চূড়ান্ত দল নির্বাচনের আগে নানান হিসেব-নিকেশ
নিয়মিত জাতীয় দলের বাইরে আশেপাশে থাকা প্রায় সবাইকে নিয়েই শুরু হচ্ছে ফিটনেস। ৩২ জনের তালিকার ফিটনেস ক্যাম্পের স্কোয়াডকে এশিয়া কাপের প্রাথমিক দল বলার উপায় নেই। কৌশলগত কারণে নির্বাচকরা এটি প্রকাশ করেননি। ২১ বা ২২ জনের একটা প্রাথমিক দল তারা প্রকাশ করবেন পরে। যেখান থেকে মূলত বেছে নেওয়া হবে এশিয়া কাপের চূড়ান্ত দল।
এমনি বাংলাদেশের ওয়ানডে দলে বেশিরভাগ জায়গায় নিশ্চিত। খেলা অনুসরণ করলে যেকেউ ১১-১২ জনের নাম লিখে ফেলতে পারবেন। যে দুই-তিনটি জায়গা নিয়ে সংশয় তা নিয়ে জটিলতায় ভুগছেন নির্বাচকরাও।
প্রথম জটিলতা নিরসনের ভার তামিম ইকবালের কাছে। নাটকীয় অবসর ভাঙার পর ফিরে তিনি কবে খেলার জন্য প্রস্তুত হতে পারছেন, তা মেডিকেল বিভাগ ও তামিমই জানেন। তামিম যদি ফেরত আসেন তাহলে বিকল্প একজন ওপেনার নিলেই চলবে। কিন্তু কোন কারণে তাকে পাওয়া না গেলে দুজন ওপেনার নিতে হবে নির্বাচকদের।
লিটন দাস, নাজমুল হোসেন, শান্ত, তাওহিদ হৃদয়, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম- ব্যাটিং লাইনআপে তারা একদম পাকাপোক্ত নাম।
সাত নম্বরে কাকে খেলানো হবে এই নিয়ে জটিলতা সবচেয়ে বেশি। সর্বশেষ সিরিজে এই পজিশনে খেলানো হয়েছিল আফিফ হোসেনকে। এর আগে ইয়াসির আলি রাব্বিও খেলছেন সাতে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচে ব্যাটিং পেয়ে ব্যর্থ হন আফিফ। সাতে ঝড় তোলার চাহিদা আগেও মেটেনি তার ব্যাটে।
সাত নম্বরের চিন্তায় তাই চলে আসছেন আরও কয়েকজন। ইমার্জিং এশিয়া কাপে আটে নেমে কিছু ক্যামিও ইনিংস খেলছেন শেখ মেহেদী। অফ স্পিনিং এই অলরাউন্ডারের নাম আছে আলোচনায়। ওই টুর্নামেন্টে ছয়ে খেলানো হয় মূলত ওপেনার সৌম্য সরকারকে। ব্যাটে- বলে মাঝারি পারফর্ম করা সৌম্য সাতের বিবেচনায় থাকতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে।
এছাড়া মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, শামীম হোসেন পাটোয়ারি ও মাহমুদউল্লাহর নামও আসছে।
গত কয়েকদিন ধরেই একা একা অনুশীলন করছেন ৩৭ পেরুনো মাহমুদউল্লাহ। বিশ্রামের আদলে বাদ পড়ে আবার ফেরার লড়াইয়ে আছেন তিনি। তার ফিটনেস ও পারফরম্যান্স যথেষ্ট প্রশ্নবিদ্ধ হলেও হিসেবের বাইরে ফেলা হয়নি তাকে।
তবে দল থেকে বাদ পড়ার আগ মাহমুদউল্লাহ খেলতেন ছয়ে। যেখানে এখন থিতু হয়ে গেছেন মুশফিকুর রহিম। গত পাঁচ বছরে সাত নম্বরে স্রেফ তিন ইনিংস ব্যাট করে ১১৩ রান করেছেন অভিজ্ঞ ব্যাটার।
ক্যারিয়ারের ২১৮ ম্যাচের মধ্যে এই পজিশনে ৭১ ইনিংস ব্যাট করে ৩৪.৭১ গড়ে এখানে তার রান ১ হাজার ৫৯৭। তবে সাতে সবচেয়ে যে চাহিদা সেটা হচ্ছে দ্রুত রান তোলার। তাতে পুরোপুরি মলিন তিনি। এই পজিশনে তার স্ট্রাইকরেট কেবল ৭৭.২৯।
বয়সজনিত কারণে ফিল্ডিংয়েও মাহমুদউল্লাহর অবস্থা বেশ নাজুক। প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সঙ্গে আলোচনা না করে এই পজিশনে খেলোয়াড় বেছে নেওয়ার সুযোগ কম। বোর্ডের কারো কারো ভোট মাহমুদউল্লাহর পক্ষে থাকায় তার আশাও মিইয়ে যাচ্ছে না।
এছাড়া পাঁচ পেসার একদম নিশ্চিত। ফিট থাকলে এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপে থাকছেন তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ, শরিফুল ইসলাম ও ইবাদত হোসেন।
স্পিন আক্রমণে সাকিব ও মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে তাইজুল ইসলাম নাকি নাসুম আহমেদ? ছোট এই সিদ্ধান্তও বাকি আছে। তবে বিশ্বকাপের আগে এশিয়া কাপ ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ মিলিয়ে দুজনকেও আরও বাজিয়ে দেখার সুযোগ থাকছে।
প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু জানিয়েছেন, ৫ বা ৬ অগাস্ট তারা ২১-২২ জনের একটা দল দিবেন। সেখান থেকেই এশিয়া কাপের ১৫ জন বেছে নেওয়া হবে। তবে এশিয়া কাপের পরেও থাকবে নিউজিল্যান্ড সিরিজ। বিশ্বকাপের আগে তাই অনেক জল ঘোলা হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
Comments