ছয় মাস আগে এশিয়া কাপ জেতার পরিকল্পনা করে যুব দল
এত ক্যামেরা, গণমাধ্যমের আগ্রহ, এত হইরই আগে কখনোই দেখেননি মাহফুজুর রহমান রাব্বিরা। সন্ধ্যা পেরিয়ে তারা যখন মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রবেশ করেন তখন লাউড স্পিকারে বাজছে, 'লাল সবুজের বিজয় নিশান, হাতে হাতে ছড়িয়ে দাও।' বিসিবির বড় কর্মকর্তারাও তাদের স্বাগত জানাতে হাজির। বাস থেকে নেমেই শতাধিক ক্যামেরার আলো পেরিয়ে উদযাপন মঞ্চে যান যুবা ক্রিকেটাররা। গণমাধ্যমের সামনে হাজির হয়ে অবশ্য বাস্তবতার নিরিখে কিছু প্রশ্নের জবাব দিতে হয়েছে।
রোববার দুবাইতে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ১৯৫ রানে হারিয়ে যুব এশিয়া কাপে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। ফাইনালের পথে তারা হারায় ভারতকে। সোমবার বিকেলে এশিয়া কাপ নিয়ে দেশে ফেরে যুবারা। দুবাই থেকে চট্টগ্রাম ঘুরে সন্ধ্যায় ঢাকায় আসে যুব দল। অথচ টুর্নামেন্টের আগে একটু নড়বড়ে অবস্থা ছিলো তাদের। ভারতে একটি টুর্নামেন্টে গিয়ে ফল ভালো হয়নি। আহরার আমিনকে বদলে নেতৃত্ব দেওয়া হয় মাহফুজুর রাব্বিকে।
তবে হুট করেই কিছু আসেনি। রাব্বি জানান মাস ছয়েক আগে থেকে এশিয়া কাপ জেতার ছক কষে টিম ম্যানেজমেন্ট। তিনি কৃতিত্ব দিলেন কোচ স্টুয়ার্ট ল এবং ব্যাটিং পরামর্শক ওয়াসিম জাফরকে, 'প্রথমত আমি প্রত্যেকটা ম্যাচ ধরে ধরে খেলার চেষ্টা করেছি। আমি সর্বপ্রথম আমাদের টিম ম্যানেজমেন্ট ও প্লেয়ারদের ধন্যবাদ দিতে চাই। ক্রিকেটাররা অনেক ভালো খেলেছে। তারা সমর্থন না দিলে হয়তো এই সাফল্য আসতো না। লক্ষ্য ছিল দেশের জন্য কিছু করব। ছয়মাস আগে থেকে এটা আমার পরিকল্পনা ছিল। একজন খেলোয়াড় হিসেবে আমার ভাবনা ছিল এশিয়া কাপটা কখনো বাংলাদেশে আসেনি, তাই ছয়মাস আগে থেকে পরিকল্পনা ছিল এই এশিয়া কাপটা বাংলাদেশে নিয়ে আসতে পারলে অনেক বড় প্রাপ্তি হবে।'
এশিয়া কাপ জেতা দলের সামনে এবার চ্যালেঞ্জ বিশ্বকাপের। জানুয়ারি মাসে দক্ষিণ আফ্রিকায় বসবে সে আসর। আকবর আলিদের পথ ধরে এবার বিশ্বকাপেও দারুণ কিছু নিয়ে আসার আশা রাব্বির, 'অবশ্যই আমরা চেষ্টা করব ভালো খেলার। আমাদের ব্যাটসম্যান, বোলার, ফিল্ডার- সবাই খুব ভালো টাচে আছে। আমরা যদি এই ধারাবাহিকতা রাখতে পারি, অবশ্যই ওয়ার্ল্ড কাপে ভালো কিছু নিয়ে আসতে পারব।'
টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের সাফল্যের পেছনে বড় অবদান ওপেনার আশিকুর রহমান শিবলির। ৩৭৮ রান করে তিনি হয়েছেন টুর্নামেন্ট সেরা। বিরাট কোহলিকে অনুসরণ করা এই ডানহাতি জানান, কেবল দলের চিন্তা করে খেলেই সেরা হয়েছেন তিনি, বাস্তবতার মাটিতে পা রেখে এখনি উপরে তাকাতে চান না তিনি, 'আমার কখনো এমন কোনো মাইন্ডসেট ছিল না যে সর্বোচ্চ রান স্কোরার হব। আমার দলের যে চাওয়া সেটাই চেষ্টা করব, যা হওয়ার হবে।'
'অনেক ভালো লাগতেছে। আমার পারফরম্যান্স থেকে আমার দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে এটা আমার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। দল ভালো করছে এটাই ভালো লাগছে। এখনই উপরের কোনো কিছু নিয়ে ভাবছি না, অনূর্ধ্ব-১৯ খেলছি, এটা নিয়েই ভাবছি।'
Comments