ক্রিকেট

তামিমকে টিমম্যানই মনে করেন না সাকিব

তামিমকে মিডল অর্ডারে খেলানোর প্রস্তাবে দোষের কিছু দেখেন না সাকিব

বিসিবি থেকে তামিম ইকবালের জন্য প্রস্তাব ছিল আফগানিস্তানের বিপক্ষে না খেলার। কিংবা খেললেও নিচের দিকে। আর তা মেনে নিতে পারেননি দেশ সেরা এই ওপেনার। তাতেই যতো বিপত্তি। রেগে এক পর্যায়ে বিশ্বকাপ দলে তাকে না রাখার কথাই বলেছেন তিনি। তবে তামিমকে এমন কোনো প্রস্তাব দিলে তা দোষের কিছু নয় বলে মনে করেন না অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। এমনকি তামিমের দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

গত দুই দিন ধরেই ভারত বিশ্বকাপের জন্য বাংলাদেশ দল নিয়ে নানা নাটক চলছে। অনেক জল্পনা কল্পনার পর শেষ পর্যন্ত তামিমকে বাদ দিয়ে দল ঘোষণা করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। পরে বিসিবির তরফ থেকে জানানো হয় ইনজুরির ঝুঁকির কারণে নেওয়া হয়নি তাকে। তবে গণমাধ্যমে চলছে নানা গুঞ্জন। এরমাঝেই সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে লাইভে এসে নিজের অবস্থানের কথা জানান তামিম। তাকে নিচের দিকে খেলানোর প্রস্তাব দেওয়াকে একটি মহলে বিশেষ কারসাজী দেখছেন এই ওপেনার। যে কারণে তার দৃষ্টিতে এই 'নোংরামি' থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখেন তিনি।

একই দিনে দেশের একটি টিভি চ্যানেল টি-স্পোর্টসকে সাক্ষাৎকার দেন সাকিবও। সেখানে তিনি তার অবস্থান তুলে ধরেন। তামিমকে মিডল অর্ডারে খেলার প্রস্তাব দেওয়াকে দোষের কিছু দেখেন না জানিয়ে বলেন, 'আমি যেটা বললাম এটা আমার সঙ্গে কোনো আলোচনাই হয় নাই। তো এই প্রশ্ন কোথা থেকে আসছে আমি জানি না। আর যদি কেউ এমন কিছু বলে থাকে, আমি নিশ্চিত যেই বলেছে সে অথরাইজ মানুষ, এটা আগে থেকেই আলাপ করে রাখছিল যাতে করে সেটা জানা থাকলে দুই পক্ষের জন্যই ভালো হয়। এই রকম বলাতে খারাপ কিছু আছে আমি তো মনে করি না। এটা কেউ তো খারাপের জন্য বলবে না আমি নিশ্চিত।'

'আমি নিশ্চিত এই কথাটা কেউ বলে থাকে সে টিমের কথা চিন্তা করেই বলেছে যে ওকে এরকম যদি আমরা কম্বিনেশন করি, এই রকম যদি আমরা চিন্তা করি এমন অনেক কিছুই আসে একটা ম্যাচকে কেন্দ্র করে। এ রকম কম্বিনেশন বানালে কি হতো, এ রকম কম্বিনেশন বানালে কি হতো। ওই হিসেবে কেউ যদি চিন্তা করে আগের থেকেই ক্লারিফিকেশন করে রাখতে চায় আমার তো মনে হয় যে আলোচনার কোনো দোষের আছে। এমন প্রস্তাব যদি কেউ দিয়ে থাকে এটাতে কি কোনো দোষের আছে? নাকি এমন কোনো প্রস্তাবই দেওয়া যাবে না যে একজনকে আমি বলব তুমি তোমার যা ইচ্ছা কর,' বলেন সাকিব।

ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মার উদাহরণ টেনে বলেন, 'টিম আগে না, ব্যক্তি আগে। রোহিত শর্মার মতো খেলোয়াড় নম্বর সাত থেকে ওপেনার হিসেবে ১০ হাজার রান করে ফেলছে। ও যদি মাঝে মাঝে তিন চারে নামে বা ব্যাটিংয়ে না নামে এটা কি খুব একটা প্রবলেম হয়। এটা আমার কাছে মনে হয় একদম বাচ্চা মানুষের মতো যে আমার ব্যাট আমিই খেলব আর কেউ খেলতে পারবে না। জিনিসটা হচ্ছে এমন। টিমের প্রয়োজনে যে কেউ যে কোনো জায়গায় খেলতে রাজী থাকা উচিত। এটা টিম প্রথমে, আপনি ব্যক্তিগতভাবে ১০০ করলেন ২০০ করলেন টিম হারল তাতে কিছুই আসে যায় না।'

এরপর তামিমের উপর তোপ দাগিয়ে বলেন, 'পারসোনাল এচিভমেন্ট দিয়ে আপনি কি করবেন আসলে। আপনার নিজের নাম কামাবেন, তার মানে আপনি নিজের কথা চিন্তা করতেছেন। আপনি দলের কথা চিন্তা করছেন না। আপনি দলের কথা চিন্তা করছেন না মোটেও। মানুষ এই পয়েন্টগুলোই বোঝে না। আপনাকে যখন প্রস্তাবটা দেওয়া হয়েছে, কেন প্রস্তাবটা দেওয়া হয়েছে আপনার টিমের কোথা চিন্তা করেই দেওয়া হয়েছে। টিমের এভাবে হলে হয়তো টিমের জন্য ভালো হবে। সে কারণেই প্রস্তাবটা দেওয়া হয়েছে, যদি দেওয়াও হয়ে থাকে। এটাতে খারাপের কি আছে?

তামিমকে দেওয়া এই প্রস্তাব মেনে নেওয়া উচিত ছিল বলেই মনে করেন টাইগার অধিনায়ক, 'বিষয়টি মেনে অবশ্যই আলোচনার রয়েছে, না আমি পারব, আমি এটা পারব, তোমার কি লাগবে। তুমি বল আমাকে আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব দলের জন্য। তাহলেই আপনি টিমম্যান। অন্যথায় ওইভাবে চিন্তা করলে আপনি টিমম্যানই না। আপনি খেলছেন ব্যক্তিগত রেকর্ড এবং সাফল্যের জন্য। নিজের ফেম এবং নেমের জন্য। টিমের জন্য না।'

এদিকে গুঞ্জন রয়েছে তামিমকে বাদ দেওয়ার পেছনে হাত রয়েছে সাকিবের ও। মাহমুদউল্লাহর উদাহরণ টেনে সে বিষয়টিও পরিষ্কার করেন অধিনায়ক, 'প্রথমত আমি সেই অনূর্ধ্ব-১৫ থেকে খেলছি তখন থেকেই দেখছি যে খেলোয়াড় ভালো করছে, যে দলে অবদান রাখছে সেই খেলোয়াড়কে বাংলাদেশ কখনোই বাদ দেয় নাই। কোনোদিনও না। আমি সাধারণ একটা উদাহরণ দেই মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ভাই উনি ছিলেন না, একটা সিরিজ খেললেন হয়তো ওইভাবে অবদান রাখতে পারেন নি যতোটা করা উচিত ছিল, ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি তিনি আরও ভালো করতে পারতেন। দুইটা ম্যাচেই উনার ওই সুযোগটা ছিল। উনার জন্য পারফেক্ট স্টেজ ছিল অনেক ভালো কিছু করার। যেটা আমার কাছে মনে হয়েছে সেটা সে করতে পারেনি। তার যে ডেডিকেশন ছিল, টিমের প্রতি দায়বদ্ধতা ছিল দলের হয়ে খেলার যে ইচ্ছা ছিল।'

'সব কিছু সবাই দেখতে পেয়েছে। ভিন্নতা আছে। আর আমার তো দায়িত্ব না পুরো দলটা সিলেক্ট করার। তাই যদি হতো এশিয়া কাপের একদিন আগেই ক্যাপ্টেন আনাউন্স করার পরই টিম দিয়ে দিতে পারতাম। এটা অনেক প্রসেসের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। অনেক জিনিস অনেক ফ্যাক্ট চিন্তা করতে হয়। শুধু মাঠের পারফরম্যান্স না, মাঠ মাঠের বাইরে, ড্রেসিং রুম, টিম মিটিং, এটমসফেয়ার, অনেক কিছু চিন্তা করে আপনার টিমটা করতে হয়। আমিও আমি বলছি না এই সব কিছুতে আমি ইনভল্ভ। আমার কাছে মনে হয় আমি খুবই কম ইনভল্ভ এইগুলোতে,' যোগ করেন সাকিব।

Comments

The Daily Star  | English
Effects of global warming on Dhaka's temperature rise

Dhaka getting hotter

Dhaka is now one of the fastest-warming cities in the world, as it has seen a staggering 97 percent rise in the number of days with temperature above 35 degrees Celsius over the last three decades.

10h ago