মাহমুদউল্লাহ-শেহজাদের ঝড়ে জয়ে ফিরল বরিশাল

অন্যদিকে টানা পাঁচ ম্যাচ হেরেছে মাশরাফির সিলেট
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

রংপুর রাইডার্সকে হারিয়ে আসর শুরু করেছিল ফরচুন বরিশাল। এরপর যেন জিততেই ভুলে যায় দলটি। টানা তিন ম্যাচে হার। তবে সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে জ্বলে ওঠে তারা। আসর জুড়ে হারের বৃত্তে থাকা দলটির বিপক্ষে ঝড় তোলেন মাহমুদউল্লাহ ও আহমেদ শেহজাদ। তাতে জয়ের ধারায় ফিরল তামিম ইকবালের দল।

মঙ্গলবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে সিলেট স্ট্রাইকার্সকে ৪৯ রানে হারিয়েছে ফরচুন বরিশাল। প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৮৬ রান তোলে তারা। জবাবে ১৭.৩ ওভারে ১৩৭ রানে গুটিয়ে যায় সিলেট।

টস হেরে ব্যাটিংয়ের শুরুটা ভালো হয়নি বরিশালের। অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও উইকেটরক্ষক-ব্যাটার প্রিতম কুমার আউট হল যথাক্রমে ২ ও ১ রানে। তারপরও দলটি তেমন চাপে পড়েনি শেহজাদের ব্যাটে। শুরু থেকেই দারুণ আগ্রাসী ছিলেন এই পাকিস্তানি ওপেনার। এক প্রান্তে নিয়মিত বাউন্ডারি মেরে সচল রাখেন রানের চাকা।

তৃতীয় উইকেটে সৌম্য সরকারকে সঙ্গী হিসেবে পান শেহজাদ। তার সঙ্গে গড়েন ৫০ রানের জুটি। সৌম্যকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন হাওয়েল। লাইন মিস করে সরাসরি বোল্ড হয়ে যান এই ব্যাটার। ১৭ বলে ৩টি চারের সাহায্যে ২০ রান করেন সৌম্য।

তার বিদায়ের পর শেহজাদকে সঙ্গ দিতে নামেন অভিজ্ঞ ব্যাটার মুশফিকুর রহিম। তবে দলীয় ১০৮ রানে এই পাকিস্তানি রিক্রুটকে ফিরিয়ে বড় ধাক্কা দেন হাওয়েল। তার জোরালো শটে নিজেই ক্যাচ ধরেন। ৩০ বলে ফিফটি স্পর্শ করা শেহজাদ ৪১ বলে ৯টি চার ও ২টি ছক্কায় খেলেন দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৬ রানের ইনিংস।

মুশফিককেও ফেরান হাওয়েল। যদিও এই আউটে বড় অবদান নাঈম হাসানের। সীমানায় দুর্দান্ত দক্ষতায় ক্যাচ লুফে নেন তিনি। ১৯ বলে ২২ রান করেন এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটার। এরপর মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে মাহমুদউল্লাহর বিধ্বংসী ব্যাটিং। ষষ্ঠ উইকেটে মাত্র ১৯ বলে গড়েন ৫২ রানের জুটি। ২৪ বলে ৭টি চার ও ২টি ছক্কায় ৫১ রানের দানবীয় ইনিংস খেলেন মাহমুদউল্লাহ। আর ৬ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় ১৫ রানের ক্যামিও খেলেন মিরাজ।

সিলেটের পক্ষে চার ওভার বল করে ২১ রানের খরচায় ৩টি উইকেট নেন হাওয়েল।

লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি সিলেটেরও। ব্যর্থতার ধারাবাহিকতা ধরে রেখে আরও একবার হতাশ করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ব্যক্তিগত ৯ রানে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমের হাতে ক্যাচ তুলে বিদায় নেন তিনি। আর ২৩ বলে ২৫ রান করে বিদায় নেন মোহাম্মদ মিঠুনের জায়গায় সুযোগ পাওয়া শামসুর রহমান। দুই ওপেনারের বিদায়ের পর চার নম্বরে নামা অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা ফিরে যান ব্যক্তিগত দুই রানে।

এরপর বেনি হাওয়েলকে নিয়ে দলের হাল ধরেন জাকির হাসান। চতুর্থ উইকেটে ৫৮ রানের জুটি গড়ে দলকে আশা দেখান এ দুই ব্যাটার। দ্বাদশ ওভারে ১৪ ও ত্রয়োদশ ওভারে ১৫ রান তুলে ম্যাচ জমিয়ে দিয়েছিলেন তারা। কিন্তু পরের ওভারে ফিরে দারুণ নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে লাগাম টানেন মোহাম্মদ ইমরান। সে ওভারে জাকিরকে ফিরিয়ে জুটিও ভাঙেন তিনি।

ইমরানের প্রথম পাঁচ বলে বাউন্ডারি না পাওয়ায় শেষ বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়েছিলেন জাকির। কিন্তু লংঅন সীমানায় মিরাজের তালুবন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরেন। ৩৪ বলে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৬ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। নিজের ইনিংস সাজান ৪টি চার ও ২টি ছক্কায়। পরের ওভারের প্রথম বলে ফিরে যান আরেক সেট ব্যাটার হাওয়েলও। মিরাজের বলে প্রিতম কুমারকে ক্যাচিং অনুশীলন করিয়ে ফেরেন ব্যক্তিগত ২৪ রানে।

টানা দুই বলে দুই সেট ব্যাটারকে হারানোর ধাক্কা আর কাটিয়ে উঠতে পারেনি সিলেট। এরপর ২৪ রানের ব্যবধানে বাকি চার ব্যাটারকেও হারায় তারা। ফলে বড় ব্যবধানেই হার মানতে বাধ্য হয় দলটি।

বরিশালের পক্ষে ২৯ রানের খরচায় ৪টি উইকেট নেন ইমরান। ২টি করে উইকেট নেন মিরাজ ও খালেদ।

Comments

The Daily Star  | English

Culprits of Khagrachhari, Rangamati violence will be brought to book: CA office

High-powered probe body to be formed; home adviser to visit Khagrachharai and Rangamati tomorrow

12m ago