তবুও এমন উইকেট বানিয়ে সুবিধা নেওয়ার পক্ষে শান্ত

‘উন্নতি করতে আসি নাই, জিততে এসেছি’

‘টেস্ট ক্রিকেটে তো আমরা উন্নতি করতে আসি নাই, জিততে এসেছি। এখানে জেতার জন্য আমাদের প্রস্তুতিটা কেমন হওয়া উচিত তা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এই ধরনের (উইকেট বানিয়ে) সুবিধা অবশ্যই নেওয়া উচিত।’
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

কেবল বিশাল বিশাল টার্নই নয়, মিরপুরের উইকেটে দেখা মিলল ভিন্ন রকমের বাউন্সের। কোনোটা লাফিয়ে উঠছে, আবার কোনোটা একদম নিচু হয়ে যাচ্ছে। কিছুতেই যেন ঠাওর করার উপায় নেই যে কোন ডেলিভারি শেষমেশ কেমন রূপ নেবে! ম্যাচের ফল চলে এলেও দুই দলের চার ইনিংস মিলিয়ে ১৮০ ওভারও ব্যাটিং হয়নি। তারপরও বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত এমন উইকেটে বানিয়ে ঘরের মাঠের সুবিধা নেওয়ার পক্ষে যুক্তি দিলেন।

শনিবার সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের চতুর্থ দিনে বাংলাদেশকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে নিউজিল্যান্ড। ফলে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অন্তর্ভুক্ত সিরিজটি শেষ হয়েছে ১-১ সমতায়। বড় বড় বাঁক খাওয়া আর উঁচু-নিচু হওয়া বলের পিচে স্রেফ ১৭৮.১ ওভারে হয়েছে ম্যাচের ফয়সালা। অর্থাৎ বৃষ্টির বাগড়ায় চার দিন গড়ালেও প্রকৃতপক্ষে দুই দিনও হয়নি খেলা!

সিলেটে সিরিজের প্রথম টেস্টে স্পিনবান্ধব হলেও উইকেট ছিল না ব্যাটিংয়ের জন্য 'নরকসম'। সেখানে স্পোর্টিং পিচে পাঁচ দিন দাপটের সঙ্গে পারফর্ম করে জয় আদায় করে নিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু মিরপুরে এসে ২২ গজের সেই চিরচেনা রূপ। প্রথম দিনেই পড়ে যায় মোট ১৫ উইকেট। বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ডের চার ইনিংসের একটিও স্পর্শ করেনি দুইশ। আগে থেকে বলা যায় না কী ঘটতে যাচ্ছে— মিরপুরের উইকেটে বোলিংকে ব্যাখ্যা করা যায় এভাবেই। ঘরের মাঠে সুবিধা নেওয়ার যুক্তি দিয়ে এই মাঠে এমন উইকেট বানানো হয়ে আসছে অবশ্য অনেক বছর ধরে। তাতে ফলও মিলেছে। অতীতে মিরপুরে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জিতেছিল বাংলাদেশ।

এবার ফল নিজেদের পক্ষ না এলেও ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হয়ে আসা শান্ত সেই একই সুর ধরেন। জয় পাওয়া তাদের মূল লক্ষ্য জানিয়ে বলেন, 'টেস্ট ক্রিকেটে তো আমরা উন্নতি করতে আসি নাই, জিততে এসেছি। এখানে জেতার জন্য আমাদের প্রস্তুতিটা কেমন হওয়া উচিত তা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এই ধরনের (উইকেট বানিয়ে) সুবিধা অবশ্যই নেওয়া উচিত।'

তুলনামূলক শক্তিশালী দলের বিপক্ষে এই ধরনের উইকেট বানিয়ে ঘরের মাঠের টেস্টে ফায়দা তোলার কথা বলা হলেও প্রতিপক্ষের মাটিতে অবস্থাটা কী দাঁড়াবে? সেখানে তো ঘূর্ণি জাদুর উইকেট মেলে না। এক্ষেত্রে শান্তর দেওয়া উপায় হলো, 'যা আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে মনে হয় যে, আমরা যখন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে খেলি, সেখানে আমরা ভালো উইকেটে বা এমন কন্ডিশন বানিয়ে অনুশীলন করতে পারি। যখন আমরা ঘরের মাঠে খেলব, আমরা এনসিএলে এমন উইকেটে খেললাম। আবার প্রতিপক্ষের মাঠের জন্য দুই-তিনটা উইকেট আমরা এভাবে বানালাম। কিন্তু আমার মনে হয়, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট প্রস্তুতির জায়গা না। এখানে উন্নতি করারও কিছু নাই যে ভালো উইকেটে খেলে আমরা ভালো ম্যাচ খেললাম। এখানে আমরা জেতার জন্য আসি।'

ব্যস্ত সূচির কারণে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের ঘরোয়া চার দিনের ক্রিকেটের প্রতিযোগিতাগুলোতে খেলার ফুরসত মেলে না বললেই চলে। তাহলে এনসিএল বা বিসিএলে স্পোর্টিং উইকেট বানালেও সেটা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কাজে আসবে কতটুকু? বাঁহাতি ব্যাটার শান্ত জবাবে দেখান আরেকটি পথের খোঁজ, 'যারা তিন সংস্করণে খেলে তাদের জন্য কঠিন। কিন্তু কিছু করার নেই। তারা যারা তিন সংস্করণে খেলে, তাদের ওভাবেই প্রস্তুতি নিতে হবে, সেটা নেটে হতে পারে। কিন্তু যে খেলোয়াড়রা কেবল টেস্টেই খেলছে, তাদের ওই সময়টা থাকে। এমন না যে এখানে ১০-১৫টা খেলোয়াড় থাকে। এমন অনেক খেলোয়াড় আছে ভবিষ্যতে যাদের টেস্ট ম্যাচে সুযোগ আসবে। তাদের জন্য সুযোগ আছে স্পিনিং উইকেট বা ভালো উইকেটে খেলে অনুশীলন করে, ভালো প্রস্তুতি নিয়ে এখানে আসার।'

Comments

The Daily Star  | English

Over 5,500 held in one week

At least 738 more people were arrested in the capital and several other districts in 36 hours till 6:00pm yesterday in connection with the recent violence across the country.

14h ago