রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে তামিমদের হারাল সাকিবরা

১০ ওভারেই ১০০। তাও মাত্র একটি উইকেট হারিয়ে। মনে হচ্ছিল দুইশ পেরিয়ে যাওয়া যেন কেবল সময়ের ব্যাপার। কিন্তু এরপর আবু হায়দার রনির আগুন ঝরানো বোলিংয়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় ফরচুন বরিশাল। কোনো মতে লড়াইয়ের পুঁজি পায় দলটি। তবে তাই নিয়েই শেষ পর্যন্ত লড়াই করেছিল তারা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পেরে ওঠেনি দলটি। রোমাঞ্চকর এক জয়ে শীর্ষস্থান আরও মজবুত করল রংপুর রাইডার্স।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এদিনের দ্বিতীয় ম্যাচে ফরচুন বরিশালকে ১ উইকেটে হারিয়েছে নুরুল হাসান সোহানের দল। প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৫১ রান করে বরিশাল। জবাবে ৩ বল বাকি থাকতে জয়ের বন্দরে নোঙ্গর করে রংপুর।
তবে এদিন ম্যাচের শেষ দিকে ম্যাচ জয়ের দারুণ সম্ভাবনা তৈরি করেছিল বরিশাল। যদিও লক্ষ্য তাড়ায় নেমে শুরুটা দারুণ করে রংপুর। ব্র্যান্ডন কিং ও সাকিব আল হাসানের ব্যাটে পাওয়ার প্লেতে ১ উইকেট হারিয়ে ৭৪ রান তুলে ফেলে তারা। এরপর বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ঘুরে দাঁড়ায় বরিশাল। নিয়মিত বিরতিতে আরও আটটি উইকেট তুলে নেয় তারা। কিন্তু সাইফউদ্দিনের করা শেষ ওভারের তৃতীয় বলে ব্যাটের কানায় লেগে থার্ডম্যান দিয়ে বল সীমানা পার করলে জয়ের উল্লাসে মাতে রংপুর।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৫ রানের ইনিংস খেলেন কিং। ২২ বলে ৩টি চার ও ৪টি ছক্কায় এই রান করেন তিনি। ১৫ বলে ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৯ রান করেন সাকিব। ১৭ বলে ২টি করে চার ও ছক্কায় ২৮ রান করেন জেমস নিশাম। তবে ব্যক্তিগত ৭ রানে সহজ জীবন পান তিনি। কিন্তু সে সুযোগ লুফে নিতে পারেননি অতিরিক্ত ফিল্ডার প্রিতম কুমার। অন্যথায় ফলাফল ভিন্নও হতে পারতো।
বরিশালের পক্ষে ২৪ রানের খরচায় ৩টি উইকেট পান মেহেদী হাসান মিরাজ। ৩৪ রানের বিনিময়ে ৩টি উইকেট নেন ওবেড ম্যাককয়ও। ৩১ রানে ২টি শিকার কাইল মেয়ার্সের।
তবে রংপুর এদিন জয় পায় মূলত আবু হায়দের বোলিং তোপে। তামিম ইকবাল, মেয়ার্স ও টম ব্যান্টনের ব্যাটে ১ উইকেট হারিয়ে ১১০ রান তুলে ফেলে ছিল বরিশাল। এরপর ৮ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৪১ রান যোগ করে দলটি। এর মূল কারণ ১৩তম ওভারে আবু হায়দারের আগুন ঝরানো বোলিং। সে ওভারে তিনটি উইকেট তুলে নেন তিনি।
বল হাতে নিয়ে প্রথম বলেই উইকেটরক্ষক সোহানের ক্যাচে পরিণত করে ফেরান অভিজ্ঞ ব্যাটার মুশফিকুর রহিমকে। এক বল পর সৌম্য সরকারকে বোল্ড করে দেন আবু হায়দার। এর এক বল পর দেন আরও বড় ধাক্কা। দারুণ ব্যাটিং করতে থাকা কাইল মেয়ার্সকে ফেরান তিনি।পরের ওভারে ফিরে ফেরান আরেক অভিজ্ঞ ব্যাটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে। তৃতীয় ওভারে মেহেদী হাসান মিরাজের উইকেট নিয়ে পূরণ করেন ফাইফার। শেষ পর্যন্ত ৪ ওভার বল করে মাত্র ১২ রানের খরচায় পান ৫টি উইকেট।
অথচ এই বিপিএলে এর আগে মাত্র একটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে যেদিন সুযোগ পেয়েছিলেন সেদিন মাত্র ওভার বল করতে পেরেছিলেন আবু হায়দার। খুব খারাপও করেননি। ৬ রান দিয়ে উইকেট শূন্য থাকেন। কিন্তু এরপর তাকে আর বোলিংয়ে আনেননি রংপুর রাইডার্স অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। তাই হয়তো এবার এক ওভারেই দেখিয়ে দেওয়ার পণ করেই নেমেছিলেন এই পেসার।
বরিশালের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৬ রান করেন মেয়ার্স। ২৭ বলের ইনিংসটি সাজান ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায়। অবশ্য প্রথমে ঝড় তুলেছিলেন অধিনায়ক তামিম। ২০ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩৩ রান করেন তিনি। এরপর সাকিবের প্রথম বলেই টপএজ হয়ে সাজঘরে ফেরেন। ব্যাটন করেন ২৬ রান।
Comments