৯২ বছরের রেকর্ড ভেঙে জিতল ভারত

বৃষ্টি, বাজে আবহাওয়া কিংবা আলোক স্বল্পতার কোনো ব্যাপার নেই। তারপরও চার ইনিংস মিলিয়ে খেলা হলো মাত্র ১০৭ ওভার। ফলাফল হয়েছে এমন কোনো টেস্ট এরচেয়ে কম হয়নি। ৯২ বছর আগে যে রেকর্ড ছিল সেখানেও নানা বৈরিতায় খেলা গড়িয়েছিল চার দিনে। সেখানে মাত্র দেড় দিনে শেষ কেপটাউন টেস্ট। এমনটা আর কখনোই দেখেনি ক্রিকেট বিশ্ব।

অথচ এরমধ্যেই এইডেন মার্করাম গড়লেন রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরি। কিন্তু লড়াই করার মতো লক্ষ্য ছুঁড়ে দিতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে উইকেট বিচারে ৭৯ রানও নেহায়েত কম নয়। সেই লক্ষ্য তাড়ায় আগ্রাসী মেজাজে নামেন ভারতীয়রা। তিন উইকেট হারালেও লক্ষ্য পৌঁছতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি তাদের। ফলে সেঞ্চুরিয়নে ইনিংস ব্যবধানে হারের প্রতিশোধটা দারুণভাবেই নিল রোহিত শর্মার দল।

বৃহস্পতিবার কেপটাউনে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে ভারত। প্রোটিয়াদের দেওয়া লক্ষ্য মাত্র ১২ ওভারেই করে ফেলে তারা।

এর আগে ১৯৩২ সালে এমন স্বল্প দৈর্ঘের ম্যাচ দেখেছিল ক্রিকেট বিশ্ব। সেই ম্যাচেও ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেবার তারা হেরেছিল ইনিংস ও ৭২ রানের ব্যবধানে। সেই ম্যাচে তিন ইনিংস মিলিয়ে খেলা হয় মোট ১০৯.২ ওভার। আজ সেই রেকর্ড ভেঙে দিল কেপটাউন টেস্ট। 

তবে ভারতের জয় ছাপিয়ে মূল আলোচনা কেপটাউনের উইকেট। পেসারদের স্বর্গরাজ্যে ব্যাটিং করা যেন রীতিমতো বিভীষিকাময় ছিল ব্যাটারদের জন্য। এক মার্করাম বাদে সবাই ভুগেছেন এই উইকেটে। চার ইনিংসে মার্করামের সেঞ্চুরি ছাড়া নেই আর কোনো ফিফটিও। 

তবে ৭৯ রানের লক্ষ্য ভারতকে জয়ের ভিত গড়ে দেন ওপেনার যশস্বী জসওয়াল। মাত্র ২৮ রানের ইনিংস। কিন্তু ২৩ বলের এই ইনিংসই জয়ের ভিত গড়ে দেয় ভারতের। এরপর সেই ভিতে ইমারত গড়েন বাকি ব্যাটাররা। শেষ পর্যন্ত ১২ ওভারেই জয় তুলে নেয় দলটি।

তবে ভারতের ইনিংস বিবেচনায় কিছুটা বিস্ময় জাগিয়ে এদিন শান্ত ছিল অধিনায়ক রোহিত শর্মার ব্যাট। বাকি সব ব্যাটাররা যেখানে হাত খুলে খেলেছেন, সেখানে ২২ খেলে অপরাজিত ১৬ রান করেন হিটম্যান।

এদিন দলীয় ৪৪ রানে ভাঙে ভারতের ওপেনিং জুটি। জসওয়ালকে তুলে নেন নন্দ্রে বার্গার। স্কোরবোর্ডে আর ১৩ রান যোগ হতে শুবমান গিলকে বোল্ড করেন কাগিসো রাবাদা। তবে মার্কো ইয়ানসেনের বলে বিরাট কোহলি যখন আউট হন ততোক্ষণে জয়ের খুব কাছেই ভারত।

দলীয় ৭৫ রানে আউট হন কোহলি। জয় থেকে চার রান দূরে তারা। কিন্তু আগের দিনের বিস্ময় জাগানিয়া ব্যাটিংয়ে শঙ্কা ছিল তখনও। কোনো রান না তুলেই যে ৬ উইকেট হারিয়েছিল তারা। তবে এদিন আর এমন কিছু হয়নি। শেষটা শ্রেয়ার আইয়ারকে নিয়েই শেষ করেন অধিনায়ক রোহিত। যদিও এরমধ্যে একটি ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন শ্রেয়াস। সেই ক্যাচ লুফে নিতে পারেননি উইকেটরক্ষক ভেরেইনে।

এর আগে সকালে আগের দিনের ৩ উইকেটে ৬২ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামে দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রথম দিনের মতো এদিনও বোলারদের দাপট অব্যাহত থাকে। বিশেষকরে জাসপ্রিত বুমরাহ রুদ্ররূপ ধারণ করেন। আগের দিন এক উইকেট তুলে নেওয়া এই পেসার এদিন তুলে নিয়েছেন আরও পাঁচটি। মূলত তার তোপেই ভেঙে যায় প্রোটিয়াদের ব্যাটিং লাইন আপ।

তবে বোলারদের স্বর্গে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন মার্করাম। তুলে নেন টেস্ট ক্যারিয়ারের সপ্তম সেঞ্চুরি। অনেকটা ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাটিং করে ১০৩ বলে খেলেন ১০৬ রানের ইনিংস। নিজের ইনিংসটি সাজান ১৭টি চার ও ২টি ছক্কায়। অথচ এই ব্যাটার ছাড়া আর কোনো ব্যাটারই দায়িত্ব নিতে পারেননি। প্রোটিয়াদের দ্বিতীয় ইনিংসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোর কিনা ১২ রান। এমনটাও দেখেনি ক্রিকেট বিশ্ব।  

Comments

The Daily Star  | English

What are the five charges against Hasina at ICT?

Former home minister Kamal and ex-IGP Mamun have also been accused

37m ago