সুপার লিগ নিশ্চিত করল সাকিব-মিরাজদের মোহামেডান

আসরের প্রথম পাঁচ ম্যাচে পায়নি একটি জয়ের দেখা। তখন চোখ রাঙাচ্ছিল অবনমনও। সুপার লিগের চিন্তা তো অনেক দূর। সেখান থেকে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। এরপর উল্টো টানা পাঁচ জয়ে সুপার নিশ্চিত করেছে দেশের ঐতিহ্যবাহী দলটি।
শুক্রবার সাভারের বিকেএসপিতে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের ম্যাচে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবকে ৫২ রানে হারিয়েছে মোহামেডান। একই দিনে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সকে ৫ উইকেটে হারায় আরেক ঐতিহ্যবাহী ক্লাব ব্রাদার্স ইউনিয়ন। তাতেই সুপার লিগ নিশ্চিত হয়ে যায় মোহামেডানের।
অথচ এই দলে খেলেন দেশের সবচেয়ে বড় তারকা সাকিব আল হাসান। আছেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের মতো খেলোয়াড়ও। তবে আসরের শুরুতে জাতীয় দলের হয়ে আয়ারল্যান্ড সিরিজে খেলতে থাকায় ছিলেন না সাকিব, মিরাজ সহ অনেকেই।
এদিন ১০ রাউন্ড করে খেলা শেষ হয় লিগের প্রতিটি দলেরই। সেখানে ১১ পয়েন্ট নিয়ে সুপার লিগ নিশ্চিত করে মোহামেডান। গাজী গ্রুপকে হারিয়ে সুপার লিগের আশা টিকিয়ে রাখল ব্রাদার্সও। আর রূপগঞ্জ টাইগার্সকে হারিয়ে টিকে রইল সিটি ক্লাবের আশাও। দুটি দলেরই পয়েন্ট ৮। তবে শেষ ম্যাচে নিজেদের জয়ের পাশাপাশি হারতে হবে গাজী গ্রুপকেও। কারণ ৯ পয়েন্ট নিয়ে এগিয়ে আছে দলটি।
এর আগে সুপার লিগ নিশ্চিত করেছে চারটি ক্লাব - আবাহনী লিমিটেড, শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব, লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ও প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব।
এদিন টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নামে মোহামেডান। শুরুতেই ওপেনার আব্দুল মজিদকে হারালেও অধিনায়ক ইমরুল কায়েসের সঙ্গে তরুণ মাহিদুল হাসান অঙ্কনের জুটিতে বড় সংগ্রহের ভিত পেয়ে যায় দলটি। দ্বিতীয় উইকেটে ৯৭ রানের জুটি গড়েন তারা। শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেটে ২৭৬ রান সংগ্রহ করে দলটি।
এদিন তিন অঙ্কের ছোঁয়া পেয়েছেন মাহিদুল। খেলেছেন ১২৫ রানের দারুণ এক ইনিংস। ১২৫ বলে ৬টি চারের সঙ্গে ৭টি ছক্কা মেরে নিজের ইনিংস সাজান এ তরুণ। ৮৬ বলে ৭টি চার ও ২টি ছক্কায় ৬৯ রান করেন ইমরুল। এছাড়া সাকিব করেন ৩০ রান।
লক্ষ্য তাড়ায় খালিদ হাসান ও শুভাম শর্মার ফিফটিতে লড়াই করেছিল শাইনপুকুর। তবে শেষ পর্যন্ত পেরে ওঠেনি তারা। ৪৩.২ ওভারে ২২৪ রানে গুটিয়ে যায় দলটি। শুভাম ৬৬ খালিদ ৫৬ রানের ইনিংস খেলেন। মোহামেডানের পক্ষে ৪১ রানের খরচায় ৩টি উইকেট পান নাজমুল ইসলাম অপু। এছাড়া মুশফিক হাসান ও জ্যাক লিনটট পান ২টি করে উইকেট।
অপর ম্যাচে মেহেদী মারুফের সেঞ্চুরি ও ফরহাদ হোসেনের ফিফটির সঙ্গে মাহমুদুল হাসান ও এনামুল হকের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৭ উইকেটে ৩০৫ রানের বিশাল সংগ্রহই করেছিল গাজী গ্রুপ। তবে তানজিদ হাসানের সেঞ্চুরি ও আনিসুল ইসলামের ফিফটিতে সে পুঁজি যথেষ্ট হয়নি। এক ওভার বাকি থাকতেই লক্ষ্যে পৌঁছায় তারা।
গাজী গ্রুপের পক্ষে ১০৪ বলে ৮টি চার ও ২টি ছক্কায় ১০০ রান করেন মারুফ। ৭০ রান আসে ফরহাদের ব্যাট থেকে। এছাড়া মাহমুদুল ৩৮ বলে ৪৯ ও এনামুল ২১ বলে অপরাজিত ৩৯ রান করেন। ব্রাদার্সের আরাফাত সানি জুনিয়র ৫৪ রানের খরচায় পান ৩টি উইকেট।
১১৪ বলে ১০৬ রানের ইনিংস খেলেন তানজিদ। ৬টি চার ও ৫টি ছক্কায় সাজান নিজের ইনিংস। আনিসুলের ব্যাট থেকে আসে ৬২ রান। এছাড়া সাব্বির হোসেন ৪৮ ও সাদ নাসিম অপরাজিত ৩৯ রান করেন।
দিনের অপর ম্যাচে রোমাঞ্চকর লড়াই শেষে ২ উইকেটে জিতেছে সিটি ক্লাব। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৮ উইকেটে ২৩১ রান করে রূপগঞ্জ টাইগার্স। ইমরানুজ্জামান ৪৩ ও শামিম হোসেন ৩৯ রান করেন। জবাবে শেষ বল পর্যন্ত খেলে জয় নিশ্চিত করে সিটি ক্লাব। শাহরিয়ার কোমল ৬৯ রান করেন। শেষ দিকে রবিউল হক অপরাজিত ৩২ ও ইরফান হোসেন অপরাজিত ৩১ রানের মূল্যবান দুটি ইনিংস খেলেন।
Comments