জেতার কথা শুধু বলার জন্যই বলেননি শান্ত
'আমাদের যে দল আছে বা যে কম্বিনেশন আছে, আমি খুবই আশাবাদী যে আমাদের দল এই দুইটা ম্যাচ খুবই ভালো করবে। আমরা যে পরিকল্পনা করেছি, সেটা যদি আমরা প্রয়োগ করতে পারি, খুবই ভালো করার সম্ভাবনা আছে। আমাদের এখানে যতগুলো খেলোয়াড় আছে, এই ম্যাচটা আমরা কীভাবে জিততে পারি, ওই পরিকল্পনাই করেছি। এখানে কেউই নেতিবাচক চিন্তা করছি না। আমরা বিশ্বাস করি, এই দুইটা ম্যাচ আমরা জিততে পারি। জেতার জন্যই খেলব। সবার মধ্যে এই বিশ্বাসটা আছে।'
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিলেট টেস্ট শুরুর ঠিক আগের দিন কথাগুলো বলেছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। সেই আত্মবিশ্বাসের ছাপ পড়ল মাঠের অনবদ্য পারফরম্যান্সে। সাকিব আল হাসান ও লিটন দাসের অনুপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে অধিনায়কত্ব পেয়ে প্রথম অ্যাসাইনমেন্টেই বাংলাদেশ দলের হয়ে স্মরণীয় জয় উপভোগ করলেন তিনি। শনিবার পঞ্চম দিনে ১৫০ রানে জিতে দুই ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা। এরপর সংবাদ সম্মেলনে এসে শান্ত জানালেন, সেদিনের ওই মন্তব্য কোনো ফাঁকা বুলি ছিল না।
বাংলাদেশের দেওয়া ৩৩২ রানের লক্ষ্য তাড়ায় দ্বিতীয় ইনিংসে নিউজিল্যান্ড থেমেছে ১৮১ রানেই। বল হাতে দুই ইনিংস মিলিয়ে ১০ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। ব্যাট হাতে শান্তর অবদানও অনস্বীকার্য। নেতৃত্বের অভিষেকে বাংলাদেশের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে পেয়েছেন সেঞ্চুরি।
পরিকল্পনা কাজে লাগিয়ে শক্তিশালী কিউইদের হারিয়ে শান্ত ভাসছেন আনন্দে, 'ভালো লাগছে। খুবই খুশি। যেরকম চিন্তা করে এসেছিলাম, পরিকল্পনা করেছি... প্রথম টেস্ট ম্যাচ ছিল অধিনায়ক হিসেবে। সব মিলিয়ে যদি চিন্তা করি, আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে মনে হয়, খুব ভালো একটা ম্যাচ খেলেছি। অধিনায়ক হিসেবে প্রথম ম্যাচে এরকম জয়, খুবই আনন্দিত।'
টেস্টে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের এটি দ্বিতীয় জয়, দেশের মাটিতে প্রথম। এর আগে ঘরের মাঠে ছয়বার কিউইদের মোকাবিলা করে তিনবারই হেরেছিল টাইগাররা। আর তাদের আগের জয়টি ছিল নিউজিল্যান্ডের মাটিতে, গত বছরের শুরুতে ঐতিহাসিক মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে।
শুধু অধিনায়ক শান্ত একাই যে বিশ্বাস করেছিলেন তা না। পুরো বাংলাদেশ দলও একই চিন্তা করেছে। তাদের ভাবনা একই বিন্দুতে মিলে যাওয়ার গল্প শুনিয়েছেন বাঁহাতি এই ব্যাটার, 'আমি (চিন্তা নিয়ে) খুবই পরিষ্কার ছিলাম। আমি কাউকে (শুধু শুধু) অনুপ্রাণিত করার জন্য বলিনি। কথাটা নির্দিষ্ট করেছিলাম যে, এই সিরিজটা জিততে পারি এবং জেতার জন্যই আমরা খেলব। এই বিশ্বাসটা শুধু আমার মধ্যে ছিল তা না, প্রতিটা খেলোয়াড়ের মধ্যে ছিল। আমি যখন দেখেছি, প্রতিটি খেলোয়াড় ওভাবে চিন্তা করছে, তখনই আমার মধ্যে বিশ্বাসটা এসেছে। যে আমি যেটা চিন্তা করেছি, সবাই এটা চিন্তা করছে। এখান থেকে জেতা যে সম্ভব, এই বিশ্বাসটা আমি তখনই করেছি।'
এই জয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় চক্রে শুভ সূচনা করল বাংলাদেশ। তাদের সামনে এখন সিরিজ জয়ের হাতছানি। সেই লক্ষ্য পূরণের পথে দলের আরও উন্নতির আশায় আছেন শান্ত, 'আর আমাদের কন্ডিশনে খেলা হচ্ছে। আমাদের যে বোলিং আক্রমণ, ব্যাটিংয়ে যে শক্তি আছে... ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং তিনটা আলাদা আলদা করে যেমন সামর্থ্য ছিল, আমার কাছে মনে হয়েছে, সিরিজটা জেতা সম্ভব। যদিও একটা ম্যাচ বাকি। অর্ধেক কাজ হয়েছে। এমন না যে পরের ম্যাচে যাব আর জিতে যাব, এরকম হবে না। আবার ওই পাঁচদিন কষ্ট করা লাগবে। আশা করব যে, পরের ম্যাচে কীভাবে আরও উন্নতি করে জিততে পারি।'
Comments