'আমি এই নোংরামি থেকে দূরে থাকতে চাই'

টানা কয়েক মাসের কঠিন সময় পার করে নিউজিল্যান্ড সিরিজ দিয়ে ফিরেছিলেন তামিম ইকবাল। প্রথম ম্যাচে ব্যাটিংয়ের সুযোগ না হলেও দ্বিতীয় ম্যাচে খেলেছিলেন সাবলীলভাবেই। নিজের ব্যাটিং নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন তামিম। কিন্তু এরমধ্যেই ঘটে যায় নানা ঘটনা। যেটাকে নোংরামি মনে করেছেন এই ওপেনার। আর তা থেকে দূরে থাকতেই তাকে বিশ্বকাপ দলে না রাখার অনুরোধ করেন তিনি।

নানা নাটকের পর আগের দিন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। সেই দলে শেষ পর্যন্ত রাখা হয়নি তামিমকে। তখন থেকেই নানা গুঞ্জন। নির্বাচকরা অবশ্য ইনজুরির দোহাই দেন। তবে আজ বুধবার সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে লাইভে এসে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেন দেশ সেরা এই ওপেনার।

ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই একমাত্র ওপেনিং পজিশনেই খেলেছেন তামিম। কিন্তু এবার হুট করেই বিশ্বকাপের শুরুতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তাকে নিচের দিকে খেলাতে চায় 'টিম ম্যানেজমেন্ট'। মূলত তাকে প্রথম ম্যাচে রাখতেই চায়নি তারা। তামিমকে ম্যানেজমেন্টের এই সকল কথা জানান বিসিবির এক মুখপাত্র। আর এমন কথা শুনে খেপে যান তামিম। তবে লাইভে সেই মুখপাত্রের নাম প্রকাশ করেননি তিনি।

তবে পুরো বিষয়টা তুলে ধরেছেন তামিম, '৪৪ রানের ইনিংসের পর আমি একটু ব্যথা অনুভব করেছি খেলার শেষে। আসলে প্রথম ম্যাচেও আমি একটু ব্যথা অনুভব করেছি। যখন খেলা শেষ হলো তখন আমি আমার অবস্থান বললাম ফিজিওকে।  ঠিক ওই সময়ে তিনজন নির্বাচক ড্রেসিংরুমে আসেন।'

'একটা জিনিস আপনাদের আমি পরিষ্কার করে দিতে আমি কখনো কাউকে আমি বলিনি পাঁচটা ম্যাচের বেশি খেলব না। এই কথাটা কোন সময় হয়নি। কাল নান্নু ভাইও এই কথা নিশ্চিত করেছে। আমি জানি না এটা কীভাবে মিডিয়াকে ফিড করা হয়েছে।'

'আমি নান্নু ভাইকে বলেছিলাম, দেখেন আমার শরীর এরকমই থাকবে। আপনারা যখন দল নির্বাচন করবেন এই জিনিসগুলো মাথায় রেখে দল নির্বচন করবেন।'

'সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে কথটা ফিজিওর রিপোর্টে কি ছিল। ফিজিওর রিপোর্ট একদম যেটা ছিল বলি। কেউ চ্যালেঞ্জ করতে চাইলে মোস্ট ওয়েলকাম। ফিজিওর রিপোর্টে বলা হয়েছে প্রথম ম্যাচের পর এমন ব্যথা হয়েছে, দ্বিতীয় ম্যাচের পর এমন ব্যথা হয়েছে। আজকের দিনের হিসেবে সে ২৬ তারিখের ম্যাচের জন্য এভেইলেবল। কিন্তু মেডিকেল বিভাগ মনে করে যদি আমি বিশ্রাম নেই, ২৭ তারিখ আমাদের ভ্রমণ ছিল। ২৯ তারিখ আমাদের একটা অনুশীলন ম্যাচ। ২ তারিখে আরেকটা। আমি যদি দ্বিতীয় অনুশীলন ম্যাচ খেলি প্রথম ম্যাচের আগে তাহলে আমার পর্যাপ্ত সময় পাব। তাহলে আমার দুই সপ্তাহর পুনর্বাসন হয়ে যাবে, সব মিলিয়ে দশ সপ্তাহর হয়ে যাবে। এটাই রিপোর্টে আছে।'

'পাঁচ ম্যাচ, দুই ম্যাচ কোন জায়গায় ছিল না। আমার শরীরে ব্যথা ছিল সেটা আমি অস্বীকার করছি না। সংবাদ সম্মেলনেও বলেছি। আমি ইনজুরড হইনি, ব্যথা থাকতে পারে।'

'এক-দুদিন পরে বোর্ডের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে একজন ফোন করলেন। তিনি বেশ সম্পৃক্ত আমাদের ক্রিকেটের সঙ্গে। উনি আমাকে ফোন করে বললেন, "তুমি তো বিশ্বকাপে যাবে। তোমাকে তো ম্যানেজ করে খেলাতে হবে। তুমি এক কাজ কর তুমি প্রথম ম্যাচ খেলো না। আফগানিস্তানের সঙ্গে।" বললাম ভাই এটা তো এখনো ১২-১৩ দিনের পরের কথা। ১২-১৩ দিনের পর তো আমি ভালো অবস্থায় থাকব। তারপর বলল, "তুমি যদি খেলো আমরা এরকম একটা পরিকল্পনা করছি, আলোচনা করছি তোমাকে আমরা নিচে ব্যাটিং করাবো।"

'স্বাভাবিকভাবে বুঝতে হবে আমি কোন মানসিকতা থেকে এসেছি। আমাকে যদি হুট করে এসব ধরণের কথা বলা হয়। আমার পক্ষে নেওয়া আসলে সম্ভব না। আমি ১৭ বছর ধরে এক পজিশনে ব্যাট করেছি। আমি জীবনে কোনদিন তিন-চারে ব্যাটিং করিনি। আমি যদি তিন চারে ব্যাট করতাম তাহলে মানিয়ে নেওয়ার মতো ছিল। আমার এরকম কোন অভিজ্ঞতা নেই। আমি এটা ভালোভাবে নেইনি। আমি উত্তেজিত হয়ে গিয়েছিলাম। আমি এটা পছন্দ করিনি। আমি মনে করেছি আমাকে জোর করে করে বাধা দেওয়া হয়েছে। আমি তখন, বলেছি, "দেখেন, আপনারা একটা কাজ করেন, আপনাদের এরকম চিন্তা ধারা থাকলে আমাকে পাঠিয়েন না। আমি নোংরামির মধ্যে থাকতে চাই না।"'

'তারপর এই ব্যক্তির সঙ্গে আমার অনেক কথাবার্তা হয়। যেটা আমার মনে হয় না এই প্লাটফর্মে বলা উচিত। এটা আমার আর তারমধ্যেই থাক। এরপর এই জিনিসটাই আমি শক্তভাবে বলেছি, যদি এমন জিনিসই হয় আমাকে দলে রাইখেন না, আমি এই নোংরামির মধ্যে থাকতে চাই না। এসব আমি মানতে পারব না।'

'ওভারঅল আমার যেটা মনে হয়েছে, আমি জানিনা এটা ঠিক বলছি কি-না, মিডিয়াকে এই সব ফিড করা... অনেকেরই অভ্যাস আছে একটা বড় জিনিস ঢাকার জন্য আরেকটা নিউজ ফিড করানো, যে সে পাঁচ ম্যাচ খেলবে তাকে কীভাবে সিলেক্ট করব। যেটা আমি বললাম এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। ওইদিন ৩ সিলেক্টর ছিল, ফিজিও ছিল, ট্রেইনার ছিল, আমি কি বলেছি আপনাদের কাছেই ক্লিয়ার করেছি।'

'সবমিলিয়ে আমার মনে হয়েছে, যদি আপনি আমাকে চান তাহলে আপনি চাইবেন আমি মানসিকভাবে মুক্ত থাকি। কারণ আমি ৩/৪ মাস বাজে মাস কাটিয়ে এসেছি। এসে এখানে নতুন নতুন জিনিস বলা। আমি এটাই বলি যদি এই জিনিসটা যদি আমাকে ভিন্নভাবে বলা হতো হয়তো আমি অন্যভাবে রিয়েক্ট করতাম, হয়তো মেনে নিতাম। কিন্তু হঠাৎ করে আপনাকে ফোন করে কেউ যদি বলে আপনি খেইলেন না, খেললেও আপনাকে নিচে খেলতে হবে। তাই আমি সন্দিহান তারা কতোটুকু সত্যি বলেছে।'

 

Comments

The Daily Star  | English
CAAB pilot licence irregularities Bangladesh

Regulator repeatedly ignored red flags

Time after time, the internal safety department of the Civil Aviation Authority of Bangladesh uncovered irregularities in pilot licencing and raised concerns about aviation safety, only to be overridden by the civil aviation’s higher authorities.

9h ago