এবার তবে খেলায় ফেরা যাক
বাংলাদেশ-আফগানিস্তান যে একটা ওয়ানডে সিরিজ চলছে এই কথা কারো মাথায় আছে? চার-পাঁচদিনের ঘটনা প্রবাহে খেলার কথা মাথায় রাখা মুশকিল বটে। লিটন দাস তার সংবাদ সম্মেলনে প্রবলভাবে সিরিজে ফেরাতে চাইলেন সবাইকে। পারলেন আর কই?
অনেকের হয়ত খেয়াল নেই, বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচটা হেরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে পিছিয়ে আছে। আজ দ্বিতীয় ওয়ানডেতে তাই বাঁচা মরার লড়াই। আগের ম্যাচে যিনি অধিনায়ক ছিলেন সেই তামিম ইকবাল নানান নাটকীতার ধাপ দিয়ে সব আলো নিজের দিকে নিয়ে গেছেন। সিরিজের আগের দিন তার এক মন্তব্যে বিতর্কের সূত্রপাতের পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর ও নাটকীয় ফিরে আসা পুরো দেশের নজরই সরিয়ে নিয়েছে।
অথচ খেলায় ফেরা জরুরি। সিরিজ হার এড়াতে দলের মনোযোগ সেদিকে রাখতেই হবে। লিটন জানালেন বাইরে যা কিছুই হোক তার আঁচ লাগছে না তাদের গায়ে, 'আমরা এখনও একটা ম্যাচ পিছিয়ে আছি, আফগানিস্তান আমাদের চেয়ে এগিয়ে আছে। আমাদের কাছে সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, সিরিজটা কীভাবে জিততে পারি। এর চেয়েও বড় হলো, এই ম্যাচ কীভাবে জিততে পারি। আমার মনে হয়, সতীর্থরা সবাই এই একটা জিনিসেই মনোযোগ দিচ্ছে।'
লিটন যখন এই কথা বলছিলেন, তখনো তামিমের অবসর ভেঙে ফেরার সিদ্ধান্ত হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে তার নাটকীয় সিদ্ধান্ত বদলের পর ক্রিকেটারদের অবস্থা আরও বিভ্রান্তিকর হতে পারে। সতীর্থকে বিদায়ী শুভকামনা জানিয়ে সামনে এগিয়ে চলার কথা বলেছিলেন সবাই। অবসর প্রত্যাহার হলেও বিদায়ী এসব শুভকামনা তো আর প্রত্যাহার করার উপায় নেই। হয়ত সামনে কি হবে তা নিয়েও আছে ধোঁয়াশা।
তিনমাস পর বিশ্বকাপ। তামিম ইকবাল খেলায় ফিরে এলেও আর অধিনায়ক থাকবেন কিনা তা পরিষ্কার হয়নি। এই সিরিজে কোনভাবে পার করে দেওয়ার পর দলের নেতৃত্ব কেমন থাকবে তা নিয়ে হয়ত বিসিবিও অন্ধকারে। সব কিছু নিয়েই দলের ভেতর নতুন করে অস্বস্তি তৈরি হলে এখন অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
এই যে খেলায় ফেরার চেষ্টা করেও খেলায় ফেরা যাচ্ছে না, এটাই ইঙ্গিত করে সংকট কত ঘনীভূত। আফগানিস্তান এই প্রেক্ষিতে বেশ সুবিধাজনক অবস্থায়। এমনিতে তারা সিরিজে এগিয়ে আছে। সেইসঙ্গে বাংলাদেশ দল নাটুকে পরিস্থিতিতে বেসামাল। প্রতিপক্ষকে কোণঠাসা করে তাই প্রথমবার বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জেতার হাতছানি তাদের।
তামিমের অবসর সংক্রান্ত আলোচনায় ঝড়ে হারিয়ে গেছে প্রথম ম্যাচের ব্যাটিং পারফরম্যান্স আর উইকেটের আচরণ। সিরিজ শুরুর আগে বেশ ভালো ব্যাটিং উইকেটে খেলার প্রত্যাশা জানানো হয়েছিল দল থেকে। কিন্তু খেলায় দেখা গেল নিচু আর দুইরকম বাউন্সের উইকেট। তাতে তাল রাখতে না পেরে আফগান স্পিনে কাবু হলেন লিটনরা। ভুল সময়ে ভুল শটের পসরায় আত্মাহুতির মিছিল চলল। লিটনের মতে প্রথম ম্যাচে তারা ভুগেছেন কিছু ভুল সিদ্ধান্তে, 'আমি বলব যে, (প্রথম ম্যাচে) প্রয়োগের ক্ষেত্রে কিছু ভুল ছিলো ব্যাটসম্যানদের। আমরা খুব একটা ভালো বলে কেউই আউট হইনি, হয়তো এক-দুইজন ছাড়া। আমাদের চেষ্টা থাকবে, সিলি মিসটেকগুলো যেন আমরা না করি পরের ম্যাচে। যত কম করব, ততো আমাদের জন্য ভালো হবে।'
চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দুপুর ২টায় শুরু হবে দ্বিতীয় ওয়ানডে। দেখা যাক, মাঠের খেলা আবার সব বাইরের উত্তাপ কমিয়ে দিতে পারে কিনা।
Comments