অন্যরকম বিশ্বরেকর্ডের সামনে মুশফিক, রেকর্ডের হাতছানি তাইজুলেরও
সমর্থকদের মনে যে মিরপুর নিয়ে অভিযোগের অন্ত নেই, সেখানেই সবচেয়ে বেশি খেলা হয় বাংলাদেশের। বাংলাদেশের অনেক ক্রিকেটারেরই জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে আছে শেরে বাংলা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম। এই মাঠে খেলতে খেলতে মুশফিকুর রহিমই যেমন একটা বিশ্ব রেকর্ডের মালিক বনে যাচ্ছেন।
বুধবার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। সেখানে ৮৮ রান করতে পারলেই মিরপুরে মুশফিকের রান পাঁচ হাজার ছুঁয়ে যাবে। সব ফরম্যাট মিলিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটে এক মাঠে পাঁচ হাজার রান করা প্রথম ব্যক্তিই তো হয়ে যাবেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার।
বাংলাদেশের ক্রিকেট অধিকাংশ খেলাই মিরপুরে হয় বলে মাঠের রেকর্ডের খাতায় বাংলাদেশিদেরই জয়জয়কার। এক মাঠে চার হাজার রান করা প্রথম ব্যাটারও তো বাংলাদেশিই। সাকিব আল হাসান ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচে যে রেকর্ডের ভাগীদার হয়েছিলেন। দুদিন পরই, ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে সাকিবের রেকর্ডের পরের ওয়ানডেতেই তামিম ইকবালও মিরপুরে চার হাজার রানের ক্লাবে প্রবেশ করেন।
তাদের অনেক পরই যদিও মুশফিকুর রহিম সে ক্লাবে প্রবেশাধিকার পেয়েছিলেন। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অবশ্য মুশফিকও মিরপুরে সে রেকর্ডের অংশ হয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচেই। ম্যাচ, ইনিংসের হিসাবেও পিছিয়ে আছেন এই ডানহাতি ব্যাটার। দুই বাঁহাতি সাকিব ও তামিমের সমান ১২১ ইনিংস লেগেছে মিরপুরে চার হাজার রান করতে। ম্যাচের হিসাবে ওপেনার তামিম এগিয়ে। তবে তামিমের ১০৮ ম্যাচের বিপরীতে সাকিবের ১১১ ম্যাচের বেশি লাগেনি। মুশফিকের প্রয়োজন হয়েছে ১৩৪ ম্যাচ, ১৪১ ইনিংস।
দেরিতে আসা মুশফিকই যদিও বর্তমানে সবাইকে ছাড়িয়ে সবার উপরে। মিরপুরে ১৫৩ ম্যাচে এই ব্যাটারের রান ৪৯১২। তার পেছনে ১৪২ ম্যাচে ৪৭৬৪ রান নিয়ে আছেন সাকিব। আর ১২৪ ম্যাচে ৪৫২৯ রান নিয়ে তামিম তৃতীয় স্থানে। বাংলাদেশি এই তিন ব্যাটার বাদে বিশ্বের আর কোন ব্যাটারেরই এক মাঠে চার হাজার রান নেই।
ফরম্যাট আলাদা করলে দেখা যায়, টেস্টে এক মাঠে সবচেয়ে বেশি রান শ্রীলঙ্কার মাহেলা জয়াবর্ধনের। কলম্বোর সিনহলিজ স্পোর্টস ক্লাব গ্রাউন্ডে ২৭ ম্যাচেই জয়াবর্ধনের রান ২৯২১ রান। তবে ওয়ানডেতে ঠিকই বাংলাদেশি একজন আছেন উপরে। তামিম ইকবালের মিরপুরে ৮৭ ওয়ানডেতে ২৮৯৭ রান। টি-টোয়েন্টিতে রেকর্ডটার মালিকানা তানজানিয়ার এক ব্যাটারের দখলে। ইভান সেলেমানি রোয়ান্ডার স্টেডিয়ামে ৩৮ ম্যাচ খেলে করেছেন ৯২৫ রান।
মিরপুরে বিশ্বরেকর্ডের গন্ধ লেগে আছে মুশফিকের গায়ে। একই সঙ্গে তাইজুল ইসলাম পাচ্ছেন দেশি একটি রেকর্ডের সুবাস। কাজটা একটু কঠিন যদিও তার জন্য, ৮ উইকেটের প্রয়োজন মেটানো মিরপুর বলে হয়তো আশা করাও যেতে পারে। মিরপুরে ২১ টেস্টে সাকিবের শিকার ৭৬ উইকেট। তাইজুল ইসলাম মিরপুরে ১৪ ম্যাচ খেলেই নিয়েছেন ৬৯ উইকেট। কিউইদের বিপক্ষে ম্যাচে আরও ৮ উইকেট পেলেই সাকিবকে ছাড়িয়ে তাইজুল হয়ে যাবেন- বাংলাদেশিদের মধ্যে এক মাঠে সবচেয়ে বেশি উইকেট নেওয়া বোলার।
মুশফিকের লাগে ৮৮ রান, তাইজুলের ৮ উইকেট। ৮ সংখ্যাটার গুরুত্ব এখন তাহলে বেড়েই গেল তাদের দুজনের জীবনে।
Comments