স্কটল্যান্ডের কাছে হেরে বিশ্বকাপে যেতে পারল না ওয়েস্ট ইন্ডিজ
গ্রুপ পর্বেই নিজেদের সমীকরণ কঠিন করে সুপার সিক্সে এসেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সুপার সিক্সের সব ম্যাচ জেতার পাশাপাশি হিসেব ছিল অন্য ম্যাচের দিকে। কিন্তু স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে আরেকটি হারে সকল সমীকরণের বাইরে ছিটকে গেল ক্যারিবিয়ানরা। এবার ভারতের অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে খেলতে পারছে না দুই বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
শনিবার হারারেতে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের সুপার সিক্সের ম্যাচে ব্র্যান্ডন ম্যাকমুলেনের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে স্কটল্যান্ড। ম্যাকমুলেনের দারুণ বোলিংয়ে আগে ব্যাটিং পেয়ে মাত্র ১৮১ রানে গুটিয়ে যায় শেই হোপের দল। রান তাড়ায়ও তিনে নেমে ৬৯ রানের ইনিংস খেলে নায়ক ডানহাতি পেস অলরাউন্ডার।
গ্রুপ পর্বের ম্যাচে নেদারল্যান্ডের বিপক্ষে সুপার ওভারের রোমাঞ্চে হেরেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এদিন স্কটিশদের বিপক্ষে তারা লড়াই-ই জমাতে পারেনি। ৩৯ বল আগেই শেষ হয়েছে ম্যাচ। ওয়ানডেতে এই প্রথম স্কটল্যান্ডের কাছে হারল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
Scotland trump the West Indies and the two-time champions are out of contention to reach #CWC23 #SCOvWI: https://t.co/D0FGi8lXDh pic.twitter.com/zQ0LVGYKCE
— ICC (@ICC) July 1, 2023
গত বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ডিআরএস থাকলে হয়ত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বদলে ইংল্যান্ডে যেত স্কটল্যান্ড। এবার সেই স্কটিশরাই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বিদায় করে দিল। ১৯৭৫ সালে প্রথম ও ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সবগুলো বিশ্বকাপ খেলা দুইবারের চ্যাম্পিয়নদের ছাড়া হবে এবারের ওয়ানডে বিশ্বকাপ।
এই ম্যাচের কোন অংশের জেতার মতো ঝাঁজ দেখাতে পারেনি ক্যারিবিয়ানরা। বাজে ব্যাটিংয়ে দুশোর আগে গুটিয়ে যাওয়ায় বোলিংয়ে অতিমানবীয় কিছু করতে হতো, তার সম্ভব হয়নি।
১৮২ রান তাড়ায় নেমে প্রথম বলেই আউট হয়ে গিয়েছিলেন ক্রিস্টোফার ম্যাকব্রিড। হোল্ডারের আনা এই সাফল্য অবশ্য ধরে রাখতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দ্বিতীয় উইকেটে দারুণ জুটিতে ম্যাচ বদলে দেন ম্যাথু ক্রস আর বোলিং হিরো ম্যাকমুলেন। দুজনের ১২৪ রানের জুটিতে ম্যাচ অনেকটাই বেরিয়ে যায়।
কোনরকম তাড়াহুড়ো না করে সময় নিয়ে খেলতে থাকেন তারা। নতুন বল সতর্ক পথে সামলে ঝুঁকিহীন পথে রান আনতে থাকেন দুজন। রানরেটের চাপ না থাকায় থিতু হওয়ার সময় পাচ্ছিলেন, থিতু হয়ে বাউন্ডারি বের করতেও সমস্যা হয়নি।
শেফার্ডের বলে লং অনে ক্যাচ দিয়ে ম্যাকমুলেন যখন ফিরছেন তখন স্কটল্যান্ডের জয় অনেকটা নাগালে। ১০৬ বলে ৮ চার, ১ ছক্কায় ৬৯ করেন এই অলরাউন্ডার। কিপার ব্যাটার ক্রস বাকিটা সারেন। রিচি বেরিংটনকে নিয়ে খেলা শেষ করে দেন ছক্কা মেরে। ১০৭ বলে ৭৪ রানে অপরাজিত থাকেন ক্রস।
টস জিতে বোলিং বেছে শুরুতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে কাঁপিয়ে দেন ম্যাকমুলেন। মিডিয়াম পেসে তুলতে থাকেন একের পর এক উইকেট। জনসন চার্লসকে দ্বিতীয় ওভারে কাভারে ক্যাচ বানানোর পর চতুর্থ ওভারে শারমাহ ব্রোকসকে স্লিপে ক্যাচ বানান তিনি। ব্র্যান্ডন কিং থিতু হতেই ম্যাকমুলেনের বলেই তার হাতে জমা পড়েন। আরেক পেসার ক্রিস সুল দারুণ ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে উড়িয়ে দেন কাইল মেয়ার্সের স্টাম্প। ৩০ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে বসে ক্যারিবিয়ানরা।
প্রবল চাপে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা চালান শেই হোপ আর নিকোলাস পুরান। অধিনায়ক হোপ থিতু হতে পারেননি। ৩০ রানের জুটি থামে তার বিদায়ে। সাফওয়ান শরিফের বল এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে স্টাম্পিং হন তিনি। দারুণ ছন্দে থাকা পুরানও দিন মলিন। মার্ক ওয়াটের বাঁহাতি স্পিনে কাবু তিনি। তার ব্যাট থেকে আসে ৪৩ বলে ২১ রান।
৮১ রাবে ৬ উইকেট হারানো ওয়েস্ট ইন্ডিজ পরে আরও ১০০ রান যোগ করতে পারে জেসন হোল্ডারের দৃঢ়তায়। রোমারিও শেফার্ডকে নিয়ে ৭৭ রানের জুটিতে দলকে কিছুটা লড়াইয়ের পুঁজি পাইয়ে দেন তিনি। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৫ রানও তার। শেফার্ড করেন ৩৬। তবু দুইশোর অনেক আগেই থামতে হয় তাদের। যে মামুলি পুঁজি নিয়ে বিন্দুমাত্র লড়াই জমানো হয়নি এক সময়ের প্রভাবশালী দলের।
Comments