বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড তৃতীয় টি-টোয়েন্টি

আশা জাগিয়েও বছরের শেষটা রাঙাতে পারল না বাংলাদেশ

রোববার মাউন্ট মঙ্গানুইতে তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি ডিএলএস মেথডে নিউজিল্যান্ডের কাছে বাংলাদেশ হেরেছে ১৭ রানে। আগে ব্যাটিং পেয়ে স্যান্টনারের বাঁহাতি স্পিনে কাবু বাংলাদেশ করতে পারে স্রেফ ১১০ রান। ওই রান টপকাতে এক পর্যায়ে ৪৯ রানে ৫ উইকেট হারালেও পরে আর বিপদ বাড়েনি সফরকারীদের। ১৪.৪ ওভারে ৫ উইকেটে ৯৫ তোলার পর নামে ঝুম বৃষ্টি,  এতে আর খেলা হয়নি। ফল আসে বৃষ্টি আইনে।

ম্যাচ জিতলে ইতিহাস গড়ে নিউজিল্যান্ডের মাঠে জেতা হয়ে যেত সিরিজও। ওয়ানডে বিশ্বকাপ ব্যর্থতা ছাপিয়ে বছরের শেষ দিন থাকত ভীষণ রঙিন। তেমন একটা আশা উঁকি দিয়েও মিলিয়ে গেল, শেষ পর্যন্ত তা আর ধরা দিলো না। হার দিয়ে তাই বছর শেষ হলো নাজমুল হোসেন শান্তদের।

রোববার মাউন্ট মঙ্গানুইতে তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি ডিএলএস মেথডে নিউজিল্যান্ডের কাছে বাংলাদেশ হেরেছে ১৭ রানে। আগে ব্যাটিং পেয়ে স্যান্টনারের বাঁহাতি স্পিনে কাবু বাংলাদেশ করতে পারে স্রেফ ১১০ রান। ওই রান টপকাতে এক পর্যায়ে ৪৯ রানে ৫ উইকেট হারালেও পরে আর বিপদ বাড়েনি সফরকারীদের। ১৪.৪ ওভারে ৫ উইকেটে ৯৫ তোলার পর নামে ঝুম বৃষ্টি,  এতে আর খেলা হয়নি। ফল আসে বৃষ্টি আইনে।

কিউইদের এই জয়ে সিরিজ থামল ১-১ সমতায়। বৃষ্টি বাগড়ার ম্যাচে বোলিংয়ে ১৬ রানে ৪ উইকেট নেওয়ার পর অপরজিত ১৮ রান করে স্বাগতিকদের নায়ক অধিনায়ক স্যান্টনার।

মন্থর উইকেটে আগে ব্যাটিং করে লড়াইয়ের পুঁজি না পাওয়ায় একপেশে ম্যাচের শঙ্কা ছিলো। তবু মামুলি পুঁজি নিয়েও শরিফুল ইসলাম, শেখ মেহেদী হাসানদের বোলিংয়ে জমে উঠে ম্যাচ।  ফিন অ্যালেনের ভালো শুরুর পর বিপদে পড়া দলকে টেনে ঠাণ্ডা মাথায় কাজ উত্তাপ নিভিয়ে দেন জিমি নিশাম আর স্যান্টনার। বৃষ্টি আসার আগে দুজনের ৩৭ বলে অবিচ্ছিন্ন ৪৬ রানের জুটি ডিএলএস মেথডের সমীকরণ থেকে দূরে সরিয়ে দেয় বাংলাদেশকে।

মামুলি পুঁজি নিয়ে একমাত্র আশা ছিলো উইকেট আর কন্ডিশন। সেটাই কাজে লেগেছে শুরুতে। দ্বিতীয় ওভারেই আঘাত হানেন শেখ মেহেদী। তার বলে রিভার্স সুইপের চেষ্টায় গিয়ে ব্যর্থ হন টিম সেইফার্ট। কিপার রনি তালুকদার বল ধরে ক্ষিপ্র গতিতে স্টাম্প ভেঙে এনে দেন প্রথম উইকেট। তিনে নেমে ড্যারেল মিচেল চলতি সিরিজে আরও একবার বুঝতে পারেননি মেহেদীর স্পিন। ৫ বলে ১ রান করে তুলে দেন সহজ ক্যাচ।

খানিক পর গ্লেন ফিলিপস কাবু শরিফুলের স্লোয়ারে। দারুণ ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে যান তিনি। সপ্তম ওভারে দুর্ভাগ্যজনকভাবে চতুর্থ উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। দুই রান নিতে গিয়ে মাঝ ক্রিজে দুই ব্যাটার বলের দিকে তাকিয়ে নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে বাধালে পড়ে গিয়ে রান আউট হন মার্ক চাপম্যান। দলের এমন চরম বিপর্যয়ে একা লড়ছিলেন ফিন অ্যালেন। এক ওভার পর তাকে থামিয়ে দেন শরিফুল। বাংলাদেশের বাঁহাতি পেসারের বলের গতি আর লাইন মিস করে তিনিও বোল্ড। ৩১ বলে ৩৮ করে অ্যালেনের বিদায়ে ৪৯ রানেই ৫ উইকেট পড়ে যায় কিউইদের। অল্প পুঁজি নিয়েও তখন জয়ের আশা বেশ উজ্জ্বল বাংলাদেশের। সেটা খানিক পরই অবশ্য মিলিয়ে যায়। তাতে দায় কিছুটা থাকবে অধিনায়ক শান্তর। 

দশম ওভারে নিজে বল হাতে নিয়ে নিউজিল্যান্ডের চাপ সরিয়ে দেন বাংলাদেশ কাপ্তান। তার ওভার থেকে চার-ছক্কায় আসে ১৪ রান। ওই ওভার থেকে পাওয়া মোমেন্টাম ধরেই পরে মোড় ঘুরিয়ে দেন নিশাম-স্যান্টনার। দুজনেই বলে-রানে তাল মিলিয়ে ম্যাচ করে দেন সহজ।

এর আগে টস জিতে কন্ডিশন বুঝে বোলিং বেছে বাজিমাত করেন স্যান্টনার। লিটন দাসকে ছাড়া খেলতে নামা বাংলাদেশের পুরো ইনিংস ছিলো টালমাটাল। সৌম্য সরকার ওপেন করতে নেমে এক চারের পর এলবিডব্লিউ হন, রিভিউ নিয়েও আম্পায়ার্স কলে ফিরতে হয় তাকে।

শান্ত তিনে নেমে দ্রুত বাউন্ডারি পাচ্ছিলেন। চার বাউন্ডারিতে বড় কিছুর আভাস দিয়েও নিভেছেন খুব আলগা শটে। অ্যাডাম মিলনের বল এগিয়ে এসে তুলে দেন ফিল্ডারের হাতে। আরেক ওপেনার রনি তালুকদার থিতু হওয়ার আগেই থামেন বেন সিয়ার্সের বলে। অবশ্য রিভিউ নিলে রক্ষা পেতেন তিনি।

চারে নেমে পুরোটাই ধুঁকেছেন তাওহিদ হৃদয়। তার আগেই ভোগান্তি শেষে স্যান্টনারের শিকার হন আফিফ হোসেন। আফিফ ১৩ বলে ১৪, হৃদয় ১৮ বলে ১৬- ইনিংসগুলো বড় হলে ভালো পুঁজি পেতে পারত দল। শামীম হোসেন পাটোয়ারি, শেখ মেহেদী হাসানরা এই উইকেটের তাল বুঝতে পারেননি। অনেকগুলো ডট বলের চাপ কাবু করেছে তাদের।

স্যান্টনারের দারুণ ঘূর্ণি স্পেলের পাশাপাশি কিউই তিন পেসার গতি বৈচিত্র্যে নাজেহাল করে রাখেন বাংলাদেশের ইনিংস। কখনই তাই ডানা মেলে উড়া হয়নি সফরকারীদের। নিউজিল্যান্ডে গিয়ে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি কোন সিরিজ জিততে না পারলেও দুই সংস্করণে প্রথমবার সেদেশে দুটি জয় নিয়ে ফিরছে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। 

Comments

The Daily Star  | English

Floods cause Tk 14,421 crore damage in eastern Bangladesh: CPD study

The study highlighted that the damage represents 1.81 percent of the national budget for fiscal year (FY) 2024-25

2h ago