কামিন্সের ব্যাটে রোমাঞ্চকর লড়াই শেষে জিতল অস্ট্রেলিয়া
উসমান খাওয়াজাকে যখন বেন স্টোকস আউট করলেন তখন ইংলিশদের উল্লাসেই বোঝা যাচ্ছিল বড় বাধাটা পার করে ফেলেছেন তারা। এরপর প্রয়োজন শুধু লেজ ছাঁটাই। কিন্তু সেই লেজ যে কতোটা লম্বা হতে পারে তা ভালোভাবেই টের পেল ইংল্যান্ড। নাথান লায়নকে নিয়ে অসাধ্য সাধন করেই তবে মাঠ ছেড়েছেন অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। অস্ট্রেলিয়া পেল রোমাঞ্চকর এক জয়।
মঙ্গলবার এজবাস্টনে অ্যাশেজ সিরিজের প্রথম টেস্টে পঞ্চম দিনে এসে ইংল্যান্ডকে ২ উইকেটে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। কামিন্সের অসাধারণ ব্যাটিংয়ে ২৮১ রানের লক্ষ্য তাড়ায় নেমে জয় তুলে নেয় দলটি। তাতে পাঁচ ম্যাচের এই সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল অজিরা।
অথচ দলীয় ২২৭ রানে যখন শেষ বিশেষজ্ঞ ব্যাটার হিসেবে আলেক্স ক্যারি যখন মাঠ ছাড়েন তখন অতি আশাবাদী লোকটিও হয়তো বিশ্বাস রাখতে পারেননি অজিদের উপর। কারণ ব্যাটিং করার সামর্থ্য থাকলেও এমন পরিস্থিতিতে ম্যাচ ঘুড়িয়ে দিতে পারবেন কামিন্স, সেই ভাবনা ছিল অবিশ্বাস্যই। আর সেই অবিশ্বাস্য কাজটি কি দারুণ দক্ষতার সঙ্গেই না করলেন অজি অধিনায়ক।
অবশ্য পুরোদুস্তর ব্যাটারদের মতো ব্যাট করেন লায়নও। যদিও ব্যক্তিগত ২ রানেই ফিরতে পারতেন তিনি। স্টুয়ার্ট ব্রডের বলে স্কয়ার লেগে দুরূহ একটি ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন তিনি। ঝাঁপিয়ে এক হাতে লুফে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন ইংলিশ অধিনায়ক স্টোকস। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেননি। জয় তখনও ছিল ৩৮ রান দূরে।
লায়ন শেষ পর্যন্ত করেছেন অপরাজিত ১৬ রান। সঙ্গী কামিন্স খেলেন ৪৪ রানের হার না মানা এক ইনিংস। ৭৩ বলের ইনিংসটিতে মেরেছেন ৪টি চার ও ২টি ছক্কা। নবম উইকেটে এ দুই ব্যাটার গড়েন অবিচ্ছিন্ন ৫ রানের জুটি। তাতেই হয় অসাধ্য সাধন।
বৃষ্টির কারণে এদিন প্রথম সেশনের পুরোটাই যায় বৃষ্টির পেটে। দ্বিতীয় সেশনে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা খারাপ হয়নি অজিদের। নাইটওয়াচম্যান স্কট বোল্যান্ড খেলেন ২১টি বল। তাকে বিদায় করেন স্টুয়ার্ট ব্রড। তার অফস্টাম্পের বাইরে রাখা বলে ড্রাইভ করতে গেলে ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় উইকেটরক্ষক জনি বেয়ারস্টোর হাতে। ৪০ বলে ২০ রান করেন বোল্যান্ড।
ট্রাভিস হেড খুব একটা সুবিধা করে উঠতে পারেননি। প্রথম ইনিংসে দারুণ ব্যাটিং করা এ ব্যাটার দ্বিতীয় ইনিংসে ছিলেন কিছুটা নড়বড়ে। ব্যক্তিগত ১৬ রানে মঈন আলীর অসাধারণ এক ডেলিভারিতে স্লিপে দাঁড়ানো জো রুটের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন হেড।
তবে দলের আশা বাঁচিয়ে রেখে অপর প্রান্ত আগলে রাখেন খাওয়াজা। তাকে সঙ্গ দিতে নামেন ক্যামেরুন গ্রিন। ষষ্ঠ উইকেটে ৪৯ রানের কার্যকরী এক জুটি গড়েন এ দুই ব্যাটার। তাতেই স্বপ্নটা জোরালো হয় অজিদের। গ্রিনকে বোল্ড করে দিয়ে এ জুটি ভাঙেন অলি রবিনসন। ৬৬ বলে ২৮ রান করেন গ্রিন।
এরপর মাঠে নামেন আলেক্স ক্যারি। খাওয়াজার সঙ্গে দেখে শুনেই ব্যাট করতে থাকেন তিনি। তবে দলীয় ২০৯ রানে খাওয়াজাকে তুলে নেয় ইংলিশরা। অধিনায়ক স্টোকসের বলে বোল্ড হয়ে গেলে হারের শঙ্কায় পড়ে অস্ট্রেলিয়া। আর ব্যক্তিগত ২০ রানে ক্যারিকে জো রুট ক্যাচে পরিণত করলে সে শঙ্কা জোরালো হয় আরও। লেজ বেড়িয়ে যায় অজিদের।
কিন্তু এরপর বাকি পুরো অংশ জুড়েই হতাশার গল্প ইংলিশদের জন্য। লায়ন ও কামিন্সের জুটিতে হারতেই হয় তাদের। রোমাঞ্চকর এক ম্যাচ জিতে এগিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া।
Comments