ক্রিকেট

রেকর্ড রান তাড়ার ম্যাচে চার্লসকে ছাপিয়ে নায়ক ডি কক

সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৪ উইকেটে জিতেছে স্বাগতিকরা। টস হেরে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ২৫৮ রান করে ক্যারিবিয়ানরা। জবাবে ৭ বল হাতে রেখে ৪ উইকেটে ২৫৯ রান তুলে জয় নিশ্চিত করে প্রোটিয়ারা।
ছবি: এএফপি

জনসন চার্লসের বিস্ফোরক সেঞ্চুরিতে রানের পাহাড় গড়ল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু সেটাও যথেষ্ট হলো না কুইন্টন ডি ককের তাণ্ডবে। তাকে যোগ্য সঙ্গ দিলেন আরেক ওপেনার রিজা হেন্ড্রিকস। এতে রেকর্ড রান তাড়া করে জিতে সিরিজে সমতা ফেরাল দক্ষিণ আফ্রিকা।

রোববার সেঞ্চুরিয়নে রেকর্ডের ছড়াছড়ি হওয়া সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৪ উইকেটে জিতেছে স্বাগতিকরা। আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ২৫৮ রান করে ক্যারিবিয়ানরা। জবাবে ৭ বল হাতে রেখে ৪ উইকেটে ২৫৯ রান তুলে জয় নিশ্চিত করে প্রোটিয়ারা।

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এটাই কোনো দলের সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জেতার কীর্তি। আগের রেকর্ড ছিল বুলগেরিয়ার দখলে। গত বছরের ২৬ জুনে ঘরের মাঠে সার্বিয়ার বিপক্ষে ২৪২ রানের পেছনে ছুটে ২ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটে জিতেছিল তারা। প্রোটিয়া ব্যাটারদের আগ্রাসনে সেই কীর্তি টিকল না এক বছরও।

রান উৎসবের ম্যাচে হলো ছক্কা বৃষ্টি। ২০ ওভারের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রেকর্ড মোট ৩৫ ছয় মারে দুই দল মিলে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটাররা হাঁকান ২২ ছক্কা। দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাট থেকে আসে ১৩ ছয়। এখানেও পেছনে পড়ে যায় বুলগেরিয়া ও সার্বিয়ার মধ্যকার ওই ম্যাচ। সেদিন হয়েছিল মোট ৩৩ ছক্কা।

ক্রিকেটের ক্ষুদ্রতম সংস্করণে মোট রানের রেকর্ড গড়ল ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও দক্ষিণ আফ্রিকা। দুই দল মিলে করে ৫১৭ রান। কোনো আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচে আগে কখনোই হয়নি পাঁচশ রান। ২০১৬ সালে লডারহিলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ভারত মিলে করা ৪৮৯ রান ছিল আগের সর্বোচ্চ।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের সর্বোচ্চ পুঁজি পায় সফরকারীরা। তিনে নামা চার্লস মাত্র ৩৯ বলে ছুঁয়ে ফেলেন সেঞ্চুরি। এটি এই সংস্করণের ইতিহাসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষ দ্রুততম ও সব মিলিয়ে দ্বিতীয় দ্রুততম শতকের রেকর্ড। তিনি শেষ পর্যন্ত আউট হন ১১৮ রানে। মার্কো ইয়ানসেনের বলে বোল্ড হওয়া চার্লস ৪৬ বল মোকাবিলায় মারেন ১০ চার ও ১১ ছক্কা।

ওপেনার কাইল মেয়ার্স ২৭ বলে খেলেন ৫১ রানের ইনিংস। তিনি মারেন ৫ চার ও ৪ ছক্কা। দ্বিতীয় উইকেটে চার্লসের সঙ্গে ৫৮ বলে ১৩৫ রানের জুটি গড়েন তিনি। এরপর অধিনায়ক রভম্যান পাওয়েলের ১৯ বলে ২৮ ও রোমারিও শেপার্ডের ১৮ বলে অপরাজিত ৪১ রানে আড়াইশ পেরোয় উইন্ডিজ।

কাগিসো রাবাদা বাদে দক্ষিণ আফ্রিকার সব বোলারই ওভারপ্রতি গড়ে দশের বেশি রান খরচ করেন। সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেওয়া ইয়ানসেন ১৬.৭৫ ইকোনমিতে দেন ৬৭ রান। ২ উইকেট নিতে ওয়েইন পারনেলের খরচা ৪৩ রান।

লক্ষ্য তাড়ায় উদ্বোধনী জুটিতে শক্ত ভিত পেয়ে যায় স্বাগতিকরা। ৬৫ বলে ১৫২ রানের জুটি গড়েন ডি কক ও হেন্ড্রিকস। ৪৩ বলে সেঞ্চুরি করার পরের বলেই ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন ডি কক। তার ব্যাট থেকে আসে ৯ চার ও ৮ ছক্কা। হেন্ড্রিকস থামেন ৬৮ করে। তার ২৮ বলের ইনিংসে ছিল ১১ চার ও ২ ছক্কা।

রাইলি রুশো ও ডেভিড মিলার টিকতে পারেননি। তাতে রান তোলার গতি কিছুটা কমে গিয়েছিল। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকাকে লক্ষ্য থেকে দূরে আটকাতে পারেননি ক্যারিবিয়ান বোলাররা। অধিনায়ক এইডেন মার্করাম ২১ বলে অপরাজিত ৩৮ রানে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। হেইনরিখ ক্লাসেন খেলেন ৭ বলে ১৬ রানের হার না মানা ইনিংস।

তিন ম্যাচের সিরিজে চলছে ১-১ ব্যবধানে সমতা। আগামী মঙ্গলবার জোহানেসবার্গে অঘোষিত ফাইনালে রূপ নেওয়া শেষ টি-টোয়েন্টিতে মাঠে নামবে দুই দল।

Comments