বিপিএল

আট নম্বরে নামলেন সাকিব, বলয় ভাঙল খুলনা

নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় সাকিব আল হাসান। তবে সাম্প্রতিক সময়ে চোখের সমস্যায় ভুগছেন এই অলরাউন্ডার। সে কারণেই হয়তো আট নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামেন তিনি। তবে টপ অর্ডার কিংবা মিডল অর্ডারে তার অভাব ঘোচাতে পারেননি তার সতীর্থরা। কেবল লড়াই করেছেন আফগান তারকা মোহাম্মদ নবি। ফলে খুলনা টাইগার্সের কাছে হারতে হয় রংপুর রাইডার্সকে। এবারের বিপিএলে প্রথমবারের মতো আগে ব্যাট করে জয় পেল কোনো দল।    

শুক্রবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) দিনের প্রথম ম্যাচে রংপুর রাইডার্সকে ২৮ রানে হারিয়েছে খুলনা টাইগার্স। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৬০ রান করে তারা। জবাবে ৮ বল বাকি থাকতে ১৩২ রানে অলআউট হয় রংপুর।

এদিন খুলনার জয়ের মূল নায়ক লঙ্কান অলরাউন্ডার দাসুন শানাকা। প্রথমে ব্যাট হাতে দলের ত্রাতা হয়ে আসেন তিনি। খেলেন ৪০ রানের কার্যকরী এক ইনিংস। এরপর বল হাতেও জ্বলে ওঠেন তিনি। তিন ওভার বল করে মাত্র ১৬ রান খরচ করে ৪টি উইকেট নেন এই অলরাউন্ডার। তাকে অবশ্য ভালো সহায়তা করেছেন মোহাম্মদ নাওয়াজ। ৫৫ রানের ইনিংস খেলার পর ২টি উইকেট তুলে নেন এই পাকিস্তানি অলরাউন্ডারও।

লক্ষ্য তাড়ায় নেমে শুরুতেই বড় ধাক্কা খায় রংপুর। ব্যক্তিগত ২ রানে আগের ম্যাচের জয়ের অন্যতম নায়ক বাবর আজমকে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেন মোহাম্মদ ওয়াসিম। এরপর তিনে নামা ব্রান্ডন কিংকে বোল্ড করে দেন মোহাম্মদ নাওয়াজ। আগের দুই ম্যাচে শূন্য রানে আউট হওয়া এই ক্যারিবিয়ান এদিন করেছেন কেবল ১ রান। এবারের বিপিএলে এদিনই প্রথম খেলতে নামেন খুলনার দুই পাকিস্তানি ওয়াসিম ও নাওয়াজ।

এরপর রনি তালুকদারকে নিয়ে কিছুটা প্রতিরোধ গড়েন শামিম হোসেন। ৩৮ রানের জুটি গড়েন তারা। রানের গতি বাড়াতে দারুণ শানাকার বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে লংঅফ সীমানায় মুকিদুল ইসলামের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরেন রনি। আর অহেতুক আগ্রাসী হতে গিয়ে ফিরে যান শামিমও। ফলে ৬১ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বড় চাপে পড়ে রংপুর। তবে সেই চাপ থেকে উতরে উঠতে পারেনি দলটি। নিয়মিত উইকেট হারিয়েছে তারা।

রংপুরের আগের ম্যাচের জয়ের নায়ক আজমতউল্লাহ ওমরজাইও হতাশ করেন। নাসুম আহমেদের বলে দারুণ একটি বাউন্ডারি মারার পরের বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে মাহমুদুল হাসান জয়ের ক্যাচে পরিণত হন তিনি। এরপর সাত নম্বরে নামা নুরুল হাসান সোহান রান আউট হলে বিপদ আরও বাড়ে দলটির। এরপর উইকেটে আসেন সাকিব। হতাশ করেন তিনিও। শানাকার বলে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ দেন ব্যক্তিগত ২ রানে। যদিও আম্পায়ার শুরুতে আউট দেননি। সফল রিভিউ নিয়ে তাকে ফেরান শানাকা।

এরপর শেখ মেহেদী হাসান ও রিপন মণ্ডল নেমে চেষ্টা চালান। হাত খুলে খেলার চেষ্টা করলেও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি কেউই। ৮ বলে ১২ রান করেন মেহেদী আর ৩ বলে ৮ রান করেন রিপন। এক প্রান্ত আগলে চেষ্টা চালান মোহাম্মদ নবি। দারুণ সব শটে দলকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন। ৩৪ বলে ৫টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৫০ রানের ইনিংসও খেলেন। তবে সতীর্থদের ব্যর্থতায় বৃথা যায় তার ইনিংস। 

এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে বিদেশি খেলোয়াড়দের ব্যাটে লড়াইয়ের পুঁজি পায় খুলনা। জ্বলে উঠতে পারেননি কোনো স্থানীয় ব্যাটার। শুরুতেই সাত বল খেলে শূন্য হাতে বিদায় নেন অধিনায়ক এনামুল হক। তিন নম্বরে নামা মাহমুদুল হাসান জয় বিদায় নেন ১১ বলে ৭ রান করে। দুই ব্যাটারকেই তুলে নেন অফস্পিনার শেখ মেহেদী হাসান।

পারেননি আফিফ হোসেনও। হাসান মাহমুদের শিকার হওয়ার আগে করেন ৬ বলে ৪ রান। স্থানীয় খেলোয়াড়রা না পারলেও জ্বলে ওঠেন বিদেশিরা। এদিনও আক্রমণাত্মক মেজাজেই ব্যাট চালান এভিন লুইস। হাসান মাহমুদের দ্বিতীয় শিকার হওয়ার আগে ২৫ বলে সমান ৩টি করে চার ও ছক্কায় খেলেন ৩৭ রানের ইনিংস।

তবে পঞ্চম উইকেটে খুলনার ইনিংসের ভিত্তি গড়ে দেন দাসুন শানাকা ও মোহাম্মদ নাওয়াজ। ৭৭ রানের জুটি গড়েন এ দুই ব্যাটার। শানাকাকে বোল্ড করে এ জুটি ভাঙেন হাসান মাহমুদ। ৩৩ বলে ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪০ রান করেন এই লঙ্কান অলরাউন্ডার। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫ রানের ইনিংস খেলে শেষ ওভারে রিপন মণ্ডলের শিকার হন নাওয়াজ। ৩৪ বলের ইনিংসে ৫টি চার ও ৩টি ছক্কা মারেন এই পাকিস্তানি অলরাউন্ডার।

রংপুরের হয়ে চার ওভার বল করে ২৯ রানের খরচায় ৩টি উইকেট নেন হাসান মাহমুদ। চার ওভার বলে করে ২০ রান দিয়ে ২টি উইকেট নেন শেখ মেহেদী হাসান। চার ওভার বল করে ২১ রান দিলেও কোনো উইকেট পাননি তারকা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।  

Comments

The Daily Star  | English

How is the economy doing?

The silver lining is that the economy isn’t falling apart

1h ago