বার উদ্বোধনী জুটি গড়লেন এনামুল হক বিজয়। নাঈম হাতছাড়া করলেও বিজয় থামলেন সেঞ্চুরি করে। আফিফ হোসেন, মোসাদ্দেক হোসেন আর জাকের আলি অনিকও তুললেন ঝড়। আবাহনী গড়ল বিশাল পুঁজি। মিজানুর রহমান সেঞ্চুরি করলেও যার নিচে চাপা পড়েছে ব্রাদার্স ইউনিয়ন। আবাহনীর রান উৎসবের দিনে  আরেক ম্যাচে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের কাছে বিধ্বস্ত হয়েছে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। রনি তালুকদার ছাড়া গাজির পাহাড় পেরুনোর চ্যালেঞ্জ জানাতে পারেননি কেউ।

বৃহস্পতিবার ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ ক্রিকেটে দেখা গেছে বড় রানের ম্যাচ। মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৩৭২ রানের পাহাড়সম পুঁজি গড়ে ১২৪ রানের বড় জয় পেয়েছে শিরোপা প্রত্যাশী আবাহনী।

আবাহনীর জয়ে সবচেয়ে বড় অবদান আগের মৌসুমে প্রাইম ব্যাংকের হয়ে রেকর্ড রান করা বিজয়ের। নতুন মৌসুমে নেমেই ছন্দ ধরে রেখেছেন তিনি। ১১৮ বলে ৬টি করে চার-ছক্কায় তিনি করেন ১২৩ রান।

নাঈম করেন ৭৪ বলে ৮৫, আফিফের ব্যাট থেকে আসে ৪৭ বলে ৬৫ রানের ঝড়ো ইনিংস। অধিনায়ক মোসাদ্দেক ২৭ বলে ৪৬ ও জাকের ১১ বলে করেন ২৬ রান।

৩৭৩ রান তাড়ায় নেমে কখনই ম্যাচে ছিল না ব্রাদার্স। তাদের অধিনায়ক মিজানুর ১১৬ বলে ১০২ আর মাইশুকুর ৯৯ বলে করেন ৭৩। এত বড় পুঁজি তাড়া করে জেতার তাড়না খুব একটা দেখা যায়নি তাদের মাঝে। পুরো ৫০ ওভার ব্যাট করে দলটি নেতিবাচক ব্যাটিং অ্যাপ্রোচে করে ২৪৮ রান।

সকালে টস হেরে ব্যাট করতে গিয়ে রানে ভরা বাইশগজের পুরো ফায়দা কাজে লাগান বিজয়-নাঈম। ওপেনিং জুটিতেই ২৫.৩ ওভারে আনেন ১৫৭ রান। চরিত্রের বিপরীতে গিয়ে আগ্রাসী খেলা নাইম ৭৪ বলে ৮৫ করে থামলেও চালিয়ে যান বিজয়। একশোর উপর স্ট্রাইকরেট রেখে সেঞ্চুরি পান তিনি।

আফিফ, মোসাদ্দেক আর জাকের নেমে খেলেছেন টি-টোয়েন্টি। তাদের তান্ডবে এলোমেলো হয়ে যায় ব্রাদার্সের বোলিং। একপেশে ম্যাচের কোন পর্যায়েই লড়াইয়ের ঝাঁজ তৈরি করতে পারেনি তারা।

তারায় ভরা মোহামেডানের ভোগান্তি

ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামেও দেখা গেছে বড় রান। কেউ সেঞ্চুরি না করলেও গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স পেয়ে যায় ৩৪৯ রানের বড় পুঁজি। যার জবাবে ২২১ রানেই গুটিয়ে যায় ঢাকঢোল পিটিয়ে দল করা মোহামেডান। মোহামেডান ম্যাচ হারে ১২৮ রানে। বিধ্বস্ত হওয়ার দিনে মোহামেডানকে টেনেছেন কেবল মাত্র ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলা রনি।

সকালে মোহামেডানও টস জিতে ব্যাট করতে দিয়েছিল গাজীকে। দুই ওপেনার মেহেদী মারুফ আর হাবিবুর রহমান সোহান শুরু করেন টি-টোয়েন্টি স্টাইলে। নবম ওভারে দলের ৭৪ রানে হাবিবুর যখন ফেরেন ২২ বলে ৩৪ রানের ঝড় তুলে।

আরেক ওপেনার মেহেদী মরুফও থিতু হয়েই থামেন। ৩২ বলে তার ব্যাট থেকে আসে ২৯। তিনে নামা ফরহাদ হোসেন খেলা মথর করে দেন। ৩৯ রান তুলেন তিনি ৫৪ বলে।  চারে নেমে ভারতীয় রবি তেজা ৭৯ বলে করেন ৬৬ রান।

তবে গাজীর রান পাহাড়ে উঠা শুরু এরপর থেকে। অধিনায়ক আকবর আলি ৫৪ বলে ৫৯। এসএম মেহরুব হাসান ৪৩ বলে ৬২ আর শেষ দিকে মাহমুদুল হাসান নেমে স্রেফ ১৩ বলে করেন ২৭ রান।

আবু জায়েদ রাহি, সৈয়দ খালেদ আহমেদদের এলোমেলো করে দলকে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যান তারা।

৩৫০ রানের বিশাল রান তাড়ায় মোহামেডানের শুরুটা ছিল ভালো। সৌম্য সরকারকে নিয়ে আগ্রাসী শুরু আনেন রনি। ওভারপ্রতি ছয়ের উপরে রান আসছিল। ৮ম ওভারে সৌম্যকে বোল্ড করে ব্রেক থ্রো আনেন এনামুল হক। আগের সিলেটে দিন আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সৌম্য এবার থামেন ১৯ বলে ১৬ রানে। ৪৮ রানে প্রথম উইকেট হারায় মোহামেডান।

ইমরুলকে নিয়ে আরেকটি ভালো জুটি পেয়ে গিয়েছিলেন রনি। দ্বিতীয় উইকেটে দুজনে যোগ করেন আরও ৭৪ রান। থিতু হওয়া অধিনায়ক ইমরুল এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন কাজি অনিকের বলে।

ভারতীয় অনুষ্টুপ মজুমদার হয়ে যান রান আউট। রনি একপাশে টানছিলেন বলে আশা ছিল। টি-টোয়েন্টি মেজাজে ব্যাটিং চালিয়ে যাওয়া রনি হুসনা হাবিবের বলে কিপারের হাতে ক্যাচ দিলে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে মোহামেডান। ৬১ বলের ইনিংসে ১২ চার ১ ছক্কায় ৮০ রান করেন এই ডানহাতি।

এরপর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (৫৭ বলে ৫৮) ফিফটি করলেও পরিস্থিতির দাবি ছিল আরও ভিন্ন। জেতার পরিস্থিতি আনতে তাকে খেলতে হতো আরও দ্রুত। ইনিংসও টেনে নিতে হতো। কোনটাই পারেননি তিনি। বাকিরাও কেউ টিকতে পারেননি। মোহামেডান ম্যাচ শেষের অনেক আগেই যেন হাল ছেড়ে দেয়।

কাজে লাগলো না নাঈম-মুমিনুলের রান

বিকেএসপিতে আরেক ম্যাচে রূপগঞ্জ টাইগার্সকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব। আগে ব্যাট করতে গিয়ে কেবল ২১৬ রান করতে পারে রূপগঞ্জ। মুমিনুল ৬৫ রান আনতে খেলেন ১০২ বল। নাঈম ১০৪ বলে করেন ৮৬ রান। এই দুজন ছাড়া আর কেউ অবশ্য রানই পাননি।

শ্রীলঙ্কান সঙ্গীত কুরে ও আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের ফিফটিতে ২২  বল আগেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় শাইনপুকুর। 

Comments

The Daily Star  | English

Floods cause Tk 14,421 crore damage in eastern Bangladesh: CPD study

The study highlighted that the damage represents 1.81 percent of the national budget for fiscal year (FY) 2024-25

1h ago